নিউইয়র্ক ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আমেরিকায় ঈদুল আজহার কোরবানী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৯
  • / ৩৩৮ বার পঠিত

আবিদুর রহীম: বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের মানুষ অনেকে ঈদুল আজহার দিনে- নিজে লালন পালন করে বড় করা আদরের পশুটিকে আল্লাহর নামে কোরবানি করেন। ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে সেই সুযোগ না থাকলেও শহরের বেশীর ভাগ মানুষই ঈদের এক, দুই বা তিনদিন আগে হাট থেকে কোরবানীর পশু কিনে নিয়ে আসেন এবং কোরবানীর আগের কয়েকটা দিন এই পশুকে খাওয়ানো, গোসল করানো, মশা মাছি তাড়ানো, পশুর গলায়-পিঠে হাত বুলানোসহ যে যেভাবে পারেন যতœ-আতিœ করেন, এভাবে এক ধরনের মায়া জন্মানো পশুটাকে যখন আল্লাহর নামে কোরবানী দেন, তখন কাঁদতেও দেখেছি অনেককে।
প্রবাসে-আমেরিকায় কোরবানীর সে সুযোগ নেই, নিউইয়র্কসহ বড় বড় সিটিতে বেশীরভাগ মানুষই কোরবানীর জন্য নির্ভর করেন গ্রোসারী শপগুলোর ওপর, যারা কোরবানীর অর্ডার নিয়ে পরে গোস্ত কেটে কুটে রেডি করে পাউন্ড হিসাবে কোরবানীদাতার কাছে সরবরাহ করেন। যদিও গ্রোসারী শপের করা এসব কোরবানীর অনুসৃত পদ্ধতি ও যথাযত নিয়ম মানা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। তবু অনেকেই অনন্যোপায় হয়ে সেখানে যান। এর দায় নিশ্চয় কোরবানী দাতার নয়, দায় অতি মোনাফালোভী গ্রোসারী কর্তৃপক্ষের।
তবে নিউইয়র্কের আপস্টেট এবং আশপাশের কয়েকটি অঙ্গরাজ্জ্য, যেমন- নিউজার্সী, কানেকটিকাট, পেনসিলভেনিয়া, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে, বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমানদের বসবাস রয়েছে- এমন রাজ্যগুলোতে গরুর খামারে গিয়ে, নিজে পশু দেখে, নিজ হাতে বা নিজের তত্বাবধানে পশু কোরবানীর সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে নিজহাতে পশু কোরবানী করার এই সুযোগও।
গত কয়েক বছরে নিউইয়র্কের বাফেলো, নিউজার্জী, এবং কানেকটিকাটের বেশ কয়েকটি গরুর খামারে গিয়ে কোরবানী দেখা এবং করার সুযোগ হয়েছে। এবার কোরবানী করতে গিয়েছিলাম পেনসিলভেনিয়ার মর্সভিলের একটি গরুর খামারে। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার নিভৃত গ্রামের এই খামারটি একেবারেই পারিবারিক মালিকানার একটি খামার, এর আগের যাওয়া অন্যান্য খামারের মতো এদের নেই কোনো বাড়তি শ্রমিক কর্মচারীও। বাবা, ছেলে, দাদা, নাতি মিলেই পরিচর্যা করেন খামারের। আমাদের কোরবানীর কাজেও তারা সবাই মিলেই সাহায্য করেছেন, আর সাহায্য করা বা খোঁজ খবর নিতে এসেছিলেন তাদের কয়েক প্রতিবেশী। এ যেন বাংলাদেশের সেই গ্রামীন পরিবেশ আর সেই অকৃত্রিম ভালোবাসার কোরবানী।
আল্লাহ আমাদের সবার কোরবানী কবুল করুন, পশু কোরবানীর মধ্যদিয়ে মনের পশুকে বধ করা, আর মানুষের অধিকার হরণের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করুন!

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আমেরিকায় ঈদুল আজহার কোরবানী

প্রকাশের সময় : ০৪:৪৬:১৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০১৯

আবিদুর রহীম: বাংলাদেশের গ্রাম গঞ্জের মানুষ অনেকে ঈদুল আজহার দিনে- নিজে লালন পালন করে বড় করা আদরের পশুটিকে আল্লাহর নামে কোরবানি করেন। ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে সেই সুযোগ না থাকলেও শহরের বেশীর ভাগ মানুষই ঈদের এক, দুই বা তিনদিন আগে হাট থেকে কোরবানীর পশু কিনে নিয়ে আসেন এবং কোরবানীর আগের কয়েকটা দিন এই পশুকে খাওয়ানো, গোসল করানো, মশা মাছি তাড়ানো, পশুর গলায়-পিঠে হাত বুলানোসহ যে যেভাবে পারেন যতœ-আতিœ করেন, এভাবে এক ধরনের মায়া জন্মানো পশুটাকে যখন আল্লাহর নামে কোরবানী দেন, তখন কাঁদতেও দেখেছি অনেককে।
প্রবাসে-আমেরিকায় কোরবানীর সে সুযোগ নেই, নিউইয়র্কসহ বড় বড় সিটিতে বেশীরভাগ মানুষই কোরবানীর জন্য নির্ভর করেন গ্রোসারী শপগুলোর ওপর, যারা কোরবানীর অর্ডার নিয়ে পরে গোস্ত কেটে কুটে রেডি করে পাউন্ড হিসাবে কোরবানীদাতার কাছে সরবরাহ করেন। যদিও গ্রোসারী শপের করা এসব কোরবানীর অনুসৃত পদ্ধতি ও যথাযত নিয়ম মানা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। তবু অনেকেই অনন্যোপায় হয়ে সেখানে যান। এর দায় নিশ্চয় কোরবানী দাতার নয়, দায় অতি মোনাফালোভী গ্রোসারী কর্তৃপক্ষের।
তবে নিউইয়র্কের আপস্টেট এবং আশপাশের কয়েকটি অঙ্গরাজ্জ্য, যেমন- নিউজার্সী, কানেকটিকাট, পেনসিলভেনিয়া, মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়াসহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে, বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমানদের বসবাস রয়েছে- এমন রাজ্যগুলোতে গরুর খামারে গিয়ে, নিজে পশু দেখে, নিজ হাতে বা নিজের তত্বাবধানে পশু কোরবানীর সুযোগ আছে। যুক্তরাষ্ট্রে মুসলমানদের সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি বাড়ছে নিজহাতে পশু কোরবানী করার এই সুযোগও।
গত কয়েক বছরে নিউইয়র্কের বাফেলো, নিউজার্জী, এবং কানেকটিকাটের বেশ কয়েকটি গরুর খামারে গিয়ে কোরবানী দেখা এবং করার সুযোগ হয়েছে। এবার কোরবানী করতে গিয়েছিলাম পেনসিলভেনিয়ার মর্সভিলের একটি গরুর খামারে। আমেরিকার পেনসিলভেনিয়ার নিভৃত গ্রামের এই খামারটি একেবারেই পারিবারিক মালিকানার একটি খামার, এর আগের যাওয়া অন্যান্য খামারের মতো এদের নেই কোনো বাড়তি শ্রমিক কর্মচারীও। বাবা, ছেলে, দাদা, নাতি মিলেই পরিচর্যা করেন খামারের। আমাদের কোরবানীর কাজেও তারা সবাই মিলেই সাহায্য করেছেন, আর সাহায্য করা বা খোঁজ খবর নিতে এসেছিলেন তাদের কয়েক প্রতিবেশী। এ যেন বাংলাদেশের সেই গ্রামীন পরিবেশ আর সেই অকৃত্রিম ভালোবাসার কোরবানী।
আল্লাহ আমাদের সবার কোরবানী কবুল করুন, পশু কোরবানীর মধ্যদিয়ে মনের পশুকে বধ করা, আর মানুষের অধিকার হরণের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ত্যাগ স্বীকারে উদ্বুদ্ধ করুন!