নিউইয়র্ক ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মাশরাফি সাকিবদের মাঠের একি হাল!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩
  • / ৩৭ বার পঠিত

ক্রীড়া ডেস্ক : খুলনার বৈকালীতে শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম। মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে শেওলা ধরা বিবর্ণ দেয়াল। জায়গায় জায়গায় খুলে এসেছে প্লাস্টার। মাঠের ভেতরে প্রবেশ করতেই ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে শুরু হবে রক্তক্ষরণ। চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে যেন ধ্বংসস্তৃপ। গ্যালারির চেয়ারগুলো উপড়ে উঠে গেছে। সিঁড়িগুলোতে শেওলা, জন্মেছে নানা রকমের লতাপাতা। লোহার অবকাঠামোগুলোতে মরচে ধরেছে, মনে হচ্ছে খুলে পড়ে যাবে যখন তখন। সাইড স্ক্রিনটা দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

এই মাঠে খেলে গেছে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও কেনিয়ার মতো শীর্ষ ক্রিকেট দল। এখানেই বাংলাদেশ জিতেছে তাদের প্রথম আন্তর্জতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ! ২০০৬ এখানে যাত্রা শুরু আর শেষ খেলা হয়েছে ২০১৬ তে। হ্যাঁ, এরপর ৭ বছর কেটে গেছে, এই ভেন্যুতে নেই কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অবহেলা আর অযত্নে পড়ে স্টেডিয়ামটি এখন ধ্বংসস্তুপ। অবহেলার আরেক নাম যেন খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম। দায়টা আসলে কার! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নাকি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)?।বলার অপেক্ষা রাখে না, দুই পক্ষের রশিটানাটানিতেই এত সময় পেরিয়ে হয়নি স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজ। যদিও এই বেহাল দশার জন্য দায়ী করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগকে। দৈনিক মানবজমিনকে ভেন্যু ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল বলেন, ‘আসলে ২০১৬ তে একটি কালবৈশাখি ঝড় হয় খুলনাতে। সেই সময় এখানে অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হয়েছে। সাইড স্ক্রিনটা তখনই ভেঙে পড়ে যায়। গ্লাসগুলোও ভেঙে যায় বিভিন্ন ভবনের।’ ২০১৬’র ৫ই এপ্রিল হয়েছিল কালবৈশাখী ঝড়। সেই সময় খুলনা স্টেডিয়ামের বড় ধরণের ক্ষতি হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এর সংস্কার কাজ করতে এত দেরি কেন!

মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, আবদুর রজ্জাক, তুষার ইমরান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, নুরুল হাসান সোহানদের মতো জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা খুলনা বিভাগের শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে নিজেদের ক্যারিয়ারের বড় একটি অংশ কাটিয়েছেন। দেশের তারকা ক্রিকেটারদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মাঠে। এখানেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জয় আসে আর পাকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে দেশের হয়ে নিজের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন তামিম ইকবাল। আজ সেই মাঠে হচ্ছে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট। জানা গেছে, গেল ৭ বছরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে খুলনার স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজের নানা পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও তা কাগজে-কলমে আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলে, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই শুনছি যে খুলনা স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হবে।

আরোও পড়ুন। রোমার হৃদয় ভেঙে সেভিয়ার সপ্তম শিরোপা

১০০ বা ১২০ কোটি টাকার কাজ হবে। কিন্তু এসব শুধু শুনে আসছি। কাগজে কলমে কোনও পরিকল্পনা অর্ডার এখন পর্যন্ত এখানে আসেনি।’ একটা সময় খুলনা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না দেয়ার দুটি কারণ দেখাতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। একটি পাঁচ তারকা হোটেল না থাকা আরেকটি যোগাযোগ ব্যাবস্থা। খুলনা শহরে কোনও আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নেই। এখানে আসতে হলে যশোর বিমানবন্দরে এসে বাসে করে আসতে হয় প্রায় ২ ঘন্টা সময় নিয়ে। তবে বর্তমানে স্টেডিয়ামের ঠিক পাশে গড়ে উঠেছে একটি পাঁচতারকা হোটেল। যার কাজ প্রায় শেষের দিকে। আর পদ্মা সেতু ঢাকার সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এনে দিয়েছে অভাবনীয় পরিবর্তন। কিন্তু এরপরও কেন শুরু হচ্ছে না খুলনা স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজ !

সংষ্কার কাজ না হলেও এরই মধ্যে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অনুশীলনের জন্য খুলনা স্টেডিয়ামকে বরাদ্ধ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে বিসিবি। ভেন্যু ইনচার্জ জানিয়েছেন লোকাল ক্রিকেট ও অনুশীলন চালাতে কোনও সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘এখানে লোকাল ক্রিকেটতো হচ্ছে। মেয়েদের অনুশীলনেও কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সংষ্কার না হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ সম্ভব নয়।’ জানা গেছে, গত দুই বছরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) প্রকৌশলী ঘুরে গেছেন অনেকবারই। এনএসসির সচিব পরিদর্শনে এসেছেন তিনবার। বিসিবি থেকে এনএসসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিসিবির স্থানীয় পরিচালক শেখ সোহেলের চেষ্টা তো আছেই। আশ্বাস মিলেছে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকেও। কিন্তু কোনও এক অদৃশ্য কারণে শুরু হচ্ছে না কাজ। বছরের পর বছর অবহেলায় স্টেডিয়ামটি পরিণত হচ্ছে ধ্বংসস্তুপে। জানা গেছে এই স্টেডিয়ামটি একেবারেই নতুনভাবে সাজাতে চায় বিসিবি। আর সংষ্কার করে দায়সারা ভাবে কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর এ কারণেই আটকে আছে ভেন্যুর কাজ ! সূত্র : মানবজমিন
সুমি/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মাশরাফি সাকিবদের মাঠের একি হাল!

প্রকাশের সময় : ০২:৪২:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ জুন ২০২৩

ক্রীড়া ডেস্ক : খুলনার বৈকালীতে শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম। মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই চোখে পড়ে শেওলা ধরা বিবর্ণ দেয়াল। জায়গায় জায়গায় খুলে এসেছে প্লাস্টার। মাঠের ভেতরে প্রবেশ করতেই ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে শুরু হবে রক্তক্ষরণ। চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে যেন ধ্বংসস্তৃপ। গ্যালারির চেয়ারগুলো উপড়ে উঠে গেছে। সিঁড়িগুলোতে শেওলা, জন্মেছে নানা রকমের লতাপাতা। লোহার অবকাঠামোগুলোতে মরচে ধরেছে, মনে হচ্ছে খুলে পড়ে যাবে যখন তখন। সাইড স্ক্রিনটা দুমড়ে মুচড়ে পড়ে আছে। দেখে বোঝার উপায় নেই এটি বাংলাদেশের একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

এই মাঠে খেলে গেছে জিম্বাবুয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান ও কেনিয়ার মতো শীর্ষ ক্রিকেট দল। এখানেই বাংলাদেশ জিতেছে তাদের প্রথম আন্তর্জতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ! ২০০৬ এখানে যাত্রা শুরু আর শেষ খেলা হয়েছে ২০১৬ তে। হ্যাঁ, এরপর ৭ বছর কেটে গেছে, এই ভেন্যুতে নেই কোনও আন্তর্জাতিক ম্যাচ। অবহেলা আর অযত্নে পড়ে স্টেডিয়ামটি এখন ধ্বংসস্তুপ। অবহেলার আরেক নাম যেন খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম। দায়টা আসলে কার! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) নাকি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)?।বলার অপেক্ষা রাখে না, দুই পক্ষের রশিটানাটানিতেই এত সময় পেরিয়ে হয়নি স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজ। যদিও এই বেহাল দশার জন্য দায়ী করা হচ্ছে প্রাকৃতিক দূর্যোগকে। দৈনিক মানবজমিনকে ভেন্যু ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল বলেন, ‘আসলে ২০১৬ তে একটি কালবৈশাখি ঝড় হয় খুলনাতে। সেই সময় এখানে অবকাঠামোর বড় ক্ষতি হয়েছে। সাইড স্ক্রিনটা তখনই ভেঙে পড়ে যায়। গ্লাসগুলোও ভেঙে যায় বিভিন্ন ভবনের।’ ২০১৬’র ৫ই এপ্রিল হয়েছিল কালবৈশাখী ঝড়। সেই সময় খুলনা স্টেডিয়ামের বড় ধরণের ক্ষতি হয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এর সংস্কার কাজ করতে এত দেরি কেন!

মাশরাফি বিন মুর্তজা, সাকিব আল হাসান, আবদুর রজ্জাক, তুষার ইমরান, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, নুরুল হাসান সোহানদের মতো জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটাররা খুলনা বিভাগের শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে নিজেদের ক্যারিয়ারের বড় একটি অংশ কাটিয়েছেন। দেশের তারকা ক্রিকেটারদের অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই মাঠে। এখানেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট জয় আসে আর পাকিস্তানের সঙ্গে ড্র করে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচে দেশের হয়ে নিজের প্রথম টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি করেন তামিম ইকবাল। আজ সেই মাঠে হচ্ছে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট। জানা গেছে, গেল ৭ বছরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ থেকে খুলনার স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজের নানা পরিকল্পনার কথা শোনা গেলেও তা কাগজে-কলমে আসেনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র বলে, ‘আমরা অনেক দিন ধরেই শুনছি যে খুলনা স্টেডিয়ামের কাজ শুরু হবে।

আরোও পড়ুন। রোমার হৃদয় ভেঙে সেভিয়ার সপ্তম শিরোপা

১০০ বা ১২০ কোটি টাকার কাজ হবে। কিন্তু এসব শুধু শুনে আসছি। কাগজে কলমে কোনও পরিকল্পনা অর্ডার এখন পর্যন্ত এখানে আসেনি।’ একটা সময় খুলনা স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না দেয়ার দুটি কারণ দেখাতো বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। একটি পাঁচ তারকা হোটেল না থাকা আরেকটি যোগাযোগ ব্যাবস্থা। খুলনা শহরে কোনও আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর নেই। এখানে আসতে হলে যশোর বিমানবন্দরে এসে বাসে করে আসতে হয় প্রায় ২ ঘন্টা সময় নিয়ে। তবে বর্তমানে স্টেডিয়ামের ঠিক পাশে গড়ে উঠেছে একটি পাঁচতারকা হোটেল। যার কাজ প্রায় শেষের দিকে। আর পদ্মা সেতু ঢাকার সঙ্গে খুলনার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এনে দিয়েছে অভাবনীয় পরিবর্তন। কিন্তু এরপরও কেন শুরু হচ্ছে না খুলনা স্টেডিয়ামের সংষ্কার কাজ !

সংষ্কার কাজ না হলেও এরই মধ্যে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অনুশীলনের জন্য খুলনা স্টেডিয়ামকে বরাদ্ধ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে বিসিবি। ভেন্যু ইনচার্জ জানিয়েছেন লোকাল ক্রিকেট ও অনুশীলন চালাতে কোনও সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘এখানে লোকাল ক্রিকেটতো হচ্ছে। মেয়েদের অনুশীলনেও কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সংষ্কার না হলে আন্তর্জাতিক ম্যাচ সম্ভব নয়।’ জানা গেছে, গত দুই বছরে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) প্রকৌশলী ঘুরে গেছেন অনেকবারই। এনএসসির সচিব পরিদর্শনে এসেছেন তিনবার। বিসিবি থেকে এনএসসিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিসিবির স্থানীয় পরিচালক শেখ সোহেলের চেষ্টা তো আছেই। আশ্বাস মিলেছে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকেও। কিন্তু কোনও এক অদৃশ্য কারণে শুরু হচ্ছে না কাজ। বছরের পর বছর অবহেলায় স্টেডিয়ামটি পরিণত হচ্ছে ধ্বংসস্তুপে। জানা গেছে এই স্টেডিয়ামটি একেবারেই নতুনভাবে সাজাতে চায় বিসিবি। আর সংষ্কার করে দায়সারা ভাবে কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। আর এ কারণেই আটকে আছে ভেন্যুর কাজ ! সূত্র : মানবজমিন
সুমি/হককথা