প্রতিবেশীর ঘরে অস্ত্র ঢোকালে যুদ্ধ বাধবে, রাশিয়ার হুঁশিয়ারি
![](https://hakkatha.com/wp-content/uploads/2024/05/hakkathafav.png)
- প্রকাশের সময় : ০৫:২২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২১
- / ১৫ বার পঠিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেন সীমান্তে সৈন্য সমাবেশ নিয়ে রাশিয়ার সাথে যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা সামরিক মিত্রদের বাদানুবাদ দিন দিন বিপজ্জনক মোড় নিচ্ছে। আর সেই বাদানুবাদের বিস্ফোরণ দেখা গেছে গত বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সুইডেনে ইউরোপীয় নিরাপত্তা বিষয়ক এক বৈঠকে।
স্টকহোমের বৈঠকে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের পাশে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট করে বলেছেন, রাশিয়া তার ঘরের পাশে ন্যাটো সামরিক জোটের নতুন কোনও তৎপরতা কোনোভাবেই সহ্য করবে না।
তিনি সতর্ক করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোট রুশ এই বার্তা অগ্রাহ্য করলে ইউরোপে আবারও যুদ্ধ শুরু হতে পারে। ইউরোপকে আবারও ‘যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন’ দেখতে হতে পারে।
সুইডেনের বৈঠকে রাশিয়া ইউরোপের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন একটি প্রস্তাব দিয়েছে যার মূল কথা, ন্যাটো জোটকে ইউরোপের পূর্বে নতুন কোনও বিস্তৃতির চেষ্টা বন্ধ করতে হবে।
ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার সেই সেই প্রস্তাব বা দাবির ব্যাপারে তাৎক্ষণিক কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি। বরং তিনি পাল্টা সতর্ক করেছেন, ইউক্রেনে যেকোনও সামরিক অভিযান চালালে রাশিয়াকে তার ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
২০১৪ সালে রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখল ও ইউক্রেনের জাতিগত রুশ অধ্যুষিত ডনবাস অঞ্চলে সশস্ত্র বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে গত সাত বছর ধরে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা ন্যাটো জোটের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, এই টানাপড়েন দিন দিন বিপজ্জনক চেহারা নিচ্ছে।
সুইডেনে বৃহস্পতিবারের বৈঠকটি হয়েছে ইউক্রেন সীমান্তে ৯০ হাজারেরও বেশি রুশ সৈন্য সমাবেশ নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে। এদিকে বৈঠকটি বহু দেশীয় হলেও আলাদাভাবে মুখোমুখি কথা বলেছেন লাভরভ ও ব্লিঙ্কেন।
যুক্তরাষ্ট্র কর্মকর্তারা পরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুইপক্ষই ইউক্রেন নিয়ে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে একমত হয়েছে। এমনকি অদূর ভবিষ্যতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়েছে। তবে কবে তা হতে পারে তা নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হয়নি।
তবে জুন মাসে সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভাতে পুতিন ও বাইডেনের মধ্যে মুখোমুখি যে বৈঠক হয়েছিল সেখানেও ইউক্রেন ও ন্যাটোর সম্প্রসারণ নিয়ে কথা হয়। কিন্তু তাতে যে কোনও ফল হয়নি তা রাশিয়ার নতুন এই সৈন্য সমাবেশের ঘটনায় স্পষ্ট।
রাশিয়া গত বছরগুলোতে বিভিন্নভাবে ইঙ্গিত দিচ্ছে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জোটের কোনও সামরিক উপস্থিতি তারা মানবে না। সপ্তাহখানেক আগে প্রেসিডেন্ট পুতিন আবারও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে এ ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
আর বৃহস্পতিবার স্টকহোমে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ খোলাখুলি বলেন, ইউক্রেন দিয়ে বিপজ্জনক কোনও পরিস্থিতি এড়ানোর কোনও সদিচ্ছা ন্যাটো দেখাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ন্যাটো জোটের সামরিক অবকাঠামো রাশিয়ার সীমান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। রোমানিয়া ও পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্র বিধ্বংসী ব্যবস্থা মোতায়েন করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ইউরোপে নিয়ে আসা হচ্ছে। যার অর্থ ইউরোপে সামরিক সংঘাতের দুঃস্বপ্ন পুনরায় ফিরে আসছে।
লাভরভ হুঁশিয়ার করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্ররা যেন ইউক্রেনসহ রাশিয়ার প্রতিবেশীদেরকে সামরিক ‘সংঘাতের চারণভূমি’ বানিয়ে না ফেলে।
অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, ইউক্রেন সীমান্তে ট্যাংক আর সৈন্য পাঠিয়ে মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকে আরেকবার আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে চাইছে। পুতিন ও বাইডেনের সাথে আরেকটি শীর্ষ বৈঠক চাইছে তারা। -বিবিসি