আন্তর্জাতিক ডেস্ক : উত্তর কোরিয়া দেশটির ইতিহাসের সর্ববৃহৎ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র বা আইসিবিএমের পরীক্ষা চালিয়েছে। বিষয়টি গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছে। একইসাথে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সংবাদ পরিবেশনের ধরনও ব্যাপক ধাঁধার সৃষ্টি করেছে।
২০২০ সালে হুয়াসং-১৭ নামের এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছিল পিয়ংইয়ং। তখন এটির বিশাল আকৃতি দেখে অভিজ্ঞ বিশ্লেষকরাও বিস্মিত হয়েছিলেন।
উত্তর কোরিয়া গত বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটির পরীক্ষা চালায়। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সেনাবাহিনী ক্ষেপণাস্ত্রটির উড্ডয়ন পর্যবেক্ষণ করেছে।
জাপানি কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার আইসিবিএমটি প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার উচ্চতায় ওঠার পর জাপান সাগরে পতিত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় এক ঘণ্টা শূন্যে ছিল বলে জানিয়েছে টোকিও। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম উত্তর কোরিয়া কোনো আইসিবিএমের পরীক্ষা চালাল।
এদিকে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এবার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সংবাদ প্রচারের সময় বিজয়ী সুরের পরিবর্তে হলিউডের চলচ্চিত্রের অনুকরণ করা হয়, যেমনটা আগে কোরীয়রা দেখেননি। লেদার জ্যাকেট পরিহিত কিম জং-উন, চোখে কালো চশমা, ভিডিও ইফেক্ট আর ব্যাকগ্রাউন্ডে নাটকীয় সংগীত— সবকিছুই ছিল এতে।
সংবাদ বুলেটিনের মাধ্যমেই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি জাতিকে জানানো হয়। তবে উপস্থাপনের ধরনটি ছিল অন্য রকম। দর্শকেরা ১৫ মিনিট ধরে ভিডিও ইফেক্ট, পরিকল্পিত মঞ্চায়ন এবং কিম জং-উনের চশমা সরোনার দৃশ্য দেখেছেন। চশমা সরিয়ে যেন কিম বলছিলেন, ‘চালিয়ে যাও’।
পিয়ংইয়ং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের হ্যাঙ্গারে মিসাইল লাঞ্চারের সামনে থেকে কিম ও তার জেনারেলরা যেভাবে হেঁটে আসছিলেন, ওই দৃশ্যকে কেউ কেউ ১৯৮৩ সালের ব্লকবাস্টার চলচ্চিত্র ‘দ্য রাইট স্টাফ’-এর সাথে তুলনা করেন।
উত্তর কোরিয়ার আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পরমাণু অস্ত্র বহন ও যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে সক্ষম। এর আগে এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর কারণে পিয়ংইয়ংয়ের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ।
তবে উত্তর কোরিয়া বলেছে, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে দেশটির ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা যাবে না। দেশটির রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম শুক্রবার বলেছে, উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন বৃহস্পতিবারের উৎক্ষেপণ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেছেন ও নির্দেশনা দিয়েছেন। -পার্সটুডে ও বিবিসি
হককথা/এমউএ