নিউইয়র্ক ০৯:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

উচ্চ সুদে ২৪ দেশ দেউলিয়া হয় সত্তরের দশকে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩
  • / ১৫৮ বার পঠিত

অর্থনীতি ডেস্ক : উচ্চ সুদহারের কারণে সত্তরের দশকে বিশ্বের ২৪টি দেশ দেউলিয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত গিল। গতকাল বুধবার সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যেসব দেশ বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সংকটে আছে, সুদের হার বৃদ্ধি তাদের জন্য সমস্যার কারণ হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অন্য সংস্থাগুলো গত এক বছরে দফায় দফায় সুদহার বাড়িয়েছে এবং জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উচ্চ সুদহার দীর্ঘ সময় থাকবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে বিশ্ব অর্থনীতি।

যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির বাজার বিঘ্নিত হয়েছে; সেই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে নীতি সুদহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ২০২২ সালে ছিল ৩.৫ শতাংশ; যা চলতি বছরে নেমে আসবে ৩ শতাংশে। সংস্থার মতে, মহামারি আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশগুলোর জন্য।

মরক্কোর মারাকেশে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক বৈঠকে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দরমিত গিল আরো বলেন, ‘এতগুলো ধাক্কা সত্ত্বেও আমরা দেখিনি কোনো বড় অর্থনীতি বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। কিন্তু সুসংবাদ এখানেই শেষ। এখন সমস্যা হচ্ছে, উচ্চ সুদহারের কারণে প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়ছে।’ গিল স্মরণ করিয়ে দেন সত্তরের দশকে দীর্ঘ সময় উচ্চ সুদহার থাকার কারণে ২৪টি দেশ দেউলিয়া হয়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় ভাঙ্গা বলেন, ‘সন্দেহ নেই, মূল্যস্ফীতি কমে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এ সুদহার উচ্চ পর্যায়ে থাকবে দীর্ঘ মেয়াদে। বিনিয়োগের জন্য এটি একটি জটিল বিষয়। এর পাশাপাশি সেসব মানুষের জন্য যারা দীর্ঘ সময় নিম্ন সুদহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।’

এর আগে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আংকটাডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর ঋণের চাপ বাড়ছে।

এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো।
ঋণসংকট উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সুদের হার বৃদ্ধি, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও মন্থর রপ্তানি প্রবৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আয়ে। এতে অনেক দেশে অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদান বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ঋণের চাপ উন্নয়নে সংকট তৈরি করছে। বিশ্বের ৩৩০ কোটি মানুষ বা মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক এখন এমন দেশগুলোতে বাস করে যাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

উচ্চ সুদে ২৪ দেশ দেউলিয়া হয় সত্তরের দশকে

প্রকাশের সময় : ০৯:১৭:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩

অর্থনীতি ডেস্ক : উচ্চ সুদহারের কারণে সত্তরের দশকে বিশ্বের ২৪টি দেশ দেউলিয়া হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ইন্দরমিত গিল। গতকাল বুধবার সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যেসব দেশ বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে সংকটে আছে, সুদের হার বৃদ্ধি তাদের জন্য সমস্যার কারণ হবে।’ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং অন্য সংস্থাগুলো গত এক বছরে দফায় দফায় সুদহার বাড়িয়েছে এবং জানিয়েছে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে উচ্চ সুদহার দীর্ঘ সময় থাকবে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বলেছে, মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধিজনিত সংকট থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে বিশ্ব অর্থনীতি।

যুদ্ধের কারণে খাদ্য ও জ্বালানির বাজার বিঘ্নিত হয়েছে; সেই সঙ্গে উচ্চ মূল্যস্ফীতির রাশ টানতে নীতি সুদহার ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। এসব কারণে বিশ্ব অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির হার ২০২২ সালে ছিল ৩.৫ শতাংশ; যা চলতি বছরে নেমে আসবে ৩ শতাংশে। সংস্থার মতে, মহামারি আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্রমেই আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল ও উদীয়মান দেশগুলোর জন্য।

মরক্কোর মারাকেশে আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক বৈঠকে এক সংবাদ সম্মেলনে ইন্দরমিত গিল আরো বলেন, ‘এতগুলো ধাক্কা সত্ত্বেও আমরা দেখিনি কোনো বড় অর্থনীতি বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। কিন্তু সুসংবাদ এখানেই শেষ। এখন সমস্যা হচ্ছে, উচ্চ সুদহারের কারণে প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে পড়ছে।’ গিল স্মরণ করিয়ে দেন সত্তরের দশকে দীর্ঘ সময় উচ্চ সুদহার থাকার কারণে ২৪টি দেশ দেউলিয়া হয়ে যায়।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় ভাঙ্গা বলেন, ‘সন্দেহ নেই, মূল্যস্ফীতি কমে আসতে শুরু করেছে। কিন্তু এ সুদহার উচ্চ পর্যায়ে থাকবে দীর্ঘ মেয়াদে। বিনিয়োগের জন্য এটি একটি জটিল বিষয়। এর পাশাপাশি সেসব মানুষের জন্য যারা দীর্ঘ সময় নিম্ন সুদহারে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে।’

এর আগে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংস্থা আংকটাডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে উন্নয়নশীল দেশগুলোর ওপর ঋণের চাপ বাড়ছে।

এতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলো।
ঋণসংকট উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনীতিতে চাপ তৈরি করছে জানিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, সুদের হার বৃদ্ধি, স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ও মন্থর রপ্তানি প্রবৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে রাজস্ব আয়ে। এতে অনেক দেশে অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদান বিঘ্নিত হচ্ছে এবং ঋণের চাপ উন্নয়নে সংকট তৈরি করছে। বিশ্বের ৩৩০ কোটি মানুষ বা মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক এখন এমন দেশগুলোতে বাস করে যাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার চেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় ঋণের সুদ পরিশোধে। সূত্র : এএফপি, রয়টার্স