পাক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ইমরান খান
- প্রকাশের সময় : ১০:১৫:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ অগাস্ট ২০১৮
- / ৮৮৯ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক: পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন পাকিহমশান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারপারসন ইমরান খান। শনিবার (১৮ আগষ্ট) ইসলামাবাদে প্রেসিডেন্ট হাউজে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মামনুন হোসেন। অতিথিদের মধ্যে ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি, ওয়াসিম আকরাম, অভিনেতা জাভেদ শেখ, পাঞ্জাবের গভর্নর মনোনীত চৌধুরী সারওয়ার, পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলী স্পিকার পারভেইজ ইলাহি, রমিজ রাজা, তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাসির-উল-মুলক এবং পিটিআই নেতারা এই শপথ অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট হাউজে উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, চেয়ারম্যান জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি জুবেইর মাহমুদ হায়াত এবং চিফ অব এয়ার স্টাফ মার্শাল মুজাহিদ আনোয়ার খানও প্রেসিডেন্ট হাউজে হাজির ছিলেন। অতিথি, প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ইমরান খান আসন গ্রহণের পর জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর মাধ্যমে শপথ পাঠের আয়োজন শুরু হয়। জাতীয় সঙ্গীত শেষে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। এরপরই ইমরান খানকে শপথ পাঠ করান প্রেসিডেন্ট হোসেন। ভারতীয় ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া নভজিৎ সিং সিধু এই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি শুক্রবারই পাকিস্তান পৌঁছান। খেলার মাঠের বন্ধুর জন্য সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন কাশ্মীরি শালও।
এদিকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক কপিল দেব ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে এই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ না দেয়ার কথা জানান। শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার দাওয়াত পেয়েছিলেন সুনীল গাভাস্কারও। কিন্তু ইংল্যান্ড ও ভারতের মধ্যকার চলমান টেস্ট সিরিজে ধারাভাষ্য দেয়ার কারণে শপথ অনুষ্ঠানে আসতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন গাভাস্কার। এছাড়া ১৯৯২ সালে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্যদেরও এই শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছে। সূত্র : জিও টিভি
ইমরান খান পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী: এর আগে পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন সাবেক ক্রিকেটার ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। শুক্রবার (১৭ আগষ্ট) পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যের ভোটে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ভোটে ইমরান পেয়েছেন ১৭৬ ভোট। সংসদে তার বিরোধীদল নওয়াজ শরিফের প্রতিষ্ঠিত দল পিএমএলএন পেয়েছে ৯৬ ভোট। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এখবর জানিয়েছে।
এর আগে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করার সংসদ অধিবেশন শুরু হয় শুক্রবার ৪টা ৩০ মিনিটে। ইমরান খান ও শাহবাজ শরিফ দুই জনই নির্ধারিত সময়ে সংসদে পৌঁছেছেন। তবে সোয়া চারটা নাগাদ তারা অধিবেশন কক্ষে হাজির হন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ইমরানের প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন শাহবাজ শরিফ। পিএমএল-এন নেতা নির্বাচনে কারচুপির প্রতিবাদে হাতে কালো কাপড় বেঁধে হাজির হন। পিপিপি’র বিলাওল ভুট্টো ভোটদানে বিরত থাকার ঘোষণা দিলেও সংসদ অধিবেশনে উপস্থিত হয়েছেন। তিন নেতাই পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেছেন।
নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে ভোট দেন। তাদের ভোটে নির্বাচিত হন পাকিস্তাানের ২২ তম প্রধানমন্ত্রী। এই ভোটাভুটিতে ইমরান খানের জয়ী হয়ে আসাটা নিশ্চিত ছিল।
সংসদ সদস্যের ভোটে ইমরানের নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা দেন নতুন নির্বাচিত স্পিকার আসাদ কায়সার। ফল ঘোষণার সময় ইমরানবিরোধীরা সংসদে ‘মানি না’ বলে শ্লোগান দেয়। স্পিকার সংসদের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ বজায় রাখতে চাইলেও পিএমএল-এন সংসদ সদস্যের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকে। এসময় ইমরান খান হাসিমুখে নিজের আসনে বসে ছিলেন। একই সঙ্গে তিনি দলের নেতাদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করছিলেন।
বুধবার নতুন নির্বাচিত স্পিকার আসাদ কায়সার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করার ঘোষণা দেন।প্র্রধান বিরোধীদল নওয়াজের পাকিস্তান মুসলিম লীগ ইমরানের প্রধানমন্ত্রী হওয়া ঠেকাতে ১১ দলীয় জোট গড়ে। তবে, প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচনে তৃতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তান পিপলস পার্টির সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি দলটি।
পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের প্রধান শাহবাজ শরীফের প্রার্থিতা নিয়ে বিরোধী শিবিরে বিরোধ দেখা দেয়। পিটিআই বিরোধী জোট গঠন করলেও শেষ পর্যন্ত শাহবাজকে সমর্থন দেয়নি বেনজির ভুট্টোর দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি। তাই আগে থেকেই একরকম নিশ্চিত ছিল ইমরান খানই হতে যাচ্ছেন পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় পরিষদে শুক্রবারের নির্বাচনে ইমরান খান মোট ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রধান প্রতিপক্ষ পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের সভাপতি শাহবাজ শরীফ পান ৯৬ ভোট।
উল্লেখ্য, গত ২৫শে জুলাই পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে একক দল হিসেবে ইমরান খানের দল পিটিআই সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে বিজয়ী হয়েছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার জন্য- ছোট দলগুলোর সাহায্যের দরকার হয় তখন।