নিউইয়র্ক ০৩:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ডলার সংকট কাটাতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু মার্চেই

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৫২ বার পঠিত

দেশের মধ্যে ডলার সংকট শুরু বেশ পুরোনো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পর তা আরও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ মুদ্রাটির সংকট নিয়ে মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। অন্যদিকে, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতেও দূর হচ্ছে না সংকট। বিপরীতে আড়াই বছরে রিজার্ভ অর্ধকে নেমে যায়।

অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়নের ডলার থেকে কমে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়। ডলার দর নিয়ন্ত্রিত ও বাজারভিত্তিক করতে দ্রুত ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আসছে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ডলার সংকট কাটাতে নেওয়া নানা উদ্যোগের কোনোটিই কাজে আসছে না। রিজার্ভও কমে অর্ধেকে নেমেছে। এবার ডলার সংকট কাটাতে এর দর নিয়ন্ত্রিত ও বাজারভিত্তিক করতে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করা হতে পারে। বিশ্বের অনেক দেশেই এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।

এ পদ্ধতি টাকার বিপরীতে ডলারের দামের ভিত্তি হবে রিয়াল ইফেকটিভ একচেঞ্জ রেট (রিয়ার) ও নমিনাল ইফেকটিভ একচেঞ্জ রেট (নিয়ার)। বৈশ্বিক মানদণ্ডের আলোকে ‘ক্রলিং পেগ’ রেটের সঙ্গে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকার করিডোর রাখা হবে। আর স্মার্ট সুদহারের আলোকে বাংলাদেশ ফরেন একচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ডলারের দর নির্ধারণ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে এক কর্মকর্তা জানান, ডলার সংকট কাটছে না। সংকটের সুযোগে কারসাজিতে জড়িয়ে পড়েছে ব্যাংক-এক্সচেঞ্জ হাউজ। অন্যদিকে, রিজার্ভও তলানিতে। এ পরিস্থিতিতে ডলারের দর শতভাগ বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরিবেশ নেই। তাই গভর্নর ক্রলিং পেগ পদ্ধতি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের কারিগরি কমিটি ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণে অসম্মতি জানিয়ে বিলম্ব করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিলম্বকে কেন্দ্র করে ক্রলিং পেগ মার্চেই দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন গভর্নর রউফ তালুকদার। পরবর্তীতে আইএমএফের সুপারিশ চলমান প্রক্রিয়ায় সমন্বয় হবে।

দেশে সাময়িকভাবে ডলারের ধকল সামলাতে ক্রলিং পেগ চালু হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে ল্যাটিন আমেরিকার উরুগুয়েতে প্রথম ক্রলিং পেগের প্রচলন ঘটে। বর্তমানে বতসোয়ানা, হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়ায় ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু রয়েছে।

এ পদ্ধতিতে বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি নির্দিষ্ট বিনিময় হারসহ ধীরে ধীতে নির্ধারিত সীমার মধ্যে ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়। কিছু দিন পর পর সমন্বয় করা যায়। এতে উচ্চ বিনিময় হারের অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের হুমকি এড়াতে নিয়ন্ত্রণমূলক ক্রলিং পেগ কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে মুদ্রাবাজার সংকট কেটে গেলে ক্রলিং পেগ কার্যকর থাকে না। সূত্র : জাগোনিউজ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

ডলার সংকট কাটাতে ‘ক্রলিং পেগ’ চালু মার্চেই

প্রকাশের সময় : ০২:৫২:১৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

দেশের মধ্যে ডলার সংকট শুরু বেশ পুরোনো। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পর তা আরও বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ মুদ্রাটির সংকট নিয়ে মহাসমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেওয়া কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। অন্যদিকে, বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ থেকে প্রতিনিয়ত ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতেও দূর হচ্ছে না সংকট। বিপরীতে আড়াই বছরে রিজার্ভ অর্ধকে নেমে যায়।

অর্থাৎ এ সময়ের মধ্যে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়নের ডলার থেকে কমে ২৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে যায়। ডলার দর নিয়ন্ত্রিত ও বাজারভিত্তিক করতে দ্রুত ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আসছে মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একাধিক সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, ডলার সংকট কাটাতে নেওয়া নানা উদ্যোগের কোনোটিই কাজে আসছে না। রিজার্ভও কমে অর্ধেকে নেমেছে। এবার ডলার সংকট কাটাতে এর দর নিয়ন্ত্রিত ও বাজারভিত্তিক করতে আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণ করা হতে পারে। বিশ্বের অনেক দেশেই এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করেছে।

এ পদ্ধতি টাকার বিপরীতে ডলারের দামের ভিত্তি হবে রিয়াল ইফেকটিভ একচেঞ্জ রেট (রিয়ার) ও নমিনাল ইফেকটিভ একচেঞ্জ রেট (নিয়ার)। বৈশ্বিক মানদণ্ডের আলোকে ‘ক্রলিং পেগ’ রেটের সঙ্গে ৫০ পয়সা থেকে ১ টাকার করিডোর রাখা হবে। আর স্মার্ট সুদহারের আলোকে বাংলাদেশ ফরেন একচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ডলারের দর নির্ধারণ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে এক কর্মকর্তা জানান, ডলার সংকট কাটছে না। সংকটের সুযোগে কারসাজিতে জড়িয়ে পড়েছে ব্যাংক-এক্সচেঞ্জ হাউজ। অন্যদিকে, রিজার্ভও তলানিতে। এ পরিস্থিতিতে ডলারের দর শতভাগ বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরিবেশ নেই। তাই গভর্নর ক্রলিং পেগ পদ্ধতি দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের কারিগরি কমিটি ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণে অসম্মতি জানিয়ে বিলম্ব করার প্রস্তাব দিয়েছে। এই বিলম্বকে কেন্দ্র করে ক্রলিং পেগ মার্চেই দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন গভর্নর রউফ তালুকদার। পরবর্তীতে আইএমএফের সুপারিশ চলমান প্রক্রিয়ায় সমন্বয় হবে।

দেশে সাময়িকভাবে ডলারের ধকল সামলাতে ক্রলিং পেগ চালু হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার সংকট কাটাতে ল্যাটিন আমেরিকার উরুগুয়েতে প্রথম ক্রলিং পেগের প্রচলন ঘটে। বর্তমানে বতসোয়ানা, হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়ায় ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু রয়েছে।

এ পদ্ধতিতে বিনিময় হার সমন্বয়ের একটি নির্দিষ্ট বিনিময় হারসহ ধীরে ধীতে নির্ধারিত সীমার মধ্যে ওঠানামার সুযোগ রাখা হয়। কিছু দিন পর পর সমন্বয় করা যায়। এতে উচ্চ বিনিময় হারের অস্থিরতা, মুদ্রাস্ফীতি, অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় দেশীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের হুমকি এড়াতে নিয়ন্ত্রণমূলক ক্রলিং পেগ কার্যকর ভূমিকা রাখে। তবে মুদ্রাবাজার সংকট কেটে গেলে ক্রলিং পেগ কার্যকর থাকে না। সূত্র : জাগোনিউজ।