মওলানা ভাসানী : মজলুম জননেতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা
- প্রকাশের সময় : ১২:৪০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪
- / ৫১ বার পঠিত
বাংলাদেশের রাজনীতির দিকপাল হিসেবে যাঁদের ভাবা হয়, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন তাঁদেরই একজন। এই মহান নেতার ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বাংলাদেশের রাজনীতির এক ক্রান্তিলগ্নে কৃতজ্ঞ জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে এই মহান নেতাকে। মওলানা ভাসানীকে বলা হতো আফ্রো এশিয়া ল্যাটিন আমেরিকার নিপীড়িত মানুষের নেতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি। নিজের প্রতিষ্ঠিত দল যখন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক সরকারের ক্ষমতায় তখন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দুই যুদ্ধজোটে পাকিস্তানের যোগদানের বিরোধিতা করে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতি পদের তোয়াক্কা না করে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে সম্মেলন ডেকে গঠন করেন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)।
ভাসানী নামের জাদুতে অচিরেই ন্যাপ শুধু তৎকালীন পূর্ব বাংলা নয়, পাকিস্তানের সব প্রদেশেই প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ন্যাপ ছিল পাকিস্তানের প্রথম বাম ঘরানার রাজনৈতিক দল। কাগমারী সম্মেলনেই মওলানা ভাসানী বাংলাদেশের স্বাধিকার প্রশ্নে সাফ সাফ বলেন, পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসন না দিলে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হবে। মওলানা ভাসানী জীবিতাবস্থায় বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংগ্রামে ভূমিকা রেখেছেন। পাকিস্তানী নব্য উপনিবেশবাদী শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৫৪ সালে শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা ভাসানী ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠে যুক্তফ্রন্ট। এই যুক্তফ্রন্টের তিনি ছিলেন অন্যতম প্রধান নেতা। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের অভিভাবকের ভূমিকায় ছিলেন মওলানা ভাসানী। স্বাধীনতার পর তাঁর পুত্রসম শিষ্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের শাসনামলের প্রতিটি অনিয়মের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে তিনি পরোয়া করেননি। বাংলাদেশকে অভিন্ন নদীর পানির হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার ভারতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বৃদ্ধ বয়সেও ফারাক্কা মিছিলের নেতৃত্ব দেন মওলানা ভাসানী। অসামান্য জনপ্রিয়তার অধিকারী হওয়া সত্তে¡ও ক্ষমতার রাজনীতির দ্বারা তিনি কখনো প্রভাবিত হননি। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ছিল গাঁও-গ্রামের কৃষকের মতো। রাজনীতির কিংবদন্তি মজলুম নেতা মওলানা ভাসানীর প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা। (বাংলাদেশ প্রতিদিন)