নিউইয়র্ক ০১:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পাইপলাইনে অলস অর্থের পাহাড়

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৪৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪
  • / ৪৯ বার পঠিত

বৈদেশিক ঋণ ও প্রতিশ্রুতি দেয়া সহায়তার অর্থ আসা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও প্রত্যাশা অনুযায়ী আসছে না। ডলার সঙ্কট, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি ও কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, খরচে অনীহাই মূলত এর প্রধান কারণ। ফলে পাইপলাইনে এখনো জমে আছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক প্রতিশ্রুত সহায়তার অর্থ। শর্ত পূরণে ব্যর্থতা, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি এবং ব্যবহারের অদক্ষতার কারণে বাংলাদেশে পুঞ্জীভূত বিদেশি সহায়তা স্তূপ ক্রমেই বাড়ছে। দাতারাও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থছাড় করছে না। এমনকি সরকারি কর্মকর্তারাও নানাবিধ শর্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা এড়াতে এই অর্থছাড় নিয়েও আগ্রহ দেখান না। ফলে সরকার প্রতি অর্থবছরে যে পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাজেট ঘোষণা করে তাতেও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় পেতে হলে অনেকগুলো প্রক্রিয়া পার করতে হয়। সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী দু’পক্ষের অনেকগুলো শর্ত থাকে। এসব শর্ত পূরণ করেই অর্থ পেতে হয়। তাই তাড়াহুড়ো কিংবা শর্টকাট প্রক্রিয়ায় এই টাকা খরচের সুযোগ নেই। উদ্দেশ্য ভালো হলেও নিয়মকে পাশ কাটিয়ে কেউ যেতে পারবেন না। অন্যদিকে সরকারি অর্থে এ রকম কোনো বাধা নিষেধ বা তৃতীয় পক্ষ থাকে না।

জানা যায়, যখন কোনো দাতা দেশ বা সংস্থার সঙ্গে সরকারের ঋণ বা অনুদান চুক্তি সই হয় তখন তা পাইপলাইন হিসেবে জমা হয়। তবে, খরচ না হলে অর্থ ছাড় করে না দাতা দেশ বা সংস্থাগুলো। যদিও সম্প্রতি প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা বাড়ছে। কিন্তু তা খরচ করা যাচ্ছে না। পাইপলাইনে তাই প্রতিদিনই জমছে বিপুল পরিমাণ প্রতিশ্রুত সহায়তার অর্থ। ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে আছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এ অবস্থায় চলমান ডলার সঙ্কট কাটাতে পাইপলাইনের অর্থ ব্যবহারে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নতুন সকারের প্রথম একনেক সভায়ই নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছিলেন, ‘বৈদেশিক ঋণ আছে এমন প্রকল্পের গতি বাড়াতে হবে।’ এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রথমবারের মতো আগামী বুধবার বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, বৈদেশিক অর্থায়ন খরচে অনীহা রয়েছে। আর তাই পাইপলাইনে আটকে থাকছে অলস অর্থের পাহাড়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময়মতো বিদেশি অর্থছাড় না হওয়ায় প্রতি বছরই পাইপলাইনে জমছে অলস অর্থ। এদিকে উভয়সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ একদিকে নানা কারনে অর্থছাড় করাতে না পাড়ায় পাইপলাইনে অর্থের অঙ্ক যেমন বাড়ছে অপরদিকে তেমনি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপও বাড়ছে। এক্ষেত্রে জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে বাংলাদেশ সুদ পরিশোধ করেছে ১৮৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থ ব্যয়ে দাতাদের বিভিন্ন শর্ত পালনের পাশাপাশি শতভাগ স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা থাকায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এতে নিরুৎসাহিত হন। এ ছাড়া বৈদেশিক অর্থায়নে অপচয়, অপব্যবহার আর দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম, যা অর্থ ব্যয় না হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অপরদিকে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেশীয় অর্থায়নে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা খরচে কার্পণ্য দেখালেও সরকারি অর্থ খরচে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অত্যধিক। কারণ এখানে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা তুলনামূলক অনেক কম। দুর্নীতি-অনিয়মের সুযোগ থাকে বেশি। এ কথা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক এবং অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, তিন বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় লাগে সাত থেকে আট বছর। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়াটাই সরকারের বড় দুর্বলতা। বিদেশি ঋণ যথাসময়ে ছাড় না হওয়ার পেছনে এটি একটি কারণ। অন্যান্য কারণের মধ্যে বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ে কঠোর নিয়ম-কানুন, কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সক্ষমতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি। এ থেকে উত্তরণে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উর্ধ্বতন তদারকি টিম গঠনের তাগিদ দেন। যারা কিছুদিন পর পর বিষয়টি তদারক করবেন।

সূত্র মতে, সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন কমই হয়ে থাকে। এতে করে নানা জটিলতার উদ্ভব হয়, একই সঙ্গে প্রকল্পের বাজেটও যায় বেড়ে। আর বৈদেশিক অর্থপুষ্ট প্রকল্পে সময়ক্ষেপণ ঘটলে দেশের সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। আটকে থাকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। যদিও ডলার সঙ্কটে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আর এই ডলার সঙ্কটের সময়ে পাইপলাইনে জমেছে বৈদেশিক অর্থের পাহাড়।

ইআরডি’র মাসিক প্রতিবেদন মতে, বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় বাড়লেও ঋণ পরিশোধের চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে পাইপলাইনে বিদেশি সহায়তার আকার দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে। অর্থবছরের শুরুতে পাইপলাইনে ছিল ৪৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থবছরে বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ ও অনুদান মিলে বিদেশি সহায়তায় ছাড় হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে পাইপলাইনে বৈদেশিক সহায়তা ছিল ৫০ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা অর্থবছর শেষে কমে দাঁড়ায় ৪৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাইপলাইনের অর্থ আরও কমে যায়। পাইপলাইনে সব থেকে বেশি ঋণ ও অনুদান পড়ে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার। এর পরেই রয়েছে আমেরিকা-জাপানের কাছে ২ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ঋণ। বিশ্বব্যাংকের কাছে পড়ে আছে ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। ভারত ও চীনের কাছে আছে ২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ পড়ে আছে। ৮টি বড় উন্নয়ন সহযোগীর কাছে ১০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার রয়েছে পাইপলাইনে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেছেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পে গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে নিয়মিত প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করতে বলেছেন। তার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। ৬ মার্চ এনইসি সম্মেলন কক্ষে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থপ্রাপ্তি এবং ডিজিটাল একনেক কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ডিজিটাল একনেক প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই ১০০টি প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব আনা হবে। ফলে কাগজের পরিবর্তে অনলাইনেই প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করা হবে।

যদিও সার্বিকভাবে সব ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির বেশ কিছু কারণ নির্ণয় করেছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। এগুলোর মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রকল্প তৈরিতেই দুর্বলতা ও দক্ষতার অভাব অন্যতম। এছাড়া আছে যেনতেনভাবে প্রকল্প তৈরি, বাস্তবায়ন পর্যায়ে কার্যকর তদারকির অভাব, নিয়মিত ও কার্যকরভাবে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) এবং পিএসসি (প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি) বৈঠক না হওয়া। একই সঙ্গে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা এবং দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা। পাশাপাশি রয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থছাড় না হওয়া, প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদলি প্রভৃতি। এছাড়া বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের সময়ক্ষেপণকেও দায়ী করা হয়েছে। আরও আছে বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত না হতেই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া।

এদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপও প্রতিদিন বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইআরডি’র মাসিক এক অগ্রগতি প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে বাংলাদেশ সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ১৮৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে সুদ ৭৬ কোটি ৭ লাখ এবং আসল ১০৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। অর্থবছরের একই সময়ে মোট পরিশোধ করা হয়েছিল ১২৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে সুদ ছিল ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ এবং আসল ৯১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সুদ ও আসল পরিশোধ বেড়েছে ৫৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে অর্থছাড় বেড়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে ছাড় হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৪২১ কোটি ৩৬ লাখ এবং অনুদান ১৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। অর্থবছরের একই সময়ে ছাড় হয়েছিল মোট ৪২৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৪০৪ কোটি ৭৬ লাখ এবং অনুদান ছাড় হয় ২১ কোটি ১৮ লাখ ডলার।

এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতিও বেড়েছে। এক্ষেত্রে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য প্রতিশ্রুতি এসেছে ৭১৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ হিসাবে ৬৭৪ কোটি এবং অনুদান হিসাবে এসেছে ৪৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি এসেছিল ১৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ এবং অনুদান ২৩ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৫৪০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক প্রকল্প পরিচালক তার অভিজ্ঞতা থেকে জানান, মূলত চুক্তির নানা নিয়ম-কানুন মানতে হয় বৈদেশিক সহায়তার ক্ষেত্রে। যেমনÑকেনাকাটা করতে গেলে ধাপে ধাপে দাতা সংস্থার সম্মতি নিতে হয়। একটি প্যাকেজের ঠিকাদার নিয়োগ-সংক্রান্ত কাজে ৩-৪ বার তাদের কাছে যেতে হয়। অর্থছাড়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এ কারনেই বৈদেশিক সহায়তার কাজে অনীহা প্রকল্প কর্মর্তাদের। তবে পরামর্শ হিসেবে এই কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পাইপলাইনের অর্থব্যয় বাড়ানো এ সময়ে অত্যন্ত জরুরি। কেননা, ডলার সঙ্কট মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

পাইপলাইনে অলস অর্থের পাহাড়

প্রকাশের সময় : ১০:৪৩:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ মার্চ ২০২৪

বৈদেশিক ঋণ ও প্রতিশ্রুতি দেয়া সহায়তার অর্থ আসা আগের তুলনায় কিছুটা বাড়লেও প্রত্যাশা অনুযায়ী আসছে না। ডলার সঙ্কট, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি ও কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, খরচে অনীহাই মূলত এর প্রধান কারণ। ফলে পাইপলাইনে এখনো জমে আছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক প্রতিশ্রুত সহায়তার অর্থ। শর্ত পূরণে ব্যর্থতা, প্রকল্পের কাজে ধীরগতি এবং ব্যবহারের অদক্ষতার কারণে বাংলাদেশে পুঞ্জীভূত বিদেশি সহায়তা স্তূপ ক্রমেই বাড়ছে। দাতারাও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থছাড় করছে না। এমনকি সরকারি কর্মকর্তারাও নানাবিধ শর্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বাধ্যবাধকতা এড়াতে এই অর্থছাড় নিয়েও আগ্রহ দেখান না। ফলে সরকার প্রতি অর্থবছরে যে পরিমাণ বৈদেশিক সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাজেট ঘোষণা করে তাতেও ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

জানতে চাইলে বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বৈদেশিক সহায়তার অর্থছাড় পেতে হলে অনেকগুলো প্রক্রিয়া পার করতে হয়। সরকার ও উন্নয়ন সহযোগী দু’পক্ষের অনেকগুলো শর্ত থাকে। এসব শর্ত পূরণ করেই অর্থ পেতে হয়। তাই তাড়াহুড়ো কিংবা শর্টকাট প্রক্রিয়ায় এই টাকা খরচের সুযোগ নেই। উদ্দেশ্য ভালো হলেও নিয়মকে পাশ কাটিয়ে কেউ যেতে পারবেন না। অন্যদিকে সরকারি অর্থে এ রকম কোনো বাধা নিষেধ বা তৃতীয় পক্ষ থাকে না।

জানা যায়, যখন কোনো দাতা দেশ বা সংস্থার সঙ্গে সরকারের ঋণ বা অনুদান চুক্তি সই হয় তখন তা পাইপলাইন হিসেবে জমা হয়। তবে, খরচ না হলে অর্থ ছাড় করে না দাতা দেশ বা সংস্থাগুলো। যদিও সম্প্রতি প্রকল্পে বৈদেশিক সহায়তা বাড়ছে। কিন্তু তা খরচ করা যাচ্ছে না। পাইপলাইনে তাই প্রতিদিনই জমছে বিপুল পরিমাণ প্রতিশ্রুত সহায়তার অর্থ। ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ৫ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮টি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার কাছে আছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এ অবস্থায় চলমান ডলার সঙ্কট কাটাতে পাইপলাইনের অর্থ ব্যবহারে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নতুন সকারের প্রথম একনেক সভায়ই নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছিলেন, ‘বৈদেশিক ঋণ আছে এমন প্রকল্পের গতি বাড়াতে হবে।’ এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে প্রথমবারের মতো আগামী বুধবার বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। বাস্তবতা হচ্ছে, বৈদেশিক অর্থায়ন খরচে অনীহা রয়েছে। আর তাই পাইপলাইনে আটকে থাকছে অলস অর্থের পাহাড়। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সময়মতো বিদেশি অর্থছাড় না হওয়ায় প্রতি বছরই পাইপলাইনে জমছে অলস অর্থ। এদিকে উভয়সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশ একদিকে নানা কারনে অর্থছাড় করাতে না পাড়ায় পাইপলাইনে অর্থের অঙ্ক যেমন বাড়ছে অপরদিকে তেমনি বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপও বাড়ছে। এক্ষেত্রে জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে বাংলাদেশ সুদ পরিশোধ করেছে ১৮৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থ ব্যয়ে দাতাদের বিভিন্ন শর্ত পালনের পাশাপাশি শতভাগ স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা থাকায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা এতে নিরুৎসাহিত হন। এ ছাড়া বৈদেশিক অর্থায়নে অপচয়, অপব্যবহার আর দুর্নীতির সুযোগ থাকে কম, যা অর্থ ব্যয় না হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। অপরদিকে সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র দেশীয় অর্থায়নে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তা খরচে কার্পণ্য দেখালেও সরকারি অর্থ খরচে আগ্রহ দেখাচ্ছেন অত্যধিক। কারণ এখানে জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা তুলনামূলক অনেক কম। দুর্নীতি-অনিয়মের সুযোগ থাকে বেশি। এ কথা স্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি গবেষণা সংস্থা বিআইডিএসের সাবেক ঊর্ধ্বতন পরিচালক এবং অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, তিন বছরের প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় লাগে সাত থেকে আট বছর। সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়াটাই সরকারের বড় দুর্বলতা। বিদেশি ঋণ যথাসময়ে ছাড় না হওয়ার পেছনে এটি একটি কারণ। অন্যান্য কারণের মধ্যে বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ে কঠোর নিয়ম-কানুন, কর্মকর্তাদের অদক্ষতা, মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সক্ষমতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি। এ থেকে উত্তরণে মন্ত্রণালয় থেকে একটি উর্ধ্বতন তদারকি টিম গঠনের তাগিদ দেন। যারা কিছুদিন পর পর বিষয়টি তদারক করবেন।

সূত্র মতে, সময়মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন কমই হয়ে থাকে। এতে করে নানা জটিলতার উদ্ভব হয়, একই সঙ্গে প্রকল্পের বাজেটও যায় বেড়ে। আর বৈদেশিক অর্থপুষ্ট প্রকল্পে সময়ক্ষেপণ ঘটলে দেশের সক্ষমতা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। আটকে থাকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা। যদিও ডলার সঙ্কটে প্রকল্প বাস্তবায়নে নানাবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আর এই ডলার সঙ্কটের সময়ে পাইপলাইনে জমেছে বৈদেশিক অর্থের পাহাড়।

ইআরডি’র মাসিক প্রতিবেদন মতে, বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড় বাড়লেও ঋণ পরিশোধের চাপে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে পাইপলাইনে বিদেশি সহায়তার আকার দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলারে। অর্থবছরের শুরুতে পাইপলাইনে ছিল ৪৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থবছরে বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ ও অনুদান মিলে বিদেশি সহায়তায় ছাড় হয়েছে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরের শুরুতে পাইপলাইনে বৈদেশিক সহায়তা ছিল ৫০ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলার, যা অর্থবছর শেষে কমে দাঁড়ায় ৪৫ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলারে। আর ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাইপলাইনের অর্থ আরও কমে যায়। পাইপলাইনে সব থেকে বেশি ঋণ ও অনুদান পড়ে আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ২ দশমিক ৬৯ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার। এর পরেই রয়েছে আমেরিকা-জাপানের কাছে ২ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ঋণ। বিশ্বব্যাংকের কাছে পড়ে আছে ১ দশমিক ৮৬ বিলিয়ন ডলার। ভারত ও চীনের কাছে আছে ২ দশমিক ১৮ বিলিয়ন এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার কাছে ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার ঋণ পড়ে আছে। ৮টি বড় উন্নয়ন সহযোগীর কাছে ১০ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার রয়েছে পাইপলাইনে।

এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা বিভাগের সিনিয়র সচিব সত্যজিত কর্মকার বলেছেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বৈদেশিক ঋণের প্রকল্পে গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে নিয়মিত প্রকল্পসংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করতে বলেছেন। তার এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ শুরু হয়েছে। ৬ মার্চ এনইসি সম্মেলন কক্ষে মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এতে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি ও সমস্যা নিয়ে আলোচনা হবে। পাশাপাশি জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থপ্রাপ্তি এবং ডিজিটাল একনেক কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ডিজিটাল একনেক প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই ১০০টি প্রকল্প যুক্ত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সব আনা হবে। ফলে কাগজের পরিবর্তে অনলাইনেই প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করা হবে।

যদিও সার্বিকভাবে সব ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির বেশ কিছু কারণ নির্ণয় করেছে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। এগুলোর মধ্যে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রকল্প তৈরিতেই দুর্বলতা ও দক্ষতার অভাব অন্যতম। এছাড়া আছে যেনতেনভাবে প্রকল্প তৈরি, বাস্তবায়ন পর্যায়ে কার্যকর তদারকির অভাব, নিয়মিত ও কার্যকরভাবে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) এবং পিএসসি (প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটি) বৈঠক না হওয়া। একই সঙ্গে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা এবং দরপত্র প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা। পাশাপাশি রয়েছে প্রয়োজনীয় অর্থছাড় না হওয়া, প্রকল্প পরিচালকদের অদক্ষতা, ঘন ঘন প্রকল্প পরিচালক বদলি প্রভৃতি। এছাড়া বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীদের সময়ক্ষেপণকেও দায়ী করা হয়েছে। আরও আছে বৈদেশিক অর্থায়ন নিশ্চিত না হতেই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া।

এদিকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপও প্রতিদিন বাড়ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ইআরডি’র মাসিক এক অগ্রগতি প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের ৭ মাসে বাংলাদেশ সুদ পরিশোধ করা হয়েছে ১৮৫ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে সুদ ৭৬ কোটি ৭ লাখ এবং আসল ১০৯ কোটি ৬৭ লাখ ডলার। অর্থবছরের একই সময়ে মোট পরিশোধ করা হয়েছিল ১২৮ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে সুদ ছিল ৩৬ কোটি ৫৮ লাখ এবং আসল ৯১ কোটি ৮৯ লাখ ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সুদ ও আসল পরিশোধ বেড়েছে ৫৭ কোটি ২০ লাখ ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের সাত মাসে অর্থছাড় বেড়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পের অনুকূলে ছাড় হয়েছে ৪৩৯ কোটি ৮৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৪২১ কোটি ৩৬ লাখ এবং অনুদান ১৮ কোটি ৪৮ লাখ ডলার। অর্থবছরের একই সময়ে ছাড় হয়েছিল মোট ৪২৫ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ৪০৪ কোটি ৭৬ লাখ এবং অনুদান ছাড় হয় ২১ কোটি ১৮ লাখ ডলার।

এছাড়া উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতিও বেড়েছে। এক্ষেত্রে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য প্রতিশ্রুতি এসেছে ৭১৭ কোটি ২১ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ হিসাবে ৬৭৪ কোটি এবং অনুদান হিসাবে এসেছে ৪৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি এসেছিল ১৭৬ কোটি ৫৭ লাখ ডলার। এর মধ্যে ঋণ ১৫৩ কোটি ৪৩ লাখ এবং অনুদান ২৩ কোটি ১৪ লাখ ডলার। এ হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রতিশ্রুতি বেড়েছে ৫৪০ কোটি ৬৪ লাখ ডলার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাবেক এক প্রকল্প পরিচালক তার অভিজ্ঞতা থেকে জানান, মূলত চুক্তির নানা নিয়ম-কানুন মানতে হয় বৈদেশিক সহায়তার ক্ষেত্রে। যেমনÑকেনাকাটা করতে গেলে ধাপে ধাপে দাতা সংস্থার সম্মতি নিতে হয়। একটি প্যাকেজের ঠিকাদার নিয়োগ-সংক্রান্ত কাজে ৩-৪ বার তাদের কাছে যেতে হয়। অর্থছাড়ের ক্ষেত্রেও রয়েছে নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। এ কারনেই বৈদেশিক সহায়তার কাজে অনীহা প্রকল্প কর্মর্তাদের। তবে পরামর্শ হিসেবে এই কর্মকর্তা বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পাইপলাইনের অর্থব্যয় বাড়ানো এ সময়ে অত্যন্ত জরুরি। কেননা, ডলার সঙ্কট মোকাবিলায় এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সূত্র : দৈনিক ইনকিলাব।