সামরিক সহযোগিতা
চীনকে ঠেকাতে চায় জাপান-যুক্তরাষ্ট্র

- প্রকাশের সময় : ০১:১৩:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
- / ৯০ বার পঠিত
দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিংয়ের ‘অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ডের’ জবাব দিতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান। এ ছাড়া এই দুই মিত্রদেশের পক্ষ থেকে চীন ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার সামরিক সহযোগিতার নিন্দা জানানো হচ্ছে। টোকিওতে গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োকো কামিকাওয়া এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিনোরু কিহারার সঙ্গে বৈঠক করেন। এ বৈঠককে বলা হয় ‘টু প্লাস টু’ বৈঠক। এ বৈঠকের পর তাঁরা সামরিক সহযোগিতা বাড়ানোর কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাঁরা মিত্রদেশ জাপানের বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয়কে আরও গভীর করতে জাপানে সামরিক কমান্ডকে পুনর্গঠন করছেন। এর কারণ হচ্ছে এ অঞ্চলে চীনকে সবচেয়ে বড় কৌশলগত চ্যালেঞ্জ হিসেবে তাঁরা চিহ্নিত করেছেন। টোকিওতে চার নেতার বৈঠকের পর এ মন্তব্য করা হয়। তাঁদের এ আলোচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি বাড়ানোর বিষয়ে উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া হিসেবে টোকিও ও ওয়াশিংটনের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বাড়ানো।
যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মন্ত্রীদের বৈঠকের পর এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীনের বেআইনি দাবি, ওই অঞ্চলে সামরিকীকরণ এবং দক্ষিণ চীন সাগরে হুমকি ও উসকানিমূলক কার্যকলাপের প্রতি তাঁদের তীব্র আপত্তির কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন মন্ত্রীরা।
জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ বিবৃতিতে চীনের সঙ্গে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান ও উসকানিমূলক কৌশলগত সামরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে উদ্বেগের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে সামরিক সহযোগিতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তারা।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন জাপানে যুক্তরাষ্ট্র সেনা কমান্ড পুনর্গঠন করতে চান। জাপানে বর্তমানে প্রায় ৫৪ হাজার যুক্তরাষ্ট্র সেনা রয়েছে। এই সেনা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই ইন্দো-প্যাসিফিক কমান্ডের অধীনে পরিচালিত হয়, যা ৬ হাজার ৫০০ মাইল দূরে। সেখানে যোগাযোগ করতে ১৯ ঘণ্টা সময়ের ব্যবধান থাকে। গতকাল বৈঠকের পর নতুন জয়েন্ট ফোর্স হেডকোয়ার্টার্সের ঘোষণা দেন। এটি তিন তারকাচিহ্নিত কমান্ডারের অধীনে পরিচালিত হবে।
জাপান দীর্ঘদিন সামরিক ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ হিসেবে কাজ করেছে। তবে সম্প্রতি চীন সম্পর্কে অস্বস্তি এবং উত্তর কোরিয়া নিয়ে শঙ্কা থেকে প্ররোচিত হয়ে জাপান তাদের প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়িয়েছে এবং পাল্টা আক্রমণের সক্ষমতা তৈরি করছে। গত এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্র প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা হোয়াইট হাউসে এক সম্মেলনে সামরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে নতুন যুগের ঘোষণা দেন।
এ মাসেই জাপান ও ফিলিপাইন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেছে, যাতে একে অপরের সীমানায় সেনা মোতায়েন করতে পারবে। জাপানের সঙ্গে এই বৈঠকের পর ব্লিঙ্কেন ও অস্টিন ফিলিপাইনে যাবেন। এর আগে গত এপ্রিলে ওয়াশিংটনে জাপান, ফিলিপাইন ও যুক্তরাষ্ট্র ত্রিপক্ষীয় আলোচনায় বসে। ফিলিপাইন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি চাপা দিয়ে বাইডেনের সঙ্গে গত আগস্টে ক্যাম্প ডেভিডে বৈঠকে বসেন।
জাপানের এই ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের আগে অস্টিন ও মিনোরার সঙ্গে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শিন ওন-শিক। গত ১৫ বছরের মধ্যে কোনো দক্ষিণ কোরীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এটাই প্রথম জাপান সফর। তাঁরা তথ্য আদান-প্রদান এবং ত্রিপক্ষীয় মহড়াসহ সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে একটি সহযোগিতা স্মারক সই করেছে। সূত্র: প্রথম আলো।