নিউইয়র্ক ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আমার জীবনে প্রথম, সংবাদপত্রের কর্মীদের ১ মাসের বেতন দিতে পারলাম না

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:২০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মে ২০২০
  • / ১৫১ বার পঠিত

নাঈমুল ইসলাম খান: আগামী কিংবা তার পরের মাসেও বেতন দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। ১৯৮৮ সাল থেকে আজ ৩২ বছর হলো, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি, সম্পূর্ণ আমার ব্যবস্থাপনায় ছিলো, এবং এক মাসের বেতন বকেয়া হয়েছে, এপ্রিল ২০২০ এর আগে এমনটি কখনও হয়নি। আমি লজ্জিত, আমি ভারাক্রান্ত , আমি বিক্ষুদ্ধ।
২৬ মার্চ থেকে সংবাদপত্রের ব্যবসা বলতে কিছু নেই, পত্রিকা বিক্রি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, সরকারের অধিকাংশ অফিস, আদালত, প্রতিষ্ঠান ছুটিতে। কোথাও কেউ নেই যে নগদ টাকা ধার দেবে, কোথাও কেউ নেই যে বছরের পর বছর বকেয়া পড়ে থাকা বিজ্ঞাপন বিল এই দুঃসময়ে পরিশোধ করবে।
বাংলাদেশ সরকার সংবাদপত্রের জন্য কী সাহায্য করবে, আদৌ করবে কি না এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যারা বছরের পর বছর বিজ্ঞাপনের বিল বকেয়া রেখেছেন, এসময় টেলিফোনও ধরছেন না।
আমরা লক্ষ্য করছি, দেশে বিদেশে অনেক বড় বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে, কর্মী ছাঁটাই করছে, কর্মীদের বেতন ভাতা কমাচ্ছে, কেবলই টিকে থাকার জন্য যা পারছে তাই করছে।
আমিও দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে সকলকে জানাতে চাই, এ সময় শুধু করোনা মহামারী পরিস্থিতিটা ন্যূনতম অস্তিত্ব রক্ষা করে অতিবাহিত করতে পারাই আমাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ।
এ সময়ে আমাদেরকেও কিছু অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, আরও এক বা দুই মাস বেতন পরিশোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। এ সময় সকল কর্মী ভাইদের নিজ নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা করে প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখা এবং যে যেভাবে পারবেন নিজেদেরকেও টিকে থাকার জন্য কাজ করতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।
তবে যত আর্থিক অনটনেই থাকি না কেনো, আমাদের যে কারও সত্যিকারের অনন্যোপায় অবস্থায়, যে কোন চ্যালেঞ্জে আমরা সকলে নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ নিয়ে একে অপরের পাশে থাকবো অবিচল, ইনশাআল্লাহ।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ এই মহামারী অনেক বেশী দিন থাকবে না এবং আমাদের দুঃসময়ও দীর্ঘদিন থাকবে না। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানকে আবারও মার্চ ২০২০ এর অবস্থানেই কেবল ফিরিয়ে আনবো না বরং সে অবস্থানকেও ছাড়িয়ে যাবো।
অপ্রত্যাশিত, অস্বাভাবিক এবং আচমকা যে আঁধার আমাদের গ্রাস করেছে সেটা ভেদ করে অদূর ভবিষ্যতেই আলো আসবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান হবে এদেশের অন্যতম সেরা এবং আমাদের গৌরবের ও আমাদের সকলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিরও।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

আমার জীবনে প্রথম, সংবাদপত্রের কর্মীদের ১ মাসের বেতন দিতে পারলাম না

প্রকাশের সময় : ০২:২০:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ মে ২০২০

নাঈমুল ইসলাম খান: আগামী কিংবা তার পরের মাসেও বেতন দেয়া সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। ১৯৮৮ সাল থেকে আজ ৩২ বছর হলো, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি, সম্পূর্ণ আমার ব্যবস্থাপনায় ছিলো, এবং এক মাসের বেতন বকেয়া হয়েছে, এপ্রিল ২০২০ এর আগে এমনটি কখনও হয়নি। আমি লজ্জিত, আমি ভারাক্রান্ত , আমি বিক্ষুদ্ধ।
২৬ মার্চ থেকে সংবাদপত্রের ব্যবসা বলতে কিছু নেই, পত্রিকা বিক্রি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে, সরকারের অধিকাংশ অফিস, আদালত, প্রতিষ্ঠান ছুটিতে। কোথাও কেউ নেই যে নগদ টাকা ধার দেবে, কোথাও কেউ নেই যে বছরের পর বছর বকেয়া পড়ে থাকা বিজ্ঞাপন বিল এই দুঃসময়ে পরিশোধ করবে।
বাংলাদেশ সরকার সংবাদপত্রের জন্য কী সাহায্য করবে, আদৌ করবে কি না এখন পর্যন্ত স্পষ্ট নয়। সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের যারা বছরের পর বছর বিজ্ঞাপনের বিল বকেয়া রেখেছেন, এসময় টেলিফোনও ধরছেন না।
আমরা লক্ষ্য করছি, দেশে বিদেশে অনেক বড় বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে, কর্মী ছাঁটাই করছে, কর্মীদের বেতন ভাতা কমাচ্ছে, কেবলই টিকে থাকার জন্য যা পারছে তাই করছে।
আমিও দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে সকলকে জানাতে চাই, এ সময় শুধু করোনা মহামারী পরিস্থিতিটা ন্যূনতম অস্তিত্ব রক্ষা করে অতিবাহিত করতে পারাই আমাদের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ।
এ সময়ে আমাদেরকেও কিছু অনভিপ্রেত সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে, আরও এক বা দুই মাস বেতন পরিশোধ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। এ সময় সকল কর্মী ভাইদের নিজ নিজ উদ্যোগে ব্যবস্থা করে প্রতিষ্ঠানকে টিকিয়ে রাখা এবং যে যেভাবে পারবেন নিজেদেরকেও টিকে থাকার জন্য কাজ করতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাচ্ছি।
তবে যত আর্থিক অনটনেই থাকি না কেনো, আমাদের যে কারও সত্যিকারের অনন্যোপায় অবস্থায়, যে কোন চ্যালেঞ্জে আমরা সকলে নিজেদের সর্বোচ্চ সামর্থ নিয়ে একে অপরের পাশে থাকবো অবিচল, ইনশাআল্লাহ।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ইনশাআল্লাহ এই মহামারী অনেক বেশী দিন থাকবে না এবং আমাদের দুঃসময়ও দীর্ঘদিন থাকবে না। আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠানকে আবারও মার্চ ২০২০ এর অবস্থানেই কেবল ফিরিয়ে আনবো না বরং সে অবস্থানকেও ছাড়িয়ে যাবো।
অপ্রত্যাশিত, অস্বাভাবিক এবং আচমকা যে আঁধার আমাদের গ্রাস করেছে সেটা ভেদ করে অদূর ভবিষ্যতেই আলো আসবে। আমাদের প্রতিষ্ঠান হবে এদেশের অন্যতম সেরা এবং আমাদের গৌরবের ও আমাদের সকলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিরও।