নিউইয়র্ক ১২:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিশ্বে চালের উৎপাদন কমলেও বাংলাদেশে বাড়বে, এফএওর পূর্বাভাস

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২৭:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩
  • / ৫৬ বার পঠিত

রাজধানী ঢাকার একটি চালের আড়ত। ছবি: আজকের পত্রিকা

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে চীনে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত ডিসেম্বরে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়ে বিশ্বে চালের উৎপাদন কমবে বলে মনে করছে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তবে চীনে কমলেও বাংলাদেশ কয়েকটি দেশের সংশোধিত পূর্বাভাসে চাল উৎপাদন বাড়বে।

এফএওর সদ্যপ্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে চালের উৎপাদনের এখনকার পূর্বাভাস ৫১ কোটি ২০ লাখ টন ধরা হচ্ছে, যা ডিসেম্বরের পূর্বাভাসের চেয়ে ১২ লাখ টন কম। কারণ হিসেবে গত ডিসেম্বরে চীনের কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন পর্যালোচনা তুলে ধরে বলা হয়েছে, এফএও যে প্রাক্বলন করেছিল তার চেয়ে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ধান রোপন হয়েছে কম। এর মধ্যে চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফসলি এলাকাও রয়েছে। তারও আগে দেশটির দক্ষিণে তাপদাহ ও শুষ্কতার কারণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চীনের চাল উৎপাদনের সংশোধিত হিসাব নিম্নমুখী হলেও কয়েকটি দেশের চাল উৎপাদন সংশোধিত হিসাবে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোপনের সময় বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত জটিলতার পরও এসব দেশে মৌসুমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ শস্যের উৎপাদন নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বলে এফএও বলছে।

এফএওর দেওয়া সর্বশেষ হিসেবে, ২০২২ সালে বিশ্বে খাদ্য শস্য উৎপাদন ৮৩ লাখ টন বেড়ে ২৭৬ কোটি ৫০ লাখ টন হবে বলে পূর্বাভাস মিলেছে। তবে পূর্বাভাস বাড়লেও এটা আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

অস্ট্রেলিয়া ও রুশ ফেডারেশনের দেশগুলোতে গত বছরের প্রত্যাশার চেয়ে বাড়তি উৎপাদনের প্রাক্কলনের পর গমের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারের গমের দাম আরও কমেছে। অন্যদিকে, মোটা খাদ্য শস্যের দাম কিছুটা চড়া আছে। মূলত ব্রাজিলের ভুট্টার চাহিদা ভালো থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে। সরবরাহ সংকট, এশীয় কয়েকটি রপ্তানিকারক দেশে জোরালো চাহিদা এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামার ফলে জানুয়ারিতে চালের আন্তর্জাতিক দাম ঊর্ধ্বগতিতেই ছিল।

এফএও বলছে, দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই একমাত্র ব্যতিক্রম, যেখানে অন্যান্য দেশের চেয়ে জানুয়ারিতে চালের দাম কমেছে। এক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে কৃষকের ঘরে উঠতে যাওয়া বুরো ধানের ভালো ফলনের আভাস রয়েছে বলে মনে করছে এফএও। তবে বাংলাদেশে চালের দাম কমলেও তা আগের বছরের চেয়ে কিছুটা বেশিই আছে।

এদিকে বাংলাদেশে গমের আটার দাম জানুয়ারিতে কমলেও তা আগের বছরের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি। আমদানিতে শ্লথগতি ও বর্ধমান পরিবহন ব্যয়ের কারণেই এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে এফএও বলছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর ও এবছরের জানুয়ারিতে স্থানীয়ভাবে প্রধান খাদ্যশস্যের দাম উচ্চ পর্যায়েই ছিল। যদিও তা আফ্রিকার দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশসহ বাছাই করা কয়েকটি দেশে ২০২২ সালের শীর্ষ পর্যায় থেকে কিছুটা কমেছে।

‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলসহ কিছু এলাকায় নাজুক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নিকটবর্তীকালে খাদ্যপ্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকতে পারে। বিশ্ব বাজারে উদ্ভূত পরিস্থিতি আর তার সঙ্গে বিরূপ আবহাওয়া, সংঘাত ও মুদ্রার অবমূল্যায়নসহ চলমান অপরাপর ঝুঁকিগুলো স্থানীয় প্রধান খাদ্য বাজারে দামে প্রভাব অব্যাহত রাখবে।

চিনির আন্তর্জাতিক দর নিম্নমুখী
এফএওর হিসাবে, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কমেছে। গত জানুয়ারিতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চিনির দরসূচক ছিল ১১৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট, যা আগের মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বা ১ দশমিক ১ শতাংশ কম। গত বছরের শেষ দুই মাসে দাম তর তর করে বাড়ার পর এবারই প্রথম কমল।

এফএওর প্রতিবেদন বলছে, থাইল্যান্ডে ভালো ফলন ও ব্রাজিলের প্রধান প্রধান এলাকাগুলোতে আখ উৎপাদনের জন্য উপযোগী জলবায়ু থাকায় জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দর কমেছে। চিনির দাম আরও উল্লেখযোগ্য হারে এরই মধ্যে কমতো। কিন্তু ভারতে কম ফলন ও রপ্তানির সহজলভ্যতা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় তা ব্যাহত হয়েছে।

এছাড়া ব্রাজিলে গ্যাসোলিনের দাম বৃদ্ধির ফলে ইথানলের চাহিদা বাড়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ব্রাজিলিয়ান ডলার জোরালো হওয়ায় বিশ্ব বাজারে চিনির দরে নিম্নমুখী চাপকে কিছুটা আটকে রেখেছে। সূত্রঃ আজকের পত্রিকা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বিশ্বে চালের উৎপাদন কমলেও বাংলাদেশে বাড়বে, এফএওর পূর্বাভাস

প্রকাশের সময় : ১০:২৭:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

বিরূপ আবহাওয়ার কারণে চীনে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত ডিসেম্বরে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়ে বিশ্বে চালের উৎপাদন কমবে বলে মনে করছে জাতিসংঘ খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তবে চীনে কমলেও বাংলাদেশ কয়েকটি দেশের সংশোধিত পূর্বাভাসে চাল উৎপাদন বাড়বে।

এফএওর সদ্যপ্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে চালের উৎপাদনের এখনকার পূর্বাভাস ৫১ কোটি ২০ লাখ টন ধরা হচ্ছে, যা ডিসেম্বরের পূর্বাভাসের চেয়ে ১২ লাখ টন কম। কারণ হিসেবে গত ডিসেম্বরে চীনের কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন পর্যালোচনা তুলে ধরে বলা হয়েছে, এফএও যে প্রাক্বলন করেছিল তার চেয়ে দেশটির বিভিন্ন এলাকায় ধান রোপন হয়েছে কম। এর মধ্যে চীনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ফসলি এলাকাও রয়েছে। তারও আগে দেশটির দক্ষিণে তাপদাহ ও শুষ্কতার কারণে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

চীনের চাল উৎপাদনের সংশোধিত হিসাব নিম্নমুখী হলেও কয়েকটি দেশের চাল উৎপাদন সংশোধিত হিসাবে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ। রোপনের সময় বৃষ্টিপাত সংক্রান্ত জটিলতার পরও এসব দেশে মৌসুমের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ শস্যের উৎপাদন নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মিলেছে বলে এফএও বলছে।

এফএওর দেওয়া সর্বশেষ হিসেবে, ২০২২ সালে বিশ্বে খাদ্য শস্য উৎপাদন ৮৩ লাখ টন বেড়ে ২৭৬ কোটি ৫০ লাখ টন হবে বলে পূর্বাভাস মিলেছে। তবে পূর্বাভাস বাড়লেও এটা আগের বছরের চেয়ে ১ দশমিক ৭ শতাংশ কম।

অস্ট্রেলিয়া ও রুশ ফেডারেশনের দেশগুলোতে গত বছরের প্রত্যাশার চেয়ে বাড়তি উৎপাদনের প্রাক্কলনের পর গমের সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারের গমের দাম আরও কমেছে। অন্যদিকে, মোটা খাদ্য শস্যের দাম কিছুটা চড়া আছে। মূলত ব্রাজিলের ভুট্টার চাহিদা ভালো থাকায় দামে প্রভাব পড়েছে। সরবরাহ সংকট, এশীয় কয়েকটি রপ্তানিকারক দেশে জোরালো চাহিদা এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারের ওঠানামার ফলে জানুয়ারিতে চালের আন্তর্জাতিক দাম ঊর্ধ্বগতিতেই ছিল।

এফএও বলছে, দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশই একমাত্র ব্যতিক্রম, যেখানে অন্যান্য দেশের চেয়ে জানুয়ারিতে চালের দাম কমেছে। এক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারিতে কৃষকের ঘরে উঠতে যাওয়া বুরো ধানের ভালো ফলনের আভাস রয়েছে বলে মনে করছে এফএও। তবে বাংলাদেশে চালের দাম কমলেও তা আগের বছরের চেয়ে কিছুটা বেশিই আছে।

এদিকে বাংলাদেশে গমের আটার দাম জানুয়ারিতে কমলেও তা আগের বছরের চেয়ে ৭০ শতাংশ বেশি। আমদানিতে শ্লথগতি ও বর্ধমান পরিবহন ব্যয়ের কারণেই এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে এফএও বলছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত বছরের ডিসেম্বর ও এবছরের জানুয়ারিতে স্থানীয়ভাবে প্রধান খাদ্যশস্যের দাম উচ্চ পর্যায়েই ছিল। যদিও তা আফ্রিকার দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশসহ বাছাই করা কয়েকটি দেশে ২০২২ সালের শীর্ষ পর্যায় থেকে কিছুটা কমেছে।

‘হর্ন অব আফ্রিকা’ অঞ্চলসহ কিছু এলাকায় নাজুক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে নিকটবর্তীকালে খাদ্যপ্রাপ্তিতে প্রতিবন্ধকতা অব্যাহত থাকতে পারে। বিশ্ব বাজারে উদ্ভূত পরিস্থিতি আর তার সঙ্গে বিরূপ আবহাওয়া, সংঘাত ও মুদ্রার অবমূল্যায়নসহ চলমান অপরাপর ঝুঁকিগুলো স্থানীয় প্রধান খাদ্য বাজারে দামে প্রভাব অব্যাহত রাখবে।

চিনির আন্তর্জাতিক দর নিম্নমুখী
এফএওর হিসাবে, আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কমেছে। গত জানুয়ারিতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চিনির দরসূচক ছিল ১১৫ দশমিক ৮ পয়েন্ট, যা আগের মাসের চেয়ে ১ দশমিক ৩ শতাংশ বা ১ দশমিক ১ শতাংশ কম। গত বছরের শেষ দুই মাসে দাম তর তর করে বাড়ার পর এবারই প্রথম কমল।

এফএওর প্রতিবেদন বলছে, থাইল্যান্ডে ভালো ফলন ও ব্রাজিলের প্রধান প্রধান এলাকাগুলোতে আখ উৎপাদনের জন্য উপযোগী জলবায়ু থাকায় জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দর কমেছে। চিনির দাম আরও উল্লেখযোগ্য হারে এরই মধ্যে কমতো। কিন্তু ভারতে কম ফলন ও রপ্তানির সহজলভ্যতা নিয়ে উদ্বেগ থাকায় তা ব্যাহত হয়েছে।

এছাড়া ব্রাজিলে গ্যাসোলিনের দাম বৃদ্ধির ফলে ইথানলের চাহিদা বাড়ায় এবং যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে ব্রাজিলিয়ান ডলার জোরালো হওয়ায় বিশ্ব বাজারে চিনির দরে নিম্নমুখী চাপকে কিছুটা আটকে রেখেছে। সূত্রঃ আজকের পত্রিকা