নিউইয়র্ক ০৭:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশের মতো আতিথিয়তা আর কোথাও পাইনি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জুন ২০১৮
  • / ১২৭৯ বার পঠিত

হককথা ডেস্ক: কলকাতার সঙ্গীত শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিশেন ইউএসএ’র আমন্ত্রণে এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন। গত ২৫-২৭ মে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিল-এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই অনুষ্ঠানে গান করে খুব ভালো লেগেছে তার। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শক-শ্রোতার সমাবেশ দেখে শিল্পীর আরো ভালো লাগে। সবাইকে নিজের লোক মনে হয়েছে। মনে হয়েছে আমি বা তারা প্রবাসে নয়, কলকাতাতেই রয়েছি। তাদের অনুরোধ ভালো লেগেছে, গান পরিবেশন করে খুব আনন্দ পেয়েছি। এক সাক্ষাৎকারে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী এমনই অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন।
গত ১ জুন শুক্রবার নিউইয়র্কে এই প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে তার সঙ্গীত জগতের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। জানান, গত ২৩ মে বুধবার তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন এবং ন্যাশভিলের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে গত ৩১ মে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক আসেন। লোকনাথ মিশনের আমন্ত্রণে তিনি নিউইয়র্ক আসেন এবং গত ২ জুন শনিবার গুজরাটি সমাজ হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ৪ জুন সোমবার তার কলকাতার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করার কথা।
আলাপকালে শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী জানান, সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি শুরু মা তপতী’র মাধ্যমে। তখন তার বয়স মাত্র আড়াই বছর। মা-ই তার সঙ্গীতের গুরু। জন্ম কলকাতার হাওড়া জেলার আমতা। বাবা গোবিন্দ লাল ব্যানার্জী, সার্ভিস করতেন। তার একমাত্র ভাই, নাম নীলার্ঘ্য ব্যানাজী।
এক প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী জানান, মা গান করতেন। কিন্তু বিয়ের পর পারিবারিক কারণেই গান করতে পারেননি। মূলত: মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়েই আমিও গানের সাথে মিশে যাই। গানও আমার ভালো লেগে যায়। ২০০০ সাল থেকে প্রফেশনালী গান করছি। গানের উপর মাস্টার্স করেছেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আধুনিক বাংলা গানের পাশাপাশি নজরুল সঙ্গীত আর ভক্তিমূলক সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন। নজরুল গীতিতে ন্যাশনাল স্কলারশীপ লাভ করেন। তার প্রিয় শিল্পী আশা ভোশলে, আর ডি বর্মন, সলিল চৌধুরী।
তার প্রথম শিক্ষাগুরু হাওড়ার গুরু মঞ্জুলা সরকার ছাড়াও কলকাতার পন্ডিত নীহার রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, বিমান মুখোপাধ্যায় আর বর্তমানে পন্ডিত সন্দ্বীপ নাগ-এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। চার বছর আগে তিনি নিজেই গানের স্কুল ‘রাগ রঞ্জনী একাডেমী ’ প্রতিষ্ঠা করেন। এতে ৪০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়াও তিনি কলকাতার আরিয়ান্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গানের শিক্ষিকা।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী জানান, ২০১৩ সালে প্রথম বেসিক বাংলা গানের সিডি ‘সমর্পণ’ প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তাপস দত্ত (মার্কো)। পরবর্তীকালে মার্কোর সাথে আরো অনেক কাজ করেন। প্রত্যেক পূজোর নিয়মিত গান প্রকাশ করেন। ২০০৭ সালে কলকাতার বাংলা সিনেমার ‘শুভ দৃষ্টি’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন। পরবর্তীতে আরো অনেক সিনেমা ও টেলিফিল্মে গান করেছেন। আরা বলেন, আজ পর্যন্ত কোন রিমেক গান রেকর্ড করিনি। শ্রোতাদের দাবীতে মাঝে মধ্যে অনুষ্ঠানে রিমেক গান করে থাকি। তবে শ্রোতাদের কাছে আমার পরিচিতি নতুন গানের শিল্পী হিসেবে। কলকাতা ছাড়াও দিল্লী, বোম্বাই, আসাম, ত্রিপুরা, ব্যাঙ্গালোর, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে গান করেছেন।
শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের মতো আতিথিয়তা আর কোথাও পাইনি। শিল্পী হিসেবে কলকাতাতেও এমন আদর-যতœ পাইনি। বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে গান করেছি। যশোরের রামকৃষ্ণ মিশন-এর আয়োজন আর আতিথেয়তা আমাকে আরো বেশী মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান কলকাতার দূর্গাপূজার মতো।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী বলেন, নতুন গান নিয়ে কাজ করতে চাই। কলকাতা আর বাংলাদেশে গান ছড়িয়ে দিতে চাই। কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ বাংলা গান নিয়ে বেশী কাজ করছে। যা ভালো লেগেছে। গানের মধ্যেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চান। তিনি বলেন, রিমেক করা উচিৎ নয়। অনুকরণ বা অনুসরণে আমি বিশ্বাসী নই। যে কারণে আমি কোনদিন রিমেক করিনি। শিল্পীকে তার নিজস্ব গানেই শিল্পী হওয়া উচিৎ। অন্যের গান গেয়ে শিল্পী হওয়া নয়। তবে জনপ্রিয় শিল্পীকে দেখে শেখা যেতে পারে।
কেমন লগলো প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর? জবাবে বললেন, ভালো লাগছে। কলকাতার মতো জ্যাম (ট্রাফিক) নেই। একদম অন্যরকম, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, টাইম টেলিভিশন-এর ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি একক গান পরিবেশন করবেন। (বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

About Author Information

বাংলাদেশের মতো আতিথিয়তা আর কোথাও পাইনি

প্রকাশের সময় : ১১:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জুন ২০১৮

হককথা ডেস্ক: কলকাতার সঙ্গীত শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিশেন ইউএসএ’র আমন্ত্রণে এবারই প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরে এসেছেন। গত ২৫-২৭ মে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ন্যাশভিল-এ আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই অনুষ্ঠানে গান করে খুব ভালো লেগেছে তার। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে বিপুল সংখ্যক দর্শক-শ্রোতার সমাবেশ দেখে শিল্পীর আরো ভালো লাগে। সবাইকে নিজের লোক মনে হয়েছে। মনে হয়েছে আমি বা তারা প্রবাসে নয়, কলকাতাতেই রয়েছি। তাদের অনুরোধ ভালো লেগেছে, গান পরিবেশন করে খুব আনন্দ পেয়েছি। এক সাক্ষাৎকারে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী এমনই অনুভূতির কথা ব্যক্ত করেন।
গত ১ জুন শুক্রবার নিউইয়র্কে এই প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে তার সঙ্গীত জগতের নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন। জানান, গত ২৩ মে বুধবার তিনি যুক্তরাষ্ট্রে আগমন করেন এবং ন্যাশভিলের অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে গত ৩১ মে বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক আসেন। লোকনাথ মিশনের আমন্ত্রণে তিনি নিউইয়র্ক আসেন এবং গত ২ জুন শনিবার গুজরাটি সমাজ হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। ৪ জুন সোমবার তার কলকাতার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্ক ত্যাগ করার কথা।
আলাপকালে শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী জানান, সঙ্গীতে তার হাতেখড়ি শুরু মা তপতী’র মাধ্যমে। তখন তার বয়স মাত্র আড়াই বছর। মা-ই তার সঙ্গীতের গুরু। জন্ম কলকাতার হাওড়া জেলার আমতা। বাবা গোবিন্দ লাল ব্যানার্জী, সার্ভিস করতেন। তার একমাত্র ভাই, নাম নীলার্ঘ্য ব্যানাজী।
এক প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী জানান, মা গান করতেন। কিন্তু বিয়ের পর পারিবারিক কারণেই গান করতে পারেননি। মূলত: মায়ের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়েই আমিও গানের সাথে মিশে যাই। গানও আমার ভালো লেগে যায়। ২০০০ সাল থেকে প্রফেশনালী গান করছি। গানের উপর মাস্টার্স করেছেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আধুনিক বাংলা গানের পাশাপাশি নজরুল সঙ্গীত আর ভক্তিমূলক সঙ্গীত পরিবেশন করে থাকেন। নজরুল গীতিতে ন্যাশনাল স্কলারশীপ লাভ করেন। তার প্রিয় শিল্পী আশা ভোশলে, আর ডি বর্মন, সলিল চৌধুরী।
তার প্রথম শিক্ষাগুরু হাওড়ার গুরু মঞ্জুলা সরকার ছাড়াও কলকাতার পন্ডিত নীহার রঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, বিমান মুখোপাধ্যায় আর বর্তমানে পন্ডিত সন্দ্বীপ নাগ-এর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করছেন। চার বছর আগে তিনি নিজেই গানের স্কুল ‘রাগ রঞ্জনী একাডেমী ’ প্রতিষ্ঠা করেন। এতে ৪০ জনের মতো শিক্ষার্থী রয়েছে। এছাড়াও তিনি কলকাতার আরিয়ান্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের গানের শিক্ষিকা।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী জানান, ২০১৩ সালে প্রথম বেসিক বাংলা গানের সিডি ‘সমর্পণ’ প্রকাশিত হয়। এই অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তাপস দত্ত (মার্কো)। পরবর্তীকালে মার্কোর সাথে আরো অনেক কাজ করেন। প্রত্যেক পূজোর নিয়মিত গান প্রকাশ করেন। ২০০৭ সালে কলকাতার বাংলা সিনেমার ‘শুভ দৃষ্টি’ ছবিতে প্রথম প্লেব্যাক করেন। পরবর্তীতে আরো অনেক সিনেমা ও টেলিফিল্মে গান করেছেন। আরা বলেন, আজ পর্যন্ত কোন রিমেক গান রেকর্ড করিনি। শ্রোতাদের দাবীতে মাঝে মধ্যে অনুষ্ঠানে রিমেক গান করে থাকি। তবে শ্রোতাদের কাছে আমার পরিচিতি নতুন গানের শিল্পী হিসেবে। কলকাতা ছাড়াও দিল্লী, বোম্বাই, আসাম, ত্রিপুরা, ব্যাঙ্গালোর, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে গান করেছেন।
শিল্পী মহুয়া ব্যানার্জী বলেন, বাংলাদেশের মতো আতিথিয়তা আর কোথাও পাইনি। শিল্পী হিসেবে কলকাতাতেও এমন আদর-যতœ পাইনি। বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে গান করেছি। যশোরের রামকৃষ্ণ মিশন-এর আয়োজন আর আতিথেয়তা আমাকে আরো বেশী মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান কলকাতার দূর্গাপূজার মতো।
ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে শিল্পী মহুয়া ব্যানাজী বলেন, নতুন গান নিয়ে কাজ করতে চাই। কলকাতা আর বাংলাদেশে গান ছড়িয়ে দিতে চাই। কলকাতার চেয়ে বাংলাদেশের মানুষ বাংলা গান নিয়ে বেশী কাজ করছে। যা ভালো লেগেছে। গানের মধ্যেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চান। তিনি বলেন, রিমেক করা উচিৎ নয়। অনুকরণ বা অনুসরণে আমি বিশ্বাসী নই। যে কারণে আমি কোনদিন রিমেক করিনি। শিল্পীকে তার নিজস্ব গানেই শিল্পী হওয়া উচিৎ। অন্যের গান গেয়ে শিল্পী হওয়া নয়। তবে জনপ্রিয় শিল্পীকে দেখে শেখা যেতে পারে।
কেমন লগলো প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর? জবাবে বললেন, ভালো লাগছে। কলকাতার মতো জ্যাম (ট্রাফিক) নেই। একদম অন্যরকম, ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, টাইম টেলিভিশন-এর ঈদের বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি একক গান পরিবেশন করবেন। (বাংলা পত্রিকা)