নিউইয়র্ক ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তীব্র শীতে মঙ্গোলিয়ায় মারা গেছে ২০ লাখ প্রাণী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ১১২ বার পঠিত

তীব্র ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের কারণে এবারের শীত মৌসুমে মঙ্গোলিয়ায় অন্তত ২০ লাখ প্রাণী মারা গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। স্থলবেষ্টিত দেশটিতে ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তীব্র শীত বয়ে যায়। এমনকি কিছু এলাকায় তাপমাত্রা -৫০ (মাইনাস) ডিগ্রিতে নেমে যায়।

জাতিসংঘ সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছর শীত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তীব্র হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে কম তাপমাত্রা ও খুব ভারী তুষারপাত হয়েছে। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা গান্টুলগা বাতসাইখান বলেছেন, “সোমবার পর্যন্ত অন্তত ২১ লাখ প্রাণী অনাহার ও তীব্র শীতে মারা গেছে। সরকারী পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের শেষে ভেড়া, ছাগল, ঘোড়া এবং গরুসহ এ ধরণের ৬ কোটি ৪৭ লাখ প্রাণী ছিল। তাপমাত্রা অতিরিক্ত নেমে গেলে বিপুল সংখ্যক গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটে থাকে।

জাতিসংঘ বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা অতিরিক্ত নেমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এমন আবহাওয়া “জুড” নামে পরিচিত। মঙ্গোলিয়া এক দশকে ছয়টি জুডের সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে ২০২২-২৩ সালের শীতকালসহ অন্তত ৪৪ লাখ পশুসম্পদ মারা গেছে। পালিত পশু শীতে বেঁচে থাকার জন্য যে প্রয়োজনীয় ফ্যাট তৈরি করে শরীরে, অতিরিক্ত শীতের কারণে এ বছর সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

জাতিসংঘ বলছে, মঙ্গোলিয়ার ৭০% মানুষ “জুড” কিংবা এর কাছাকাছি পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল অন্তত ১৭%। পশুপালক তুভশিনবায়ার বয়াম্বা এএফপিকে বলেন, শীত শুরু হয়েছিল ভারী তুষার দিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও তুষার গলে যায়।

তিনি বলেন, তারপর আবার তাপমাত্রা কমে যায়, গলে যাওয়া তুষারকে বরফে পরিণত করে। গবাদি পশু এ বরফের কারণে ঘাস খেতে পারে না। তিনি আরও বলেন, পশু চরতে পারছে না। খেতে পারছে না। ফলে পশুপালককে খাদ্যের জন্য অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তুভশিনবায়ার বলেন, আজকাল আবহাওয়ার পরিবর্তনগুলি হঠাৎ করেই হয়। কিছুই বোঝা যায় না।

২০১০-১১ সালের শীতকালেও ভয়ংকর “জুড” পড়ে সেবার এক কোটির বেশি প্রাণী মারা গিয়েছিল। যা ওই সময়ে দেশের মোট পশু সম্পদের প্রায় এক চতুর্থাংশ। ১৯৭৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি তুষারপাতে পশুপালকদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। মঙ্গোলিয়া বিশ্বের সবচেয়ে কম জনবহুল দেশের মধ্যে একটি। দেশটির ৩৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যাযাবর। সরকার কৃষকদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরই মধ্যে পশুপালকদের খড় সরবরাহ করার জন্য একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত দেশটির কৃষকদের প্রার্থনা আবহাওয়ার উন্নতি।

তুভশিনবায়ার বলেন, “পশুপালক হওয়া খুব কঠিন হয়ে উঠছে। আমরা গ্রীষ্মে খরা এবং বন্যা এবং শীতকালে জুডের শিকার হচ্ছি।” তিনি বলেন, “আগামী মাসগুলোতে তুষার না গললে আমি আমার প্রাণী হারাতে শুরু করব।” “সব পশুপালক এই বরফ গলতে উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য প্রার্থনা করছে, যাতে আমাদের প্রাণীরা ঘাস খেতে পায়,” যোগ করেন এই কৃষক। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

তীব্র শীতে মঙ্গোলিয়ায় মারা গেছে ২০ লাখ প্রাণী

প্রকাশের সময় : ১১:৩৮:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তীব্র ঠাণ্ডা ও তুষারপাতের কারণে এবারের শীত মৌসুমে মঙ্গোলিয়ায় অন্তত ২০ লাখ প্রাণী মারা গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। স্থলবেষ্টিত দেশটিতে ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত তীব্র শীত বয়ে যায়। এমনকি কিছু এলাকায় তাপমাত্রা -৫০ (মাইনাস) ডিগ্রিতে নেমে যায়।

জাতিসংঘ সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, এ বছর শীত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তীব্র হয়েছে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে কম তাপমাত্রা ও খুব ভারী তুষারপাত হয়েছে। দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা গান্টুলগা বাতসাইখান বলেছেন, “সোমবার পর্যন্ত অন্তত ২১ লাখ প্রাণী অনাহার ও তীব্র শীতে মারা গেছে। সরকারী পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালের শেষে ভেড়া, ছাগল, ঘোড়া এবং গরুসহ এ ধরণের ৬ কোটি ৪৭ লাখ প্রাণী ছিল। তাপমাত্রা অতিরিক্ত নেমে গেলে বিপুল সংখ্যক গবাদি পশুর মৃত্যু ঘটে থাকে।

জাতিসংঘ বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা অতিরিক্ত নেমে যাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এমন আবহাওয়া “জুড” নামে পরিচিত। মঙ্গোলিয়া এক দশকে ছয়টি জুডের সম্মুখীন হয়েছে। যার মধ্যে ২০২২-২৩ সালের শীতকালসহ অন্তত ৪৪ লাখ পশুসম্পদ মারা গেছে। পালিত পশু শীতে বেঁচে থাকার জন্য যে প্রয়োজনীয় ফ্যাট তৈরি করে শরীরে, অতিরিক্ত শীতের কারণে এ বছর সেটি সম্ভব হচ্ছে না।

জাতিসংঘ বলছে, মঙ্গোলিয়ার ৭০% মানুষ “জুড” কিংবা এর কাছাকাছি পরিস্থিতির শিকার হয়েছে। যা আগের বছরে ছিল অন্তত ১৭%। পশুপালক তুভশিনবায়ার বয়াম্বা এএফপিকে বলেন, শীত শুরু হয়েছিল ভারী তুষার দিয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে বাতাসের তাপমাত্রা বেড়ে যায় ও তুষার গলে যায়।

তিনি বলেন, তারপর আবার তাপমাত্রা কমে যায়, গলে যাওয়া তুষারকে বরফে পরিণত করে। গবাদি পশু এ বরফের কারণে ঘাস খেতে পারে না। তিনি আরও বলেন, পশু চরতে পারছে না। খেতে পারছে না। ফলে পশুপালককে খাদ্যের জন্য অর্থ ব্যয় হচ্ছে। তুভশিনবায়ার বলেন, আজকাল আবহাওয়ার পরিবর্তনগুলি হঠাৎ করেই হয়। কিছুই বোঝা যায় না।

২০১০-১১ সালের শীতকালেও ভয়ংকর “জুড” পড়ে সেবার এক কোটির বেশি প্রাণী মারা গিয়েছিল। যা ওই সময়ে দেশের মোট পশু সম্পদের প্রায় এক চতুর্থাংশ। ১৯৭৫ সালের পর সবচেয়ে বেশি তুষারপাতে পশুপালকদের দুর্ভোগ বাড়িয়ে দিয়েছে। মঙ্গোলিয়া বিশ্বের সবচেয়ে কম জনবহুল দেশের মধ্যে একটি। দেশটির ৩৩ লাখ জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ যাযাবর। সরকার কৃষকদের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরই মধ্যে পশুপালকদের খড় সরবরাহ করার জন্য একটি প্রচারাভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে আপাতত দেশটির কৃষকদের প্রার্থনা আবহাওয়ার উন্নতি।

তুভশিনবায়ার বলেন, “পশুপালক হওয়া খুব কঠিন হয়ে উঠছে। আমরা গ্রীষ্মে খরা এবং বন্যা এবং শীতকালে জুডের শিকার হচ্ছি।” তিনি বলেন, “আগামী মাসগুলোতে তুষার না গললে আমি আমার প্রাণী হারাতে শুরু করব।” “সব পশুপালক এই বরফ গলতে উষ্ণ আবহাওয়ার জন্য প্রার্থনা করছে, যাতে আমাদের প্রাণীরা ঘাস খেতে পায়,” যোগ করেন এই কৃষক। সূত্র : বাংলাদেশ জার্নাল।