নিউইয়র্ক ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিয়ন্ত্রণহীন ডলারের দামে বেড়েছে রেমিট্যান্স

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩
  • / ১৫২ বার পঠিত

হককথা ডেস্কদেশে ডলারের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে আমদানির দেনা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনছে ব্যাংকগুলো। ফলে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।

রোববার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৯ কোটি ৪৪ হাজার ডলার। এতে দৈনিক আসছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ আমেরিকান ডলার রেমিট্যান্স।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানির দেনা শোধ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। তাই সংকট মোকাবিলায় বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনছে অনেক ব্যাংক। এ সুযোগে হঠাৎ করে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো।

ফলে চলতি মাসের শুরুতে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে প্রতি ডলার ১২৩ থেকে ১২৪ টাকায় প্রবাসী আয় কিনেছে। এমন অস্থির পরিস্থিতিতে ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব বেশি নাও বাড়তে পারে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ আমেরিকান ডলার। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় দেশে আসে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার।

এর আগে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার। আর আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় তারা সভা করে ডলারের রেট নির্ধারণ করে আসছে।

সবশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকে আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকায়।

কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৬ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২৬ টাকা পর্যন্ত। যেখানে গত সপ্তাহের শুরুতে এক ডলারের দাম ছিল ১১৮ টাকা থেকে ১২০ টাকা। সূত্র : ঢাকা পোস্ট

হককথা/নাছরিন

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

নিয়ন্ত্রণহীন ডলারের দামে বেড়েছে রেমিট্যান্স

প্রকাশের সময় : ০৫:০৯:৫১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

হককথা ডেস্কদেশে ডলারের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে আমদানির দেনা পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনছে ব্যাংকগুলো। ফলে বাড়ছে রেমিট্যান্স প্রবাহ।

রোববার (১২ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি নভেম্বরের প্রথম ১০ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৯ কোটি ৪৪ হাজার ডলার। এতে দৈনিক আসছে ৭ কোটি ৯৪ লাখ আমেরিকান ডলার রেমিট্যান্স।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণে আমদানির দেনা শোধ করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। তাই সংকট মোকাবিলায় বাড়তি দামে প্রবাসী আয় কিনছে অনেক ব্যাংক। এ সুযোগে হঠাৎ করে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম ১২ থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসগুলো।

ফলে চলতি মাসের শুরুতে অনেক ব্যাংক বাধ্য হয়ে প্রতি ডলার ১২৩ থেকে ১২৪ টাকায় প্রবাসী আয় কিনেছে। এমন অস্থির পরিস্থিতিতে ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দাম নিয়ন্ত্রণে রেমিট্যান্সের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে প্রবাসী আয়ে ব্যাংকের নিজস্ব প্রণোদনাসহ ডলারের দর কোনোভাবেই ১১৬ টাকার বেশি দেওয়া যাবে না। ফলে চলতি মাসের বাকি দিনগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ খুব বেশি নাও বাড়তে পারে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি মাসের ১০ দিনে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স দেশে এসেছে, এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৪ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৭২ কোটি ৩২ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অক্টোবরে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১৯৭ কোটি ৭৬ লাখ আমেরিকান ডলার। এর আগে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস রেমিট্যান্স প্রবাহ ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। ডলার সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় হোঁচট খায়। ওই মাসে গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় দেশে আসে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার।

এর আগে, ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে ১০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার। আর আগস্টে আসে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার আমেরিকান ডলার।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়। পরে গত বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনায় তারা সভা করে ডলারের রেট নির্ধারণ করে আসছে।

সবশেষ ব্যাংকগুলোর ঘোষণা অনুযায়ী, প্রবাসী ও রপ্তানি আয় কেনার ক্ষেত্রে ডলারের ঘোষিত দাম ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজকে আন্তঃব্যাংকে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১১১ টাকায়।

কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে নগদ এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে ১২৬ টাকা। চিকিৎসা, শিক্ষা বা ভ্রমণের জন্য যারা বিদেশে যাচ্ছেন, তাদের নগদ প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হচ্ছে ১২৬ টাকা পর্যন্ত। যেখানে গত সপ্তাহের শুরুতে এক ডলারের দাম ছিল ১১৮ টাকা থেকে ১২০ টাকা। সূত্র : ঢাকা পোস্ট

হককথা/নাছরিন