বিমর্ষ, বিধ্বস্ত কেট মিডলটন, বেদনার চাদরে ঢেকে আছে বৃটেন
- প্রকাশের সময় : ০৫:৫৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
- / ৩৬ বার পঠিত
বিমর্ষ। বিধ্বস্ত চেহারা কেট মিডলটনের। এই অবস্থায় ক্যামেরার সামনে এসে নিজের মুখে ঘোষণা দিলেন। জানালেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত তিনি। কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। মাত্র ৪২ বছর বয়সী ভবিষ্যতরানী কেটের এ ঘোষণায় বৃটেন যেন বেদনার চাদরে ঢেকে গেছে। তাকে যারা ভালবাসেন, বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ। রাজনীতিক থেকে শুরু করে সেলিব্রিটি, সাধারণ জনগণ সবার চোখেই বেদনাশ্রু। তারা তো কেটের মধ্যে প্রয়াত প্রিন্সেস ডায়ানার বৈশিষ্ট দেখতে পেয়েছিলেন। হয়তো তিনি হতে পারেন ভবিষ্যতে বৃটিশ রাজসিংহাসনের অধিকারী।
কিন্তু একি খবর শুনলেন তারা! এমন খবর প্রচার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যুবক, যুবতী, ছেলেবুড়ো অনেকেই বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের বাইরে এসে ভিড় করছেন। তাদের হৃদয়ে কেট মিডলটনের প্রতি যে ভালবাসা তা যেন হাতে করে পৌঁছে দিতে চান।
এ সংবাদে শুধু বৃটেন নয়, সারাবিশ্বে নাড়া লেগেছে। টেলিভিশনে সংবাদ শিরোনাম হচ্ছেন কেট মিডলটন। সবার প্রত্যাশা ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করে তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে ফিরে আসবেন স্বরূপে। অনলাইন ডেইলি মেইল লিখেছে, কেট মিডলটনের এই দুঃসময়ে পুরো দেশ তার পিছনে ঐক্যবদ্ধ। তার প্রতি শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও দ্রুত রোগমুক্তির কামনা পাঠিয়েছেন সব শ্রেণির মানুষ।
দু’বছর আগে অন্ত্রের (বাওয়েল) ক্যান্সারে আক্রান্ত হন টনি হাজেল। তার মা পলা হাজেল ডিসেম্বরে ইভেলিনা লন্ডন চিলড্রেনস হাসপাতারে সাক্ষাৎ পেয়েছিলেন কেট মিডলটনের। তিনি তার জন্য প্রার্থনা করছেন। কেট মিডলটনকে পরামর্শ দিয়েছেন সামনে যে দিনগুলো আসবে তাকে যেন তিনি ভোগ করেন। কেট মিডলটনকে সমর্থন জানিয়ে বার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। প্রিন্সেস অব ওয়েলস কেটের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল সেলেব্রিটি গিওভান্না ফ্লেচার ও ড. অ্যালেক্স জর্জের। ক্যান্সারের ঘোষণা দেয়ার পর তারাসহ অসংখ্য সেলিব্রেটি শুভ কামনা জানিয়েছেন কেটকে।
শুক্রবার রাতে যখন কেট মিডলটন এই ঘোষণা দেন তখন নৈশক্লাবগুলোতে পানীয় পানের আসর বসেছিল। কিন্তু টেলিভিশনে এ খবর দেখার পরই তারা কথা বন্ধ করে দেন। হা করে তাকিয়ে থাকেন টিভির দিকে। লন্ডনে একটি পাব-এ একজন নারী ও একজন পুরুষকে এই ঘোষণার সময় একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করতে দেখা যায়। হতাশাজনক এই ঘোষণা দেয়ার পর থেকে সাধারণ মানুষকে লন্ডনে রাজপ্রাসাদগুলোর বাইরে জড়ো হতে দেখা যায়। বাকিংহাম রাজপ্রাসাদের বাইরে অবস্থান নেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। প্রিন্স ও প্রিন্সেস অব ওয়েলসের সরকারি বাসভবন কেনসিংটন প্যালেস। তার বাইরেও সাধারণ মানুষের ভিড় জমে ওঠে। একজন নারী বলে ওঠেন, এই খবর অবিশ্বাস্যরকম বেদনার। যখন কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, তখন তা শুনতে ভয়াবহ মনে হয়। ঠিক এই মুহূর্তে তার পরিবার কি অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমি তা কল্পনাও করতে পারছি না। আমি আশা করি তারা সবকিছুই করবেন। তিনি যেন সুস্থ হন এ জন্য তারা সম্ভব সব করবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নিউজ চ্যানেলগুলো সন্ধ্যা থেকে আপডেট পেতে ভিড় করতে থাকে রাজপ্রাসাদগুলোর বাইরে। কেট মিডলটনের জীবনযুদ্ধে সাহসী লড়াইয়ের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তিনি বলেছেন, কেট মিডলটনের প্রতি পুরো দেশের ভালবাসা ও সমর্থন আছে। এ সময় চিকিৎসা অব্যাহত থাকাকালীন তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কেট মিডলটনের ঘোষণার স্বল্প সময় পরেই প্রধানমন্ত্রী বিবৃতিতে বলেন, প্রিন্সেস অব ওয়েলস (কেট মিডলটন), প্রিন্স অব ওয়েলস (প্রিন্স উইলিয়াম), রাজপরিবার, বিশেষ করে কেট মিডলটনের তিন সন্তানের এই কঠিন সময়ে তাদের প্রতি আমার সহানুভূতি। প্রিন্সেস অব ওয়েলসের অব্যাহত রোগমুক্তি কামনায় পুরো দেশ তার প্রতি ভালবাসা ও সমর্থন জানাচ্ছে।
লেখক ও পডকাস্ট উপস্থাপক গিওভান্না ফ্লেচার বলেছেন, আমার এবং আমাদের পক্ষ থেকে আপনাকে এবং আপনার পরিবারের প্রতি ভালবাসা। পরে এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, শব্দরা হারিয়ে যাচ্ছে। শুধু জল্পনা। কন্সপিরেসি। দ্য ইনটাইটেলমেন্ট। তার জগতে, তার হৃদয়ে এখন কত কিছুই না চলছে! এতকিছু ঘটছে যে তিনি তার ছোট বাচ্চাদের রক্ষার জন্য সাবধানতা অবলম্বন করছেন। সব সময় মর্যাদা, দয়া ও সহানুভূমির সঙ্গে নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রিন্সেস অব ওয়েলস। তার সঙ্গে কাজ করলে সর্বদা সর্বশ্রেষ্ঠ পাঠ দেয় যে, কিভাবে যত্ন নিতে হবে। কিভাবে অন্যের কথা শুনতে হবে। কিভাবে মানবিক হতে হবে। আমাদের ভবিষ্যতরানীর কথা ভাবছি আমি। আশা করছি তিনি সবার শুভকামনা পাবেন। কিছুই এর অবশিষ্ট থাকবে না। তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং পরিবারের প্রতি ভালবাসা দিয়ে নিজেকে ঘিরে রেখেছেন। সূত্র : মানবজমিন
হককথা/নাছরিন