‘হক কথা ও ইউএনএ’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ জানুয়ারী
- প্রকাশের সময় : ০৯:০৯:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জানুয়ারী ২০১৯
- / ৭১০ বার পঠিত
হককথা রিপোর্ট: নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ‘হক কথা’ ও নিউইয়র্ক ভিত্তিক বাংলাদেশী বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব আমেরিকা (ইউএনএ)-এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ জানুয়ারী। বিগত ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারী নিউইয়র্ক থেকে হককথা প্রকাশনা শুরু ও ইউএনএ’র নিউজ সার্ভিস চালু করা হয়। বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, আফ্রো-এশিয়া ল্যাটির আমেরিকার মজলুম মানুষের নেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ‘নীতি-আদর্শ’ অনুস্মরণ করেই ‘হক কথা’ আতœপ্রকাশ করে। ‘হক কথা’ শুরু থেকেই সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার উত্তর আমেরিকা প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য প্রকাশিত হতো। ‘হক কথা’র মূল্য ছিলো মাত্র ৫০ সেন্ট। এর সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি ছিলেন মরহুম মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান আর সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ। অপরদিকে নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বসবাসকারী বাংলাদেশী কমিউনিটি ও আমেরিকার খবরাখবর পাঠকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে ‘ইউএনএ’ তার নিউজ সার্ভিস চালু করে। প্রতিষ্ঠার শুরু থকেই উত্তর আমেরিকার বাংলাদেশী মিডিয়া ছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় ‘ইউএনএ’ তার সার্ভিস অব্যাহত রেখে চলেছে এবং কমিউনিটির একটি বিশ্বস্থ ‘নিউজ এজেন্সী’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
উল্লেখ্য, হককথা নিয়মিত এক বছর প্রকাশনার পর বাস্তবতার প্রেক্ষিতে পত্রিকাটি বন্ধ রাখা হয় এবং পরবর্তীতে হককথা প্রিন্টের পরিবর্তে ওয়েব পোর্টালে প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর নিয়মিত প্রকাশিত এবং আপগ্রেড করা হচ্ছে। হককথা’র প্রথম সংখ্যার প্রথম শিরোনাম ছিলো ‘প্রবাসে দেশের রাজনীতি নয়’। হককথা পড়তে চাইলে লগ ইন করুন: hakkatha.com
নিউইয়র্ক থেকে ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারী প্রকাশিত হককথা’র সূচনা সংখ্যায় (প্রথম সংখ্যা) ‘আমাদের কথা’ শিরোনামে সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। এই সম্পাদকীয়’র সাথে মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী’র ছবিও প্রকাশ করা হয়। হককথা’র পাঠকদের জন্য প্রথম সম্পাদকীয়টি হুবহু তুলে ধরা হলো।
সম্পাদকীয় : আমাদের কথা
‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী এক অবিস্মরণীয় নাম। দেশের জনগণের কাছে তিনি এক বিস্ময়কর ইতিহাস এবং স্বাধীন বাংলাদেশ’র স্বপ্নদ্রষ্টা। উপমহাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মওলানা ভাসানী ছিলেন এক মহিরুহ ব্যক্তিত্ব। মওলানা ভাসানী ছিলেন সকল প্রকার শোষন, নিপীড়ন, নির্যাতন, অন্যায়-অত্যাচার আর প্রতিবাদের প্রতীক। তিনি ছিলেন একাধারে মানবতাবাদী জাতীয়তাবাদী ও পরিপূর্ণ গণতান্ত্রিক এবং বিপ্লবী নেতা। সেই সাথে তিনি ছিলেন একজন খাঁটি অসাম্প্রদায়িক মানুষ। যে কারণে দল-মত, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। বাংলাদেশের মানুষের কাছে মওলানা ভাসানী একজন ‘মুকুটহীন স¤্রাট’।
মওলানা ভাসানীর পাশাপাশি আমরা আরো শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দদের যাদের আতœত্যাগ আর অবদানের ফসল আজকের স্বাধীন, সার্বভৌম, আধুনিক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
গণতান্ত্রিক রাজনীতির সূচনা বিকাশে মওলানা ভাসানীর বিচক্ষণতা ও সাহস সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও আজন্ম সংগ্রামী ইতিহাস আজো দেশের মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে আছে।
বাংলাদেশের জনগণ আজ দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রকারী, চক্রান্তকারী আর শোষক-শাসকদের দ্বারা শোষিত এবং নির্যাতিত। দেশ আজ দু:সময় অতিক্রম করছে। দেশের এই দু:সময় ও চলমান রাজনীতির প্রেক্ষাপটে আমরা মওলানা ভাসানী’র মতো একজন মহান দেশপ্রেমিক নেতার প্রয়োজন গভীরভাবে অনুভব করছি। আর এই অনুভব থেকেই আমরা মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ‘হক-কথা’ পত্রিকা’র নামানুসারে এই প্রবাস থেকে ‘হক কথা’ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছি।
মওলানা ভাসানী প্রতিষ্ঠিত ‘হক-কথা’র নাম আজো দেশবাসী’র কাছে স্মরণীয়। দেশ-জাতিকে সঠিক পথ আর দিক নির্দেশনা দিতে ‘হক-কথা’র ভূমিকা ও অবদান নি:সন্দেহে অনুস্মরণীয় এবং অনুকরণীয়। আজ মওলানা ভাসানী জীবিত নেই, নেই তার ‘হক-কথা’। কিন্তু আমাদের সামনে রয়েছে মওলানা ভাসানী’র আদর্শ ও ‘হক-কথা’র দৃষ্টান্ত।
দেশ-বিদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মওলানা ভাসানী’র ‘হক-কথা’র বড় প্রয়োজন। মওলানা’র হক কথা-কে সামনে রেখে রাজনৈতিক সচেতন প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে সঠিক দিক নির্দেশনা এবং ঐক্যবদ্ধ রেখে দেশ-জাতি আর কমিউনিটিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চায় আমাদের ‘হক কথা’। তাছাড়া আমাদের নতুন প্রজন্মের মধ্যে মওলানা ভাসানী’র দীর্ঘ সংগ্রামী ইতিহাস অজানা। দেশ-বিদেশের সকল বাংলাদেশী মেহনতি, দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রমনা জনগণের মুখপত্র হিসেবে প্রবাসে অবদান রাখতে চায় ‘হক কথা’। তাছাড়া উত্তর আমেরিকায় সৎ ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
‘হক কথা’র যাত্রপথে আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি ৫২’র ভাষা আন্দোলন আর ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদ আর সকল বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, শিক্ষাবীদসহ সর্বস্তরের মানুষকে যাদের চরম ত্যাগ ও অবদানের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি ‘বাংলা’-কে মাতৃভাষা হিসেবে আর পেয়েছি লাল-সবুজে ঘেরা জাতীয় পতাকার স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
একটি প্রশ্ন? কমিউনিটির নিয়মিত ১২টি সাপ্তাহিক সংবাদপত্রের ভীড়ে আবার কেন নতুন পত্রিকা ‘হক কথা’র আত্বপ্রকাশ। এ বিষয়ে আমরা আপাতত: কোন মন্তব্য না করে শুধু এটুকুই বলতে চাই আগামী দিনগুলোতে চলার পথে ‘হক কথা’ই বলে দেবে কেন ‘হক কথা’র আত্বপ্রকাশ। কমিউনিটির অন্য সকল পত্রিকাগুলোর সাথে ‘হক কথা’ও এক সহযাত্রী। ‘হক কথা’র যাত্রা পথে মহান আল্লাহতায়ালার অসীম রহমত এবং পত্রিকাটি’র অভিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে আমরা দলমত নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা কামনা করছি। সবার প্রতি রইল ইংরেজী নববর্ষ ২০০৬ এবং পবিত্র ঈদ উল আযহার শুভেচ্ছা।’