বিএনপির বদনাম
- প্রকাশের সময় : ০২:১২:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / ৯২ বার পঠিত
সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে হয় বলেই আমরা জানি। তবে অসাধুরা ওত পেতে থাকে সুযোগের অপব্যবহার করার জন্য। এর উদাহরণ প্রতিনিয়ত নজরে আসছে। যেমন, কোনো স্থানের নাম পরিবর্তন, কাউকে বিশেষ কোনো ‘ট্যাগ’ লাগিয়ে ‘মব জাস্টিস’-এর নামে মারধর করা কিংবা কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার কৃতিত্ব নিয়ে নেওয়া! এর মানে দাঁড়ায়, যাঁরা এত দিন ক্ষমতা প্রদর্শন বা ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারেননি, তাঁরা স্বরূপে ফিরে এসেছেন। বিগত বছরগুলোতে যা হয়েছে তা থেমে নেই, শুধু এসব কর্মকান্ডের হোতারা বদলেছে।
আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটি খবরে চোখ রাখা যায়। প্রথমটি: ‘বরিশাল জেলা মৎস্য পাইকারি অবতরণকেন্দ্র’-এর নাম পরিবর্তন করে সুযোগসন্ধানী বিএনপি নেতারা নতুন নামকরণ করেছেন ‘শহীদ জিয়া মৎস্য পাইকারি অবতরণকেন্দ্র’। যদিও নামকরণের উদ্যোক্তাদের দাবি, চারদলীয় জোট সরকারের সময় মোকামটি জিয়ার নামেই ছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে নাম পরিবর্তন করেছিল। হ্যাঁ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন অনেক কিছুরই নাম পরিবর্তন করেছিল, এমনকি শেখ মুজিবুর রহমানের নাম সবচেয়ে বেশি ও যত্রতত্র ব্যবহার করায় তাদের বদনামও হয়েছে। এখন যাঁরা নিজ ইচ্ছায় কোনো কিছুর নাম পরিবর্তন করে ফেলছেন, তাঁরা কি তাঁদের দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন না, ঠিক যেমন বিগত সরকার করেছিল?
দ্বিতীয় ঘটনা: বগুড়ায় আশরাফুল আলম ওরফে ইউটিউবার হিরো আলমকে চিফ জুডিশিয়াল আদালত চত্বরে মারধর করে কানে ধরে ওঠবস করানো হয়েছে এই অভিযোগে যে তিনি নাকি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ‘গালমন্দ’ করেছেন। যদিও আলম এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ধরে নিলাম, তিনি সত্যিই কাউকে গালমন্দ করেছেন; তার মানে কি এই যে তাঁকে লাঞ্ছিত করতে হবে? এ ব্যাপারে আইনের সাহায্যও তো চাওয়া যায়। বগুড়া জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা পাপন বলছেন, এর আগে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে মামলা করায় আলমের ওপর জনগণ ক্ষুব্ধ ছিল। কিন্তু এ কথা বলে তো তিনি দলকে বদনামের স্বাদ নিতে দিলেন। অথচ তিনি বলতে পারতেন, এ রকম অন্যায়কে বিএনপি প্রশ্রয় দেয় না।
তৃতীয় খবর: কুষ্টিয়া জেলা যুবদলের নেতা আব্দুল মাজেদ খুব গর্ব করে বলেছেন, বিগত সরকার পতনের দিন তাঁর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া মডেল থানা ভাঙা হয়েছে। একটি গণ-আন্দোলনের জেরে কোনো স্থাপনা ভাঙচুরের ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু না। কিন্তু সেটা কাম্যও তো নয়। আর এমন একটি অপ্রীতিকর ঘটনার নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কৃতিত্ব নেওয়া কি দলের জন্য শোভনীয়? হয়তো এ কথা বুঝতে পেরেই তিনি পরে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ঘটনায় সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
এসব ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির নেতা-কর্মী পরিচয়ে চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটছে। বিএনপি যেমন সাংগঠনিক কাজের উদ্দেশ্যে সফরকালে কোনো যানবাহনে শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছে, তেমনি বাকি ব্যাপারগুলোতেও তাদের চুপ থাকা ঠিক হবে না। নইলে আওয়ামী লীগের মতো তারাও বদনাম বয়ে বেড়াবে সব সময়। তারাই ভাবুক কীভাবে মানুষের আস্থা অর্জন করা যায়। (আজকের পত্রিকা)