নিউইয়র্ক ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘ইসলাম-বনাম সেক্যুলার বাংলাদেশ’: ‘মুক্তমত বনাম গুপ্ত হত্যা’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৬
  • / ১০৬১ বার পঠিত

শিবলী চৌধুরী কায়েস: নাকের সার্জারি শেষে অফিস শুরু করি ক’দিন হলে মাত্র। নিত্যান্তই একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে চোখ রাখতে হয়। এটা রুটিন ক্লাসের মতোই বলা যায়। যে দেশে জন্মেছি তাকে নিয়ে তো স্বপ্ন দেখেছি/দেখতাম/ আগামীতে ভাগ্যে কী আছে জানি না। তবে, রাতগুলো যে দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে; সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। হয়তো অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে আমার কী হলো? ঘুমের সাথে স্বপ্ন দেখার সম্পর্কই বা কী? ইত্যাদি ইত্যাদি।
হুম। নানা ধরণের হত্যাকান্ড’র সাথে এখন হিজাবী রাজনীতি, ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার সংষ্কৃতি। যে সব ঘটনা অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে পুরো দেশ ও জাতিকে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এ ঘটনাগুলোকে কারো কারো ব্যক্তিগত আক্রশের কাজেও ব্যবহার হচ্ছে না তো! সেটা কী আমরা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছি? এমন নানা প্রশ্ন মনে ভেসে উঠছে। তাই এই লেখা। হয়তো অনেক দীর্ঘ; তবুও মনের কথা গুলো বলার ক্ষুদ্র প্রয়াস কেবল।
এক : যেহেতু দেশের বাইরে আছি সমস্যাটা সেখানে। মূলধারর গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টতার পাশাপাশি জাতিসংঘ কিংবা স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টার। এসবে সাথে তো কালে ভদ্রে হলেও দেখা হয়, কথা হয়। যা সম্পূর্ণ পেশাগত কারণে।
দুই : কেনই বা বলছি এসব কথা? আসলে ঘুমটা হারাম হতে শুরু করেছে সেই শাহাবাগ আন্দোলনের পর থেকে। মাঝখানে খানিকটা স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে মুক্তমণা ব্লগার হত্যাকান্ড, নির্বাচনী সহিংসতা, ‘অপহরণ-হত্যা কিংবা গুম-খুন’। সাদা-পোশাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফয়ার, চোখ তোলা লাশ ফেরত! এসবের নামইতো বর্তমান বাংলাদেশ। বিদেশী কোন সহকর্মীর কাছে কথাটা শুনলে ভালো লাগবেই বা কী করে? কিন্তু বাস্তবতাকে তো আর অস্বীকার করা সম্ভব নয়।
তিন : সম্প্রতি একটা পরিসংখ্যান দেখলাম গেল তিন মাসে দেড় হাজার (১৫শ) লাশ পেলো স্বাধীন সোনার বাংলা। কালের কণ্ঠে তো দেখলাম সবশেষ ২৪ ঘন্টায় ২১ লাশ। বাহ কী চমৎকার একটি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের আইএস নামের বিষাক্ত ছোবল ও অব্যাহত বোমা হামলার ঘটনায় হয়তো প্রাণ যাচ্ছে না বাংলাদেশে। কিন্তু মুক্তমণা ব্লগার হত্যা, শিক্ষক খুন, কিংবা পুলিশী ক্রসফায়ার…..এসবের এক নতুন নাম বাংলাদেশ।
চার : প্রশ্ন হচ্ছে! সাদা-পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে কাদের মারছে বিরোধী রাজনীতিক নেতা-কর্মীদের। সেটার বিচার কী কোন পরিবার পেয়েছে? আর ব্যক্তিগত কিংবা জাতিগত ও তথা ধর্মের নাম করে ব্লগার/মুক্তমনা হত্যাকান্ড এসবেরও কী বিচার হচ্ছে? না কোন ঘটনারই সুনির্দিষ্ট বিচার পায়নি ভুক্তভোগি পরিবার।
পাঁচ : আগের কথা বাদই দিলাম, রাজিব, অভিজিৎ, অনন্ত, দ্বীপন কিংবা নাজিম’সহ সবশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম ও ‘জুলহাজ-তনয়’ হত্যাকান্ড আরো প্রশ্ন জেগে উঠছে। তথাকথিত জঙ্গি ‘জু জু’র ভয়, একটি ঘটনার পর দ্বায় স্বীকারের সংস্কৃতি। যদিও সরকার সংশ্লিষ্ট’র দাবি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের মুখে শুনি সব ঘটনার পেছনে জামায়াত-বিএনপি ষড়যন্ত্র; তখন এটার কোন জবাব খুঁজে পাই না। কেবল শুনি তদন্ত চলছে। এর যৌক্তিকতা ঘুরে ফিরে ‘বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে’র মতো।
ছয় : বলছিলাম যেই শাহবাগ আন্দোলন, পুরো দেশ ও জাতিকে দ্বিধা-বিভক্তির দিকে ঠেলে দিলো; বর্তমান সেই দেশের চেতনার নতুন সরকারের (ইমরান এইচ সরকার) কথা। তিনিও এখন বলছেন তার জীবনও নিরাপদ নয়; যে কোন মুহুর্তেই খুন হতে পারেন। কিন্তু কেন? এমনটি তো হওয়ার কথা ছিলো না। তার মানে কী দাঁড়ালো? দেশের ভবিষ্যৎ তাহলে কী আভাস দিচ্ছে।
সাত : বর্তমানে জুলহাজ হত্যাকান্ড ইস্যুতে পুরো বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামে বাংলাদেশ; এর আগে ছিল বাংলাদেশী-আমেরিকান অভিজিৎ হতাকান্ডটি। কারণ এদের দু’জনের মধ্যে একজন ছিলেন সমকামি অধিকার আন্দোলন কর্মী ও ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা। আর অপরজন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ফলে এ দু’টো হত্যাকন্ড মূলধারার গণমাধ্যম এবং আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। অভিজিৎ হত্যার তদন্তে এফবিআই’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর পর্যন্তই শেষ। সবশেষ জুলহাজ হত্যার নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়ে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট’র তোড়জোড়; আর টেলিফোনে ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেট জন কেরির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার) ফোন। কিন্তু প্রকৃত খুনের কারণ কিংবা এর পেছনের কারিগরদের ঘটনা চেপে যাবে আরোকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে। যেমনটি ঘটেছিলো ‘তনু হত্যার’ বিচার আন্দোলন ও ‘সাংবাদিক শফিক রেহমান’র আটক ইস্যুটি।
নয় : কথা হচ্ছে সেক্যুলার নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোয়ারে ভাসা কিছু শিক্ষিত মানুষরূপি অমানুষের আচরণ। যেমন সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান। তিনি কী না একজন হিজাবী শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে লাঞ্চিত করে বের করে দিলেন! আশ্চার্য এতে করে ওই অধ্যাপক কী প্রমাণ করতে চাইলেন। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ‘ভাইরালে’ রূপ নিয়েছে। হিজাবী ওই শিক্ষার্থীর আতœপক্ষ সমর্থন ছিল ঢাবি’র কোন নির্ধারিত ড্রেস কোড নেই। সেটা সমর্থনও করলেন তার সতীর্থরা। বিধি বাম তাদের মধ্যে অনেকে শিক্ষার্থীও অপমানিত হলেন।
দশ : আমার প্রশ্ন এবং খুব ভয়ও লাগছে এই ঘটনা ইস্যুটি। প্রশ্ন হচ্ছে ওই অধ্যাপক আজিজ এমনটি কেন করলেন, যা ঢাবির কোন নীতিমালাতেই নেই; কিংবা দেশের সাংবিধানিক ধরাতেও নেই। জবাবও হয়তো তার কাছে রয়েছে। কিন্তু ‘ভয় হচ্ছে; ভয়ানক ভয়’। যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট কিংবা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতের অমিল/আধিপত্যের লড়াই’সহ নানা বিরোধ এখন বিদ্যমান। কে জানি; মানুষরূপি জ্ঞানপাপী এই শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান’র পূর্ব কোন শত্রু এখন নতুন করে সুযোগ খুঁজছেন! বিষয়টা উড়িয়ে দেয়া যায় না। অসাধু কোন ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর সুযোগ নেয়ার আগে এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিচারের মুখোমুখি করা কিংবা জবাবদিহিতার মধ্যে আনা সময়ের দাবি। অন্যথায় একটা সময় তার শত্রুদের বলি হতে পারেন তিনি। তখন খুনের মোটিভ চলে যেতে পারে তথাকথিত দ্বায় স্বীকারকারি আইএস ‘জু-জু’র কোর্টে।
এগার : ভাবছি; একজনকে খুন করে আল্লাহু আকবার কিংবা হরে কৃষ্ণ হরে রাম বলে চিৎকার করলেই কী খুনিদের অস্তিত্ব তথা টার্গেট নির্ধারণ হয়ে যায়? এটা যেমন চিরন্তন সত্য নয়, ঠিক তেমনি দেশের এসব ঘটনাকে ছোট দেখারও কোন সুযোগ নেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশ ও জাতিকে ভয়ঙ্কর তথা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে যা থেকে উত্তরণ খুবই কঠিন।
বার : এ পরিস্থিতি তথাকথিত ইসলাম বিরোধী মনোভাব বন্ধের প্রক্রিয়া কবেল সরকারের মুখে নয়; ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এটা বাস্তবে পরিণত করতে হবে। যেখানে পুরো বিশ্বে মুসলমানদের এখন সম্মানের চোখে দেখা হচ্ছে; সেখানে বাংলাদেশে কেন হিজাব বিরোধী কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের কারণে লাঞ্চনা-বঞ্চনার শিকার হতে হবে?
তের: মাত্র কয়েক মাস আগের ঘটনা। যা সবার জানা। প্যারিসের পর ইউরোপের ব্রাসেলস হামলা; এর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানবার্নাদিনোর হত্যাকান্ড। এত কিছুর পরও অমুসলিম দেশে মুসলামনদের বিষয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহারে বদ্ধপরিকর বিশ্ব নেতারা। যার অনন্য উদহারণ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিশ্ব রাজধানী খ্যাত ও অভিবাসী বান্ধব নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর, সিটি মেয়র’সহ ইলেকটেড অফিসিয়ালরা। ফলে নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ তথা এনওয়াইপিডি’সহ বিভিন্ন পেশায় হিজাব পরে খুব স্বাচ্ছন্দে চাকুরি করছেন অনেক মুসলিম। এরকম কিছু তথ্য নি¤œরূপ:
চৌদ্দ : এই যে গেল কিছুদিন আগে ক্যারলিন ওয়াকার ডালিও নিউইয়র্ক সিটির নতুন জাজ নির্বাচিত। তিনি হলেন প্রথম হিজাবী মুসলিম মহিলা। ইতিপূর্বে হিজাব পরিহিতা কোন মুসলিম মহিলা এই পদে সমাসীন হননি। যিনি বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীন মিউন্যাসিপাল ড্রিস্টিক্ট কোর্ট তথা সিভিল কোর্টের জাজ নির্বাচিত হয়েছেন। আফ্রিকান-আমেরিকান এই মুসলিম হিজাবী বিচারপতিকে নিয়ে গর্ভ করছেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশী’সহ মুসলিম অধিবাসীরা।
পনের : হোয়াইট হাউজ। একসময়ে সাদা তথা হোয়াইট ‘সুপ্রিমেসি’র ফসল এই নাম। যদিও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে সেই প্রথা ধ্বংস করে দিলেন ওবামা। যিনি এখন বুঝতে পেরেছেন মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে পূঁজিবাদিদের দখল তথা মুসলিম বিদ্বেষ মনোভাব উল্টো রথে চলতে শুরু করেছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মসুলিম বিরোধে মনোভাব নীতির বিপক্ষে অবস্থান ওবামা প্রশাসনের। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন মসজিদ সফরও করেছেন তিনি। এছাড়াও ‘রুমানা আহমেদ’ নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান হিজাবী তরুণীকে ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ‘বেন রোডস’র সহকারী হিসেবে নিয়োগও দিয়েছেন। হোয়াইট হাউজে রুমানা নিজেকে ‘হিজাবি’ বলতে পছন্দ করেন। হোয়াইট হাউজে কর্মরত ছয় মুসলিম নারীকে নিয়ে বিশেষ একটি সিরিজও প্রচার করছে সৌদি আরবের টিভি স্টেশন আল-আরাবিয়া ইংলিশ। তাদেরই একজন ছিলেন এই হিজাবী বাংলাদেশী-আমেরিকান রুমানা।
ষোল : বিশ্বের কাছে রেসিস্ট কান্ট্রি নামে খ্যাত অস্ট্রেলিয়া। খুব বেশী দিন নয়; এই তো চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার। দেশটির ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রথমবারের মতো এক মুসলিম নারীকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ‘আরিফা মাসউদ’ নামে এই নারীই হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায় নিয়োগ্রাপ্ত প্রথম মুসলিম ওমেন ম্যাজিস্ট্রেট। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বের ক্ষদ্রতম মহাদেশ হলেও ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ। রাজধানীর ক্যানবেরা আর বৃহত্তম শহরের নাম সিডনী। যে দেশটি ৬টি অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত। রাজ্যগুলো হলো নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ অষ্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, ভিক্টোরিয়া ও পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়া। সেখানে সংখ্যালঘু তথা আদিবাসী ও মুসলমি কমিউনিটির কাঝে অতি জনপ্রিয় এই হিজাবী আইনজীবী।
সতের : সবশেষ কানাডার কথায় যদি আসি। উদারপন্থি নেতা ও কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেয়ারে ট্রুডোর সুযোগ্য পুত্র সবচেয়ে কম বয়সি কানাডিয়ান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রডো বিশ্ববাসির কাছে এক আদর্শের নাম বলা যেতে পারে। নির্বাচিত হয়েই সিরিয়ার মুসলিম শরনার্থী গ্রহণের মতো সাহসি পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি তার নানা উদ্যোগ এখন কানাডীয়ান নতুন প্রজন্মের মুসলিমদের কাছে গৌরবের। একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে কানাডার মুসলমানরা কানাডীয় হিসেবে আগের চেয়ে বর্তমানে বেশি গৌরবান্বিত। দেশটির মুসলমান নারীদের ৪৮ শতাংশ হিজাব বা মস্তকাবরণী পরে থাকেন। বর্তমানে এই হারও গেল ১০ বছরে বেড়েছে ১০ শতাংশ।
পরিশেষে এই বলতে চাই; আফসোস এবং পরিতাপের বিষয় হচ্ছে; ৯০ ভাগ মুসলামের দেশে হিজাব নিয়ে যা হচ্ছে কিংবা চলছে তার শেষ কোথায় গিয়ে ঠেঁকে! সেটার ভয়ে এখনো আঁতকে উঠি। যদিও হিজাবী অনেকের হিজাব ব্যবহারের ধরণ তথা ফ্যাশন নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম তথা উদারপন্থি অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। কথায় আছে ‘তব্ওু ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। কারো বিশ্বাস ও ধর্মকে কটাক্ষ করা যেমন ইসলাম দেয়নি; তেমনি ইসলামকে খাটো করে বড় হওয়ার ও কোন সুযোগ নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যেখানে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা কিংবা কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণের ক্ষমতায় নিশ্চয়ই মহান রাবুল আল-আমিন আমাদের দেয় নাই। বিষয়টি হয়তো আমরা সবাই জানি; কিন্তু মানি না। সবার মাঝে সেই তৌফিক দান করুক। আমিন……………।
লেখক: সাংবাদিক, নিউইয়র্ক

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

‘ইসলাম-বনাম সেক্যুলার বাংলাদেশ’: ‘মুক্তমত বনাম গুপ্ত হত্যা’

প্রকাশের সময় : ১২:১১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

শিবলী চৌধুরী কায়েস: নাকের সার্জারি শেষে অফিস শুরু করি ক’দিন হলে মাত্র। নিত্যান্তই একজন সংবাদ কর্মী হিসেবে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে চোখ রাখতে হয়। এটা রুটিন ক্লাসের মতোই বলা যায়। যে দেশে জন্মেছি তাকে নিয়ে তো স্বপ্ন দেখেছি/দেখতাম/ আগামীতে ভাগ্যে কী আছে জানি না। তবে, রাতগুলো যে দিনের পর দিন দীর্ঘ হচ্ছে; সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। হয়তো অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে আমার কী হলো? ঘুমের সাথে স্বপ্ন দেখার সম্পর্কই বা কী? ইত্যাদি ইত্যাদি।
হুম। নানা ধরণের হত্যাকান্ড’র সাথে এখন হিজাবী রাজনীতি, ক্লাস থেকে বের করে দেয়ার সংষ্কৃতি। যে সব ঘটনা অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে পুরো দেশ ও জাতিকে। ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এ ঘটনাগুলোকে কারো কারো ব্যক্তিগত আক্রশের কাজেও ব্যবহার হচ্ছে না তো! সেটা কী আমরা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারছি? এমন নানা প্রশ্ন মনে ভেসে উঠছে। তাই এই লেখা। হয়তো অনেক দীর্ঘ; তবুও মনের কথা গুলো বলার ক্ষুদ্র প্রয়াস কেবল।
এক : যেহেতু দেশের বাইরে আছি সমস্যাটা সেখানে। মূলধারর গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টতার পাশাপাশি জাতিসংঘ কিংবা স্টেট ডিপার্টমেন্টের ফরেন প্রেস সেন্টার। এসবে সাথে তো কালে ভদ্রে হলেও দেখা হয়, কথা হয়। যা সম্পূর্ণ পেশাগত কারণে।
দুই : কেনই বা বলছি এসব কথা? আসলে ঘুমটা হারাম হতে শুরু করেছে সেই শাহাবাগ আন্দোলনের পর থেকে। মাঝখানে খানিকটা স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু হঠাৎ করে মুক্তমণা ব্লগার হত্যাকান্ড, নির্বাচনী সহিংসতা, ‘অপহরণ-হত্যা কিংবা গুম-খুন’। সাদা-পোশাকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে ক্রসফয়ার, চোখ তোলা লাশ ফেরত! এসবের নামইতো বর্তমান বাংলাদেশ। বিদেশী কোন সহকর্মীর কাছে কথাটা শুনলে ভালো লাগবেই বা কী করে? কিন্তু বাস্তবতাকে তো আর অস্বীকার করা সম্ভব নয়।
তিন : সম্প্রতি একটা পরিসংখ্যান দেখলাম গেল তিন মাসে দেড় হাজার (১৫শ) লাশ পেলো স্বাধীন সোনার বাংলা। কালের কণ্ঠে তো দেখলাম সবশেষ ২৪ ঘন্টায় ২১ লাশ। বাহ কী চমৎকার একটি দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের আইএস নামের বিষাক্ত ছোবল ও অব্যাহত বোমা হামলার ঘটনায় হয়তো প্রাণ যাচ্ছে না বাংলাদেশে। কিন্তু মুক্তমণা ব্লগার হত্যা, শিক্ষক খুন, কিংবা পুলিশী ক্রসফায়ার…..এসবের এক নতুন নাম বাংলাদেশ।
চার : প্রশ্ন হচ্ছে! সাদা-পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়ে কাদের মারছে বিরোধী রাজনীতিক নেতা-কর্মীদের। সেটার বিচার কী কোন পরিবার পেয়েছে? আর ব্যক্তিগত কিংবা জাতিগত ও তথা ধর্মের নাম করে ব্লগার/মুক্তমনা হত্যাকান্ড এসবেরও কী বিচার হচ্ছে? না কোন ঘটনারই সুনির্দিষ্ট বিচার পায়নি ভুক্তভোগি পরিবার।
পাঁচ : আগের কথা বাদই দিলাম, রাজিব, অভিজিৎ, অনন্ত, দ্বীপন কিংবা নাজিম’সহ সবশেষ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেজাউল করিম ও ‘জুলহাজ-তনয়’ হত্যাকান্ড আরো প্রশ্ন জেগে উঠছে। তথাকথিত জঙ্গি ‘জু জু’র ভয়, একটি ঘটনার পর দ্বায় স্বীকারের সংস্কৃতি। যদিও সরকার সংশ্লিষ্ট’র দাবি বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের মুখে শুনি সব ঘটনার পেছনে জামায়াত-বিএনপি ষড়যন্ত্র; তখন এটার কোন জবাব খুঁজে পাই না। কেবল শুনি তদন্ত চলছে। এর যৌক্তিকতা ঘুরে ফিরে ‘বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে’র মতো।
ছয় : বলছিলাম যেই শাহবাগ আন্দোলন, পুরো দেশ ও জাতিকে দ্বিধা-বিভক্তির দিকে ঠেলে দিলো; বর্তমান সেই দেশের চেতনার নতুন সরকারের (ইমরান এইচ সরকার) কথা। তিনিও এখন বলছেন তার জীবনও নিরাপদ নয়; যে কোন মুহুর্তেই খুন হতে পারেন। কিন্তু কেন? এমনটি তো হওয়ার কথা ছিলো না। তার মানে কী দাঁড়ালো? দেশের ভবিষ্যৎ তাহলে কী আভাস দিচ্ছে।
সাত : বর্তমানে জুলহাজ হত্যাকান্ড ইস্যুতে পুরো বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামে বাংলাদেশ; এর আগে ছিল বাংলাদেশী-আমেরিকান অভিজিৎ হতাকান্ডটি। কারণ এদের দু’জনের মধ্যে একজন ছিলেন সমকামি অধিকার আন্দোলন কর্মী ও ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা। আর অপরজন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ফলে এ দু’টো হত্যাকন্ড মূলধারার গণমাধ্যম এবং আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। অভিজিৎ হত্যার তদন্তে এফবিআই’র একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর পর্যন্তই শেষ। সবশেষ জুলহাজ হত্যার নিন্দা ও উদ্বেগ জানিয়ে ঢাকায় রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট’র তোড়জোড়; আর টেলিফোনে ইউএস সেক্রেটারি অব স্টেট জন কেরির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে (২৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার) ফোন। কিন্তু প্রকৃত খুনের কারণ কিংবা এর পেছনের কারিগরদের ঘটনা চেপে যাবে আরোকটি ঘটনার মধ্য দিয়ে। যেমনটি ঘটেছিলো ‘তনু হত্যার’ বিচার আন্দোলন ও ‘সাংবাদিক শফিক রেহমান’র আটক ইস্যুটি।
নয় : কথা হচ্ছে সেক্যুলার নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জোয়ারে ভাসা কিছু শিক্ষিত মানুষরূপি অমানুষের আচরণ। যেমন সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান। তিনি কী না একজন হিজাবী শিক্ষার্থীকে ক্লাস থেকে লাঞ্চিত করে বের করে দিলেন! আশ্চার্য এতে করে ওই অধ্যাপক কী প্রমাণ করতে চাইলেন। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ ‘ভাইরালে’ রূপ নিয়েছে। হিজাবী ওই শিক্ষার্থীর আতœপক্ষ সমর্থন ছিল ঢাবি’র কোন নির্ধারিত ড্রেস কোড নেই। সেটা সমর্থনও করলেন তার সতীর্থরা। বিধি বাম তাদের মধ্যে অনেকে শিক্ষার্থীও অপমানিত হলেন।
দশ : আমার প্রশ্ন এবং খুব ভয়ও লাগছে এই ঘটনা ইস্যুটি। প্রশ্ন হচ্ছে ওই অধ্যাপক আজিজ এমনটি কেন করলেন, যা ঢাবির কোন নীতিমালাতেই নেই; কিংবা দেশের সাংবিধানিক ধরাতেও নেই। জবাবও হয়তো তার কাছে রয়েছে। কিন্তু ‘ভয় হচ্ছে; ভয়ানক ভয়’। যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট কিংবা বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে মতের অমিল/আধিপত্যের লড়াই’সহ নানা বিরোধ এখন বিদ্যমান। কে জানি; মানুষরূপি জ্ঞানপাপী এই শিক্ষক অধ্যাপক ড. আজিজুর রহমান’র পূর্ব কোন শত্রু এখন নতুন করে সুযোগ খুঁজছেন! বিষয়টা উড়িয়ে দেয়া যায় না। অসাধু কোন ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীর সুযোগ নেয়ার আগে এই শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিচারের মুখোমুখি করা কিংবা জবাবদিহিতার মধ্যে আনা সময়ের দাবি। অন্যথায় একটা সময় তার শত্রুদের বলি হতে পারেন তিনি। তখন খুনের মোটিভ চলে যেতে পারে তথাকথিত দ্বায় স্বীকারকারি আইএস ‘জু-জু’র কোর্টে।
এগার : ভাবছি; একজনকে খুন করে আল্লাহু আকবার কিংবা হরে কৃষ্ণ হরে রাম বলে চিৎকার করলেই কী খুনিদের অস্তিত্ব তথা টার্গেট নির্ধারণ হয়ে যায়? এটা যেমন চিরন্তন সত্য নয়, ঠিক তেমনি দেশের এসব ঘটনাকে ছোট দেখারও কোন সুযোগ নেই। বিচারহীনতার সংস্কৃতি দেশ ও জাতিকে ভয়ঙ্কর তথা প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের মুখে ঠেলে দিচ্ছে যা থেকে উত্তরণ খুবই কঠিন।
বার : এ পরিস্থিতি তথাকথিত ইসলাম বিরোধী মনোভাব বন্ধের প্রক্রিয়া কবেল সরকারের মুখে নয়; ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে এটা বাস্তবে পরিণত করতে হবে। যেখানে পুরো বিশ্বে মুসলমানদের এখন সম্মানের চোখে দেখা হচ্ছে; সেখানে বাংলাদেশে কেন হিজাব বিরোধী কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাবের কারণে লাঞ্চনা-বঞ্চনার শিকার হতে হবে?
তের: মাত্র কয়েক মাস আগের ঘটনা। যা সবার জানা। প্যারিসের পর ইউরোপের ব্রাসেলস হামলা; এর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সানবার্নাদিনোর হত্যাকান্ড। এত কিছুর পরও অমুসলিম দেশে মুসলামনদের বিষয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পরিহারে বদ্ধপরিকর বিশ্ব নেতারা। যার অনন্য উদহারণ আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। বিশ্ব রাজধানী খ্যাত ও অভিবাসী বান্ধব নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নর, সিটি মেয়র’সহ ইলেকটেড অফিসিয়ালরা। ফলে নিউইয়র্ক সিটির পুলিশ তথা এনওয়াইপিডি’সহ বিভিন্ন পেশায় হিজাব পরে খুব স্বাচ্ছন্দে চাকুরি করছেন অনেক মুসলিম। এরকম কিছু তথ্য নি¤œরূপ:
চৌদ্দ : এই যে গেল কিছুদিন আগে ক্যারলিন ওয়াকার ডালিও নিউইয়র্ক সিটির নতুন জাজ নির্বাচিত। তিনি হলেন প্রথম হিজাবী মুসলিম মহিলা। ইতিপূর্বে হিজাব পরিহিতা কোন মুসলিম মহিলা এই পদে সমাসীন হননি। যিনি বর্তমানে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীন মিউন্যাসিপাল ড্রিস্টিক্ট কোর্ট তথা সিভিল কোর্টের জাজ নির্বাচিত হয়েছেন। আফ্রিকান-আমেরিকান এই মুসলিম হিজাবী বিচারপতিকে নিয়ে গর্ভ করছেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশী’সহ মুসলিম অধিবাসীরা।
পনের : হোয়াইট হাউজ। একসময়ে সাদা তথা হোয়াইট ‘সুপ্রিমেসি’র ফসল এই নাম। যদিও প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে সেই প্রথা ধ্বংস করে দিলেন ওবামা। যিনি এখন বুঝতে পেরেছেন মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে পূঁজিবাদিদের দখল তথা মুসলিম বিদ্বেষ মনোভাব উল্টো রথে চলতে শুরু করেছেন। তাই যুক্তরাষ্ট্রের মসুলিম বিরোধে মনোভাব নীতির বিপক্ষে অবস্থান ওবামা প্রশাসনের। যার ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন মসজিদ সফরও করেছেন তিনি। এছাড়াও ‘রুমানা আহমেদ’ নামের এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান হিজাবী তরুণীকে ওবামার জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ‘বেন রোডস’র সহকারী হিসেবে নিয়োগও দিয়েছেন। হোয়াইট হাউজে রুমানা নিজেকে ‘হিজাবি’ বলতে পছন্দ করেন। হোয়াইট হাউজে কর্মরত ছয় মুসলিম নারীকে নিয়ে বিশেষ একটি সিরিজও প্রচার করছে সৌদি আরবের টিভি স্টেশন আল-আরাবিয়া ইংলিশ। তাদেরই একজন ছিলেন এই হিজাবী বাংলাদেশী-আমেরিকান রুমানা।
ষোল : বিশ্বের কাছে রেসিস্ট কান্ট্রি নামে খ্যাত অস্ট্রেলিয়া। খুব বেশী দিন নয়; এই তো চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার। দেশটির ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে প্রথমবারের মতো এক মুসলিম নারীকে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ‘আরিফা মাসউদ’ নামে এই নারীই হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ায় নিয়োগ্রাপ্ত প্রথম মুসলিম ওমেন ম্যাজিস্ট্রেট। অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বের ক্ষদ্রতম মহাদেশ হলেও ষষ্ঠ বৃহত্তম দেশ। রাজধানীর ক্যানবেরা আর বৃহত্তম শহরের নাম সিডনী। যে দেশটি ৬টি অঙ্গরাজ্য নিয়ে গঠিত। রাজ্যগুলো হলো নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড, দক্ষিণ অষ্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, ভিক্টোরিয়া ও পশ্চিম অষ্ট্রেলিয়া। সেখানে সংখ্যালঘু তথা আদিবাসী ও মুসলমি কমিউনিটির কাঝে অতি জনপ্রিয় এই হিজাবী আইনজীবী।
সতের : সবশেষ কানাডার কথায় যদি আসি। উদারপন্থি নেতা ও কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেয়ারে ট্রুডোর সুযোগ্য পুত্র সবচেয়ে কম বয়সি কানাডিয়ান বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রডো বিশ্ববাসির কাছে এক আদর্শের নাম বলা যেতে পারে। নির্বাচিত হয়েই সিরিয়ার মুসলিম শরনার্থী গ্রহণের মতো সাহসি পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি তার নানা উদ্যোগ এখন কানাডীয়ান নতুন প্রজন্মের মুসলিমদের কাছে গৌরবের। একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে কানাডার মুসলমানরা কানাডীয় হিসেবে আগের চেয়ে বর্তমানে বেশি গৌরবান্বিত। দেশটির মুসলমান নারীদের ৪৮ শতাংশ হিজাব বা মস্তকাবরণী পরে থাকেন। বর্তমানে এই হারও গেল ১০ বছরে বেড়েছে ১০ শতাংশ।
পরিশেষে এই বলতে চাই; আফসোস এবং পরিতাপের বিষয় হচ্ছে; ৯০ ভাগ মুসলামের দেশে হিজাব নিয়ে যা হচ্ছে কিংবা চলছে তার শেষ কোথায় গিয়ে ঠেঁকে! সেটার ভয়ে এখনো আঁতকে উঠি। যদিও হিজাবী অনেকের হিজাব ব্যবহারের ধরণ তথা ফ্যাশন নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিম তথা উদারপন্থি অনেকের মনে প্রশ্ন রয়েছে। কথায় আছে ‘তব্ওু ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। কারো বিশ্বাস ও ধর্মকে কটাক্ষ করা যেমন ইসলাম দেয়নি; তেমনি ইসলামকে খাটো করে বড় হওয়ার ও কোন সুযোগ নেই। ইসলাম শান্তির ধর্ম। যেখানে অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা কিংবা কারো ব্যক্তিগত স্বাধীনতা হরণের ক্ষমতায় নিশ্চয়ই মহান রাবুল আল-আমিন আমাদের দেয় নাই। বিষয়টি হয়তো আমরা সবাই জানি; কিন্তু মানি না। সবার মাঝে সেই তৌফিক দান করুক। আমিন……………।
লেখক: সাংবাদিক, নিউইয়র্ক