স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন যুব সংঘ রানার্স আপ
- প্রকাশের সময় : ০৯:৪১:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০১৯
- / ৮৬৫ বার পঠিত
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকা’র উদ্যোগে প্রবাসে প্রথবারের মতো আয়োজিত স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড চ্যাম্পিয়ন আর যুব সংঘ (নেভী) রানার্স আপ হওয়ার গৌরব আর্জন করে। গত ২২ এপ্রিল সোমবার ব্রুকলীনের ক্যাটন এভিনিউস্থ পার্কে বৃষ্টির মধ্যেই দিনব্যাপী টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয়। টুর্নামেন্টে মোট ৯টি দল অংশ নেয়। দলগুলো হলো সোনার বাংলা (গ্রীণ), সোনার বাংলা (রোড), যুব সংঘ (নেভী), যুব সংঘ (ব্লু), ব্রঙ্কস ইউনাইটেড, আইসাব, বিবিএ, সন্দ্বীপ স্পোর্টিং ক্লাব ও গোপালগঞ্জ ইউএসএ। খবর ইউএনএ’র।
টুর্নামেন্টের খেলাগুলো শেষে আয়োজিত পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মিজ সাদিয়া ফয়জুননেসা। এছাড়াও আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিক সামসুদ্দীন আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল মওলা, স্পোর্টস কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ স্পোর্টস ফাউন্ডেশন ইউএসএ’র প্রেসিডেন্ট আব্দুর রহীম বাদশা, পৃষ্ঠপোষক যথাক্রমে ডা. ফেরদৌস খন্দকার (চ্যাম্পিয়ন ট্রফি) ও রমেশ নাথ (রানার্স আপ ট্রফি) সহ কাজী তোফায়েল ইসলাম (এমভিপি ফাইনাল ট্রফি), মফিজুল ইসলাম রুমী (রাইজিং স্টার ট্রফি) ও মোহাম্মদ নওশাদ হোসেন (রাইজিং স্টার ট্রফি)। কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট একেএম রফিকুল ইসলাম ডালিম (এমভিপি টুর্নামেন্ট ট্রফি), আশ্রাফ আলী খান লিটন (হাই স্কোর ট্রফি), ইকতারুজ্জামান রতন (বেষ্ট ডিফেন্ডার) এবং তানিসা ট্যাক্স এন্ড নোটারী সার্ভিস (বেষ্ট গোল কিপার ট্রফি) পৃষ্ঠপোষক হিসেবে টুর্নামেন্ট আয়োজনে ভূমিকা রাখেন।
অনুষ্ঠানে কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের সৈয়দ এনায়েত আলীন ও ইয়াকুত রহমান সহ ফুটবল দলগুলোর কর্মকর্তা ও খেলোয়ারগণ উপস্থিত ছিলেন।
সকাল সাড়ে আটটার দিকে দুই মাঠে টুর্নামেন্টের খেলা শুরু হয়ে বিকেল চারটার দিকে শেষ হয়। সকালের দিকে বৃষ্টি না হরেও দুপুর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয় এবং বৃষ্টির মধ্যেই খেলা চলে। খেলায় প্রতিটি দলে ৭ জন করে খেলোয়ার অংশ নেন। উল্লেখিত দলগুলোর মধ্যে সোনার বাংলা (রেড) ছাড়া অন্য দলগুলো কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে। প্রথম খেলাগুলো ২০ মিনিট করে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর কোয়র্টিার ফাইনালের খেলা হয় ২৪ মিনিটি করে। পরবর্তীতে দুটি সেমি ফাইনালের খেলা হয় ২৬ মিনিট করে আর ফাইনাল খেলা হয় ৩০ মিনিটে। সেমিফাইনালের খেলা দুটি গোল শূন্য ড্র হলে টাইব্রেকারে ব্রঙ্কস ইউনাইটেড দল যুব সংঘ (ব্লু)-কে আর যুব সংঘ (নেভী) দল বিবিএ-কে হারিয়ে ফাইনালে উঠে।
ফাইনাল খেলায় ব্রঙ্কস ইউনাইটেড ২-০ গোলে যুব সংঘকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। টুর্নামেন্টের প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা সহ অন্যান্য অতিথিরা বৃষ্টির মধ্যে মাঠে দাঁড়িয়ে ফাইনাল খেলা উপভোগ করেন।
স্বাধীনতা ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ব্রঙ্কস ইউনাইটেড
খেলা শেষে মুষলধারের বৃষ্টির মধ্যেই আয়োজিত টুর্নামেন্টের পুরষ্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি ও বাংলাদেশের সাবেক জাতীয় এথলেটস মহিউদ্দিন দেওয়ান। এই পর্ব পরিচালনা করেন স্পোর্টস কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুয়েল আহমদ। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ ও পৃষ্ঠপোষকগণ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ ট্রফি সহ দুই দলের খেলোয়ারদের মাঝে ব্যক্তিগত ট্রফি ও মেডেল তুলে দেন। এছাড়াও অনুষ্ঠানে একাত্তুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুজিবুল মওলা এবং টুর্নামেন্ট কভার করা একমাত্র সাংবাদিক হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমেদ-কে স্পোর্টস কাউন্সিলের পক্ষ থেকে মেডেল উপহার দেয়া হয়। অতিথিদ্বয় তাদের হাতে মেডেল তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে প্রবাসে প্রথমবারের মতো স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করায় স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের সাধুবাদ জানান এবং এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে আগামী দিনে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি প্রতিবছর আয়োজিত ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট-কে আরো আকর্ষনীয় করতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত টেবিল টেনিস সহ অন্যান্য টুর্নামেন্ট আয়োজনে স্পোর্টস কাউন্সিলে অংশগ্রহণ ও সহযোগিতা কামনা করেন এবং প্রয়োজনে আন্যান্য টুর্নামেন্টও আয়োজন করা যেতে পারে বলেন জানান।
স্বাধীনতা ফুটবল টুর্নামেন্টে রানার্স আপ যুব সংঘ (নেভী)
কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুননেসা তার বক্তব্যে স্পোর্টস কাউন্সিলের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এমন আয়োজন প্রবাসে বাংলাদেশী-আমেরিকান নতুন প্রজন্মদের বিপথগামীতা থেকে রক্ষা করবে। সেই সাথে দেশের সুনামও হবে। পাশাপাশি তাদের বিনোদনেরও অভাব ঘুচাবে। তিনিও কনস্যুলেটের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং আরো টুর্নামেন্ট আয়োজনের আহবান জানান।
স্পোর্টস কাউন্সিলের সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, বাংলাদেশের একাত্তুরের শহীদ আর দেশের বীর সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণেই স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। চলতি বছর অনুষ্ঠিতব্য ফুটল লীগ ও টুর্নামেন্ট-২০১৯ এ সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে চাঙ্গা করতে এই টুর্নামেন্ট ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, এই ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। এজন্য তিনি বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেট সহ কমিউনিটির পৃষ্ঠপোষকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ স্পোর্ট কাউন্সিল অব আমেরিবকার উদ্যোগ, আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় আগামী জুন মাস থেকে নিউইয়র্কে চলতি বছরের ফুটবল লীগ ও টুর্নামেন্ট-২০১৯ আনুষ্ঠিত হবে।