নিউইয়র্ক ০৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মার্কিন দূতাবাস এবং বাংলাদেশী রাজনীতি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:২০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুলাই ২০১৮
  • / ৫৮৫ বার পঠিত

আবু জাফর মাহমুদ: বিদায় রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট! ধন্যবাদ আপনাকে হে বন্ধু, আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে আমেরিকার পক্ষে যথার্থ দায়িত্ব পালন করার মেয়াদ শেষে নয়া দায়িত্বের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করার জন্যে। নয়া রাষ্ট্রদূতকে অগ্রিম শুভেচ্ছা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানার আগে পূর্ববর্তী কর্মস্থল থেকে বিদায় নিয়ে নয়া কর্মস্থলের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পদক্ষেপের জন্যে। বাংলাদেশ আমেরিকার সম্পর্কে অগ্রগতির উদ্যোগগুলোকে স্বাগতম!
বিশ্বনেতা আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে আরেক রকম কথা চালু হয়েছে গত ক’দিন যাবত। কথা উঠে এসেছে সাম্প্রতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষন সম্পর্কিত রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মাসিক কোটি টাকা বেতনভোগী উপদেষ্টা ও একমাত্র পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের মন্তব্য মিডিয়ায় আসার পর থেকে।বিশ্লেষকরা বলাবলি করছেন, আমেরিকার দয়ায় অসীম সুবিধাভোগী পরিবারটি অকৃতজ্ঞের ভাষায় আমেরিকার দূতাবাসকে দোষারোপ করে নিজেদের এবং বাংলাদেশের সামনে পরীক্ষা কঠিন করে দিলোনাতো? কূটনৈতিক আচরণের যোগ্য বাক্য দিয়েও নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা হতে পারতো।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস “বিএনপির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে” বলে ফেসবুকে মন্তব্য সজিব জয়ের। তার এই মন্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর ছাপা হয়েছে। তিনি লিখেছেন, “সম্প্রতি গাজীপুরে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মন্তব্যগুলোই তারা পুনরাবৃত্তি করছে এবং অনিয়মের কথা বলছে। অথচ নির্বাচনে বিএনপির সহিংসতা চালানোর চেষ্টা নিয়ে কিছুই বলছেনা”।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে জয় লিখেছেন,“যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের নীতি হচ্ছে,অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো। তাই বক্তব্যটি বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসেরই বলে ধরে নেয়া যায়। বোঝাই যাচ্ছে, দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের বিএনপির বন্ধুদের সাথে খুব বেশী সময় কাটাচ্ছেন আজকাল”।
এ নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।মিজান প্রসংগে জয় লিখেছেন, “বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমানের ফোনালাপ থেকে আমরা জানতে পারি,তার দল সহিংসতা তৈরী করার মাধ্যমে নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিলো।যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের বক্তব্যে এ বিষয়টিকে কিন্তু এড়িয়ে গেছে”।

জয় বলেন, নির্বাচনে ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৯টি অর্থাৎ ২.১ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছিল। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে কেন্দ্রগুলোর ভোটগ্রহন বাতিল ঘোষণা করে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বলেন, আমাদের নতুন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির প্রার্থী হাসান থেকে ২ লক্ষের বেশি ভোট, অর্থাৎ দ্বিগুন ভোট, পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সকল নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা একমত যে অনিয়মের অভিযোগ যা এসেছে তা কোনোভাবেই নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলতে পারেনি।
সম্প্রতি খুলনা এবং গাজীপুরের পৌর নির্বাচনে সরকার ও রাষ্ট্রীয় পক্ষপাতিত্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ বুদ বুদ করছে সবার জানা কথা। এভাবে জোর জবরদস্তিমূলক গণতন্ত্রের বাংলাদেশী মডেল অনেকে সয়ে গেছেন, অনেকের অসহ্য দেখা যাচ্ছে। এব্যাপারে পক্ষে বিপক্ষের কারো কারো মুখ চেপে রাখা গেছে রাষ্ট্রীয় শক্তির বলদর্পী তৎপরতায়।কূটনীতিকদের মুখের সামনে এই শক্তি আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। পারার সম্ভাবনাও নেই। ফলে কূটনীতিক পাড়ায় ক্ষমতাসীন দম্ভ ও রাজনৈতিক রসিকতা নিয়ে গুঞ্জন সীমা অশেষ।
আমেরিকার রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট তার মেয়াদ শেষ করে অপর দায়িত্ব নিতে চলেছেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হবেন নয়া এক সিনিয়র কূটনীতিক।শীঘ্রই তার বাংলাদেশে যোগ দেবার এবং মার্শার বিদায়ের আগে আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস ৪ঠা জুলাই উদযাপন এবং বিদায় সম্বর্ধনার হলো আয়োজন। দূতাবাসের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতি তার ঘনিষ্ঠ আবেগের কথা বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি ফিরে আসবেন বাংলাদেশে।
বলেছেন, আগামীতে এসে পুরোপুরি এক ভিন্ন বাংলাদেশ তিনি দেখতে চান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। এতে বিএনপির কাউকে নয়,সরকারের প্রতিই সম্মান দেখানো হয়েছে। যাতে কূটনৈতিক রীতি নীতির ঐতিহ্যগত চেহারায় দেখা গেছে। যা যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সম্পর্কিত মন্তব্যকে সামান্যও যৌক্তিকতা দেয়না।
এই অনুষ্ঠানে সিনিয়র কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত নিজ দেশ আমেরিকা এবং বাংলাদেশের কথা প্রসঙ্গে টেনে বলেন,আমাদের উভয় দেশের সংবিধানে এই ধারণা সন্নিবেশিত আছে যে, “সব মানুষ জন্মগতভাবে সমান। তাদের চিন্তা,উদ্ভাবন আর নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ ও স্বাধীনতা দেওয়া হলে অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে”।
তিনি আরো বলেন,“এবছরের শেষ ভাগে উভয় দেশেই এসব মূল্যবোধের একটা কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের শেষমূহুর্তে এসে আমি বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণকে সেই আহবানটিই জানাতে চাই,যা আমি বলতে চাই আমার নিজের দেশের সরকার এবং জনগণকেও। সেটি হচ্ছে আমাদের সমর্থন করতে হবে অহিংস,অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন,যা কিনা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন”।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে আমার কষ্ট হবে। তবে আমি ইতিমধ্যেই এখানে আবার আসার পরিকল্পনা করে ফেলেছি। আবার যখন আসব তখন একেবারেই ভিন্ন একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করি আমি। আরো অগ্রসর, আরো উন্নত এক বাংলাদেশ। তবে সে বাংলাদেশে থাকবে স্বাধীনতার জন্য সেই একই সংকল্প ও আবেগ, যা ১৯৭১ সাল থেকে এ দেশের মানুষের মনে জাগরূক।’
নিজের মেয়াদ শেষে যখন পুনরায় বাংলাদেশ সফরে আসবেন তখন নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দেখতে চান বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট এই ইচ্ছে প্রকাশ করেন। বার্নিকাট বলেন, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে আমার খারাপ লাগবে, তবে আমি জানি যে, ফিরে আসব। যখন আমি ফিরে আসব, নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া ভিন্ন বাংলাদেশ দেখার আশা রাখি।’
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্শা বার্নিকাটের এটাই শেষ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয় এমন অহিংস, অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে তাদের সমর্থন দিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।’
বার্নিকাট আরও বলেন, ‘বাংলাদেশী জনগণের প্রজ্ঞা এবং সংকল্প একটি স্বাধীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশের সৃষ্টি করেছে। ৪৭ বছর পর সেই প্রজ্ঞা এবং সংকল্প মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। এসব সংকল্পবদ্ধ আগামী প্রজন্মের জন্য সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণ করবে।’
এদিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার পত্রিকায় কথা বলতে গিয়ে স্বীকার করেছেন,খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই,অনেক ভুল-ত্রুটি হয়েছে। যে সত্যতার প্রতিফলন হয়েছে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের কথায়।
বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অনেকটা বিএনপির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সোমবার রাতে জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অনেকটা বিএনপি’র মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি গাজীপুরে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র মন্তব্যগুলোই তারা পুনরাবৃত্তি করছে এবং অনিয়মের কথা বলছে অথচ নির্বাচনে বিএনপি’র সহিংসতা চালানোর চেষ্টা নিয়ে কিছুই বলছে না।
জয় তার স্ট্যাটাসে আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের বক্তব্যে এই বিষয়টিকে কিন্তু এড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের নীতি হচ্ছে অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো। তাই বক্তব্যটি বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসেরই বলে ধরে নেয়া যায়। বুঝাই যা যাচ্ছে দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের বিএনপির বন্ধুদের সাথে খুব বেশি সময় কাটাচ্ছেন আজকাল”।

সজিব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সন্তান এবং আমেরিকান নাগরিক। তার স্ত্রীও একজন আমেরিকান।নানা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের একসময়ের একক নেতা ছিলেন।তিনি ক্ষমতায় থাকাকালের একটি বিখ্যাত শ্লোগান যা সরকার এবং দলের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী গর্জে উঠতো, “এক নেতা,এক দেশ-বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ”।
বঙ্গবন্ধু টাইটেল তাকে দেয়া হয়েছিলো অনুগত ছাত্র যুব নেতাদের পক্ষ থেকে। এই নামে পরিচিত করতে আওয়ামীলীগের কোন ভূমিকা ছিলোনা। ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ছিলো কল্পনাতীত দূর্বল। যখন সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের উপর নির্ভর করা এবং ছাত্রলীগের সাংগঠনিক শক্তি ছাড়া সভা অনুষ্ঠান করা ছিলো অবান্তর। ছাত্রলীগই ছিলো নেতা মুজিবের একমাত্র ভরসা। সে সময় যুবলীগ বা শ্রমিকলীগ কৃষকলীগ ছিলোনা। বাংলাদেশ স্বাধীন করার পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসে রাষ্ট্রগঠনের দায়িত্ব দেয়া হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যুবলীগ সহ অপরাপর অঙ্গ সংগঠন গড়ে।
স্বাধীনতার আগে মুজিবের সবচেয়ে কাছে থেকে সাংগঠনিক শক্তি ও আনুগত্যে ছাত্রলীগের যে নেতৃত্ব তাকে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার ষড়যন্ত্রে প্রভাবিত করেছিলো। এই ষড়যন্ত্রকারীরাই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ গড়ে মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা দেয় স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সম্মেলনে এবং সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের শ্লোগান দিয়ে “এক নেতার এক দেশ” রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে একই বছর ৩১ অক্টোবর।
আহবান জানায় স্বাধীনতাযুদ্ধের সমর্থক রাজনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা যোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের। ভিন্নমতের অপরাধে স্বাধীনতাযোদ্ধাদের উপর শুরু হলো সামরিক বাহিনী ও পুলিশ দিয়েনিপীড়ন ও হত্যা। যে পুলিশ একদিন আগেও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর স্থানীয় দালালী নৃশংসতায় নেতৃত্ব দিয়েছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।কিছুদিন পর রক্ষীবাহিনী যুক্ত হয়েছিলো এই বিরোধী মতের নির্মূলে। তৎকালীন সরকারের সাফ জবাব “এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ”।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোন বিরোধী দল নেই। ভিন্ন মতামতের রাজনৈতিক দল নেই।সব দল ভারতে গিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নো অবজেকশান সার্টিফিকেট নিচ্ছে যাতে তাদের রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় বজায় থাকে। এলীগ বিলীগ সি লীগ ডিলীগ সবলীগই ভারতের অধীনে বাংলাদেশের রাজনীতি চলার নীতি মেনে নিয়েই হাকডাক দিলেন। তা কে না দেখেন,জানেন? ভারতের সংস্থাটিই হচ্ছে বিশ্বনেতা সংস্থার আঞ্চলিক এজেন্টদের একটি। তাই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসকে উপরে ইয়ার্কি করলেও তলে তলে পা চাটার এই ছদ্মবেশই হচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশের চালচিত্র।

সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনের দিন আসছে ঘনিয়ে। বড় রাজনৈতিক দল দুটোই তাদের দলের বাহির থেকে অন্যান্য পেশা ও জীবিকার লোকদেরকে ভাড়া করার টেন্ডারবাজির জোর দৌঁড় করছে সমানতালে। নমিনেশন দিয়ে নিজের পক্ষে নির্বাচনে বিজয় দেখানোর হাস্যকর প্রতিযোগীতায়। দলের নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে এই ভাড়ার অবস্থা কেনো?খেলোয়াড়, সিনেমার নায়ক নায়িকা, গায়ক গায়িকাদের কাছে দলীয় নেতাদের ধর্ণা দেবার খবর কেনো পত্রিকার পাতা জুড়ে?
দলীয় লোকরা ভোট চাইতে মানুষের কাছে যাবার মুরোদ নেই বা তাদেরকে মানুষের কাছে পাঠানোর সাহস হারিয়েছেন দলীয় প্রধানরা। এই পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূত যা বলেছেন, তা খাঁটি কথা এবং অকাট্য। তবে তিনি কম বলেছেন।
(লেখক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধা)।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

মার্কিন দূতাবাস এবং বাংলাদেশী রাজনীতি

প্রকাশের সময় : ০৪:২০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুলাই ২০১৮

আবু জাফর মাহমুদ: বিদায় রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট! ধন্যবাদ আপনাকে হে বন্ধু, আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে আমেরিকার পক্ষে যথার্থ দায়িত্ব পালন করার মেয়াদ শেষে নয়া দায়িত্বের জন্যে নিজেকে প্রস্তুত করার জন্যে। নয়া রাষ্ট্রদূতকে অগ্রিম শুভেচ্ছা বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানার আগে পূর্ববর্তী কর্মস্থল থেকে বিদায় নিয়ে নয়া কর্মস্থলের লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার পদক্ষেপের জন্যে। বাংলাদেশ আমেরিকার সম্পর্কে অগ্রগতির উদ্যোগগুলোকে স্বাগতম!
বিশ্বনেতা আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে আরেক রকম কথা চালু হয়েছে গত ক’দিন যাবত। কথা উঠে এসেছে সাম্প্রতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষন সম্পর্কিত রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মাসিক কোটি টাকা বেতনভোগী উপদেষ্টা ও একমাত্র পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়ের মন্তব্য মিডিয়ায় আসার পর থেকে।বিশ্লেষকরা বলাবলি করছেন, আমেরিকার দয়ায় অসীম সুবিধাভোগী পরিবারটি অকৃতজ্ঞের ভাষায় আমেরিকার দূতাবাসকে দোষারোপ করে নিজেদের এবং বাংলাদেশের সামনে পরীক্ষা কঠিন করে দিলোনাতো? কূটনৈতিক আচরণের যোগ্য বাক্য দিয়েও নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা হতে পারতো।
বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস “বিএনপির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে” বলে ফেসবুকে মন্তব্য সজিব জয়ের। তার এই মন্তব্য সংবাদ মাধ্যমে প্রচুর ছাপা হয়েছে। তিনি লিখেছেন, “সম্প্রতি গাজীপুরে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির মন্তব্যগুলোই তারা পুনরাবৃত্তি করছে এবং অনিয়মের কথা বলছে। অথচ নির্বাচনে বিএনপির সহিংসতা চালানোর চেষ্টা নিয়ে কিছুই বলছেনা”।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির কথা মনে করিয়ে দিয়ে জয় লিখেছেন,“যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের নীতি হচ্ছে,অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো। তাই বক্তব্যটি বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসেরই বলে ধরে নেয়া যায়। বোঝাই যাচ্ছে, দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের বিএনপির বন্ধুদের সাথে খুব বেশী সময় কাটাচ্ছেন আজকাল”।
এ নির্বাচনকে ঘিরে সহিংসতা সৃষ্টির ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মিজানুর রহমানকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।মিজান প্রসংগে জয় লিখেছেন, “বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিজানুর রহমানের ফোনালাপ থেকে আমরা জানতে পারি,তার দল সহিংসতা তৈরী করার মাধ্যমে নির্বাচনটিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিলো।যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের বক্তব্যে এ বিষয়টিকে কিন্তু এড়িয়ে গেছে”।

জয় বলেন, নির্বাচনে ৪২৫টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৯টি অর্থাৎ ২.১ শতাংশ কেন্দ্রে অনিয়ম হয়েছিল। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন তার দায়িত্ব পালন করার মাধ্যমে কেন্দ্রগুলোর ভোটগ্রহন বাতিল ঘোষণা করে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র বলেন, আমাদের নতুন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বিএনপির প্রার্থী হাসান থেকে ২ লক্ষের বেশি ভোট, অর্থাৎ দ্বিগুন ভোট, পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। সকল নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা একমত যে অনিয়মের অভিযোগ যা এসেছে তা কোনোভাবেই নির্বাচনের ফলে প্রভাব ফেলতে পারেনি।
সম্প্রতি খুলনা এবং গাজীপুরের পৌর নির্বাচনে সরকার ও রাষ্ট্রীয় পক্ষপাতিত্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় ব্যাপক সমালোচনা ও ক্ষোভ বুদ বুদ করছে সবার জানা কথা। এভাবে জোর জবরদস্তিমূলক গণতন্ত্রের বাংলাদেশী মডেল অনেকে সয়ে গেছেন, অনেকের অসহ্য দেখা যাচ্ছে। এব্যাপারে পক্ষে বিপক্ষের কারো কারো মুখ চেপে রাখা গেছে রাষ্ট্রীয় শক্তির বলদর্পী তৎপরতায়।কূটনীতিকদের মুখের সামনে এই শক্তি আর কুলিয়ে উঠতে পারেনি। পারার সম্ভাবনাও নেই। ফলে কূটনীতিক পাড়ায় ক্ষমতাসীন দম্ভ ও রাজনৈতিক রসিকতা নিয়ে গুঞ্জন সীমা অশেষ।
আমেরিকার রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট তার মেয়াদ শেষ করে অপর দায়িত্ব নিতে চলেছেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হবেন নয়া এক সিনিয়র কূটনীতিক।শীঘ্রই তার বাংলাদেশে যোগ দেবার এবং মার্শার বিদায়ের আগে আমেরিকার স্বাধীনতা দিবস ৪ঠা জুলাই উদযাপন এবং বিদায় সম্বর্ধনার হলো আয়োজন। দূতাবাসের আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রতি তার ঘনিষ্ঠ আবেগের কথা বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি ফিরে আসবেন বাংলাদেশে।
বলেছেন, আগামীতে এসে পুরোপুরি এক ভিন্ন বাংলাদেশ তিনি দেখতে চান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এতে প্রধান অতিথি ছিলেন। এতে বিএনপির কাউকে নয়,সরকারের প্রতিই সম্মান দেখানো হয়েছে। যাতে কূটনৈতিক রীতি নীতির ঐতিহ্যগত চেহারায় দেখা গেছে। যা যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সম্পর্কিত মন্তব্যকে সামান্যও যৌক্তিকতা দেয়না।
এই অনুষ্ঠানে সিনিয়র কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত নিজ দেশ আমেরিকা এবং বাংলাদেশের কথা প্রসঙ্গে টেনে বলেন,আমাদের উভয় দেশের সংবিধানে এই ধারণা সন্নিবেশিত আছে যে, “সব মানুষ জন্মগতভাবে সমান। তাদের চিন্তা,উদ্ভাবন আর নিজেদের প্রকাশ করার সুযোগ ও স্বাধীনতা দেওয়া হলে অপার সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে”।
তিনি আরো বলেন,“এবছরের শেষ ভাগে উভয় দেশেই এসব মূল্যবোধের একটা কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনের শেষমূহুর্তে এসে আমি বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণকে সেই আহবানটিই জানাতে চাই,যা আমি বলতে চাই আমার নিজের দেশের সরকার এবং জনগণকেও। সেটি হচ্ছে আমাদের সমর্থন করতে হবে অহিংস,অবাধ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন,যা কিনা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন”।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে আমার কষ্ট হবে। তবে আমি ইতিমধ্যেই এখানে আবার আসার পরিকল্পনা করে ফেলেছি। আবার যখন আসব তখন একেবারেই ভিন্ন একটি বাংলাদেশ দেখার প্রত্যাশা করি আমি। আরো অগ্রসর, আরো উন্নত এক বাংলাদেশ। তবে সে বাংলাদেশে থাকবে স্বাধীনতার জন্য সেই একই সংকল্প ও আবেগ, যা ১৯৭১ সাল থেকে এ দেশের মানুষের মনে জাগরূক।’
নিজের মেয়াদ শেষে যখন পুনরায় বাংলাদেশ সফরে আসবেন তখন নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ দেখতে চান বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। ৩ অক্টোবর মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে রাজধানী ঢাকায় আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট এই ইচ্ছে প্রকাশ করেন। বার্নিকাট বলেন, ‘বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে আমার খারাপ লাগবে, তবে আমি জানি যে, ফিরে আসব। যখন আমি ফিরে আসব, নাটকীয়ভাবে বদলে যাওয়া ভিন্ন বাংলাদেশ দেখার আশা রাখি।’
বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে মার্শা বার্নিকাটের এটাই শেষ স্বাধীনতা দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান। তিনি বলেন, ‘জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হয় এমন অহিংস, অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনে তাদের সমর্থন দিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।’
বার্নিকাট আরও বলেন, ‘বাংলাদেশী জনগণের প্রজ্ঞা এবং সংকল্প একটি স্বাধীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশের সৃষ্টি করেছে। ৪৭ বছর পর সেই প্রজ্ঞা এবং সংকল্প মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পাঠিয়েছে। এসব সংকল্পবদ্ধ আগামী প্রজন্মের জন্য সোনার বাংলার স্বপ্ন পূরণ করবে।’
এদিকে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার পত্রিকায় কথা বলতে গিয়ে স্বীকার করেছেন,খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই,অনেক ভুল-ত্রুটি হয়েছে। যে সত্যতার প্রতিফলন হয়েছে আমেরিকার রাষ্ট্রদূতের কথায়।
বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অনেকটা বিএনপির মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। সোমবার রাতে জয় তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ মন্তব্য করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস অনেকটা বিএনপি’র মুখপাত্রে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি গাজীপুরে অনুষ্ঠিত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র মন্তব্যগুলোই তারা পুনরাবৃত্তি করছে এবং অনিয়মের কথা বলছে অথচ নির্বাচনে বিএনপি’র সহিংসতা চালানোর চেষ্টা নিয়ে কিছুই বলছে না।
জয় তার স্ট্যাটাসে আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস তাদের বক্তব্যে এই বিষয়টিকে কিন্তু এড়িয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের নীতি হচ্ছে অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলানো। তাই বক্তব্যটি বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসেরই বলে ধরে নেয়া যায়। বুঝাই যা যাচ্ছে দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ তাদের বিএনপির বন্ধুদের সাথে খুব বেশি সময় কাটাচ্ছেন আজকাল”।

সজিব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র পুত্র সন্তান এবং আমেরিকান নাগরিক। তার স্ত্রীও একজন আমেরিকান।নানা শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের একসময়ের একক নেতা ছিলেন।তিনি ক্ষমতায় থাকাকালের একটি বিখ্যাত শ্লোগান যা সরকার এবং দলের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী গর্জে উঠতো, “এক নেতা,এক দেশ-বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ”।
বঙ্গবন্ধু টাইটেল তাকে দেয়া হয়েছিলো অনুগত ছাত্র যুব নেতাদের পক্ষ থেকে। এই নামে পরিচিত করতে আওয়ামীলীগের কোন ভূমিকা ছিলোনা। ষাটের দশকে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ছিলো কল্পনাতীত দূর্বল। যখন সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগের উপর নির্ভর করা এবং ছাত্রলীগের সাংগঠনিক শক্তি ছাড়া সভা অনুষ্ঠান করা ছিলো অবান্তর। ছাত্রলীগই ছিলো নেতা মুজিবের একমাত্র ভরসা। সে সময় যুবলীগ বা শ্রমিকলীগ কৃষকলীগ ছিলোনা। বাংলাদেশ স্বাধীন করার পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসে রাষ্ট্রগঠনের দায়িত্ব দেয়া হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ যুবলীগ সহ অপরাপর অঙ্গ সংগঠন গড়ে।
স্বাধীনতার আগে মুজিবের সবচেয়ে কাছে থেকে সাংগঠনিক শক্তি ও আনুগত্যে ছাত্রলীগের যে নেতৃত্ব তাকে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার ষড়যন্ত্রে প্রভাবিত করেছিলো। এই ষড়যন্ত্রকারীরাই জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ গড়ে মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা দেয় স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সনে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সম্মেলনে এবং সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের শ্লোগান দিয়ে “এক নেতার এক দেশ” রাজনীতিকে চ্যালেঞ্জ করে একই বছর ৩১ অক্টোবর।
আহবান জানায় স্বাধীনতাযুদ্ধের সমর্থক রাজনীতিবিদ এবং স্বাধীনতা যোদ্ধাদের নিয়ে জাতীয় সরকার গঠনের। ভিন্নমতের অপরাধে স্বাধীনতাযোদ্ধাদের উপর শুরু হলো সামরিক বাহিনী ও পুলিশ দিয়েনিপীড়ন ও হত্যা। যে পুলিশ একদিন আগেও পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর স্থানীয় দালালী নৃশংসতায় নেতৃত্ব দিয়েছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে।কিছুদিন পর রক্ষীবাহিনী যুক্ত হয়েছিলো এই বিরোধী মতের নির্মূলে। তৎকালীন সরকারের সাফ জবাব “এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ”।
বর্তমানে বাংলাদেশের বাস্তবতায় কোন বিরোধী দল নেই। ভিন্ন মতামতের রাজনৈতিক দল নেই।সব দল ভারতে গিয়ে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নো অবজেকশান সার্টিফিকেট নিচ্ছে যাতে তাদের রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় বজায় থাকে। এলীগ বিলীগ সি লীগ ডিলীগ সবলীগই ভারতের অধীনে বাংলাদেশের রাজনীতি চলার নীতি মেনে নিয়েই হাকডাক দিলেন। তা কে না দেখেন,জানেন? ভারতের সংস্থাটিই হচ্ছে বিশ্বনেতা সংস্থার আঞ্চলিক এজেন্টদের একটি। তাই যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসকে উপরে ইয়ার্কি করলেও তলে তলে পা চাটার এই ছদ্মবেশই হচ্ছে বর্তমান বাংলাদেশের চালচিত্র।

সম্ভাব্য জাতীয় নির্বাচনের দিন আসছে ঘনিয়ে। বড় রাজনৈতিক দল দুটোই তাদের দলের বাহির থেকে অন্যান্য পেশা ও জীবিকার লোকদেরকে ভাড়া করার টেন্ডারবাজির জোর দৌঁড় করছে সমানতালে। নমিনেশন দিয়ে নিজের পক্ষে নির্বাচনে বিজয় দেখানোর হাস্যকর প্রতিযোগীতায়। দলের নেতা কর্মীদের বাদ দিয়ে এই ভাড়ার অবস্থা কেনো?খেলোয়াড়, সিনেমার নায়ক নায়িকা, গায়ক গায়িকাদের কাছে দলীয় নেতাদের ধর্ণা দেবার খবর কেনো পত্রিকার পাতা জুড়ে?
দলীয় লোকরা ভোট চাইতে মানুষের কাছে যাবার মুরোদ নেই বা তাদেরকে মানুষের কাছে পাঠানোর সাহস হারিয়েছেন দলীয় প্রধানরা। এই পরিস্থিতিই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এবং রাষ্ট্রদূত যা বলেছেন, তা খাঁটি কথা এবং অকাট্য। তবে তিনি কম বলেছেন।
(লেখক আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতাযোদ্ধা)।