নিউইয়র্ক ০৮:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

পাঁচ মাস পর ভিয়েনায় শুরু হচ্ছে ইরান- যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:৪০:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১
  • / ১২ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পরমাণু চুক্তির স্থবিরতা ঠেকাতে পাঁচ মাস পর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে আবার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। সেখানে কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের চুক্তিতে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনতে আলোচনা করবে।

ইরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্তেই তেহরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করেছিল।

২০১৮ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসে এবং ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। এরপর থেকে ইরান চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে আসছে।

ইরান যদি এই শর্ত লঙ্ঘন থেকে সরে আসে তবে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনরায় এই চুক্তিতে ফিরতে পারে। তবে ইরান চায় যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপ নিক।

পশ্চিমা কূটনীতিকরা সতর্ক করেছেন, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কারণে, এর সমাধানে আলোচনার সময় ফুরিয়ে আসছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরির সম্ভাব্য পথ তৈরি করে দিতে পারে। তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।

ইরানের সঙ্গে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য এই পাঁচটি দেশের মধ্যে আলোচনা অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে শুরু হয়েছিল, যেখানে মার্কিন প্রতিনিধিরা পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন।

এক সিনিয়র যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তির অনেক পদক্ষেপ অনেকাংশে সম্পন্ন হয়েছে।

ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি পশ্চিমের একজন কঠোর সমালোচক। তিনি আগস্ট মাসে ইরানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি এই আলোচনা আর টেনে লম্বা করবেন না, তবে তিনি এই মাসের আগ পর্যন্ত ভিয়েনায় ফিরে যেতে রাজি হননি।

তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইরানের আলোচকরা তাদের স্বার্থ রক্ষায় কোনও অবস্থায় পিছপা হবে না।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা চায় যুক্তরাষ্ট্র যেন অপরাধ স্বীকার করে; তারা যেন ইরানের ওপর থেকে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে এবং তারা একটি গ্যারান্টি চায় যেন পরবর্তীতে আর কোনও ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট একতরফাভাবে চুক্তি ত্যাগ না করে।

ইরানের বিষয়ে বাইডেনের বিশেষ দূত রবার্ট ম্যালি বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াসহ চুক্তিতে ফিরে আসতে তারা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

তবে ম্যালি ইরানকেও সতর্ক করে বলেছেন, আলোচনার দরজা… সব সময় খোলা থাকবে না। এটি একটি ক্রোনোলজিক্যাল ঘড়ি নয়, এটি একটি টেকনোলজিক্যাল বা প্রযুক্তিগত ঘড়ি। কিছু ক্ষেত্রে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা জেসিপিওএ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারণ ইরান এমন অগ্রগতি করবে যা আর বদলানো যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা কথা বলতে পারি না – আপনি একটা মরা দেহে প্রাণ দিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরান যদি সরল বিশ্বাসে আলোচনা না করে এবং তার পরমাণু কর্মসূচি বাক্স বন্দি না করে তাহলে এ বিষয়ে কেমন ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটার প্রতিটি বিকল্প টেবিলে রয়েছে।

জেসিপিওএ-র আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন, যা ব্যাপকভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। -বিবিসি

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

পাঁচ মাস পর ভিয়েনায় শুরু হচ্ছে ইরান- যুক্তরাষ্ট্র পরমাণু আলোচনা

প্রকাশের সময় : ০৪:৪০:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পরমাণু চুক্তির স্থবিরতা ঠেকাতে পাঁচ মাস পর অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে আবার গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা শুরু হতে যাচ্ছে। সেখানে কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের চুক্তিতে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিরিয়ে আনতে আলোচনা করবে।

ইরানের ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্তেই তেহরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম সীমিত করেছিল।

২০১৮ সালে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে সরে আসে এবং ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। এরপর থেকে ইরান চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করে আসছে।

ইরান যদি এই শর্ত লঙ্ঘন থেকে সরে আসে তবে বর্তমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনরায় এই চুক্তিতে ফিরতে পারে। তবে ইরান চায় যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে প্রথম পদক্ষেপ নিক।

পশ্চিমা কূটনীতিকরা সতর্ক করেছেন, ইরান তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির কারণে, এর সমাধানে আলোচনার সময় ফুরিয়ে আসছে, যা পারমাণবিক বোমা তৈরির সম্ভাব্য পথ তৈরি করে দিতে পারে। তবে ইরান জোর দিয়ে বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ।

ইরানের সঙ্গে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য এই পাঁচটি দেশের মধ্যে আলোচনা অস্ট্রিয়ার রাজধানীতে শুরু হয়েছিল, যেখানে মার্কিন প্রতিনিধিরা পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন।

এক সিনিয়র যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা যুক্তরাষ্ট্রের দৈনিক নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, জুনে ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তির অনেক পদক্ষেপ অনেকাংশে সম্পন্ন হয়েছে।

ইরানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি পশ্চিমের একজন কঠোর সমালোচক। তিনি আগস্ট মাসে ইরানের দায়িত্ব নেওয়ার আগে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি এই আলোচনা আর টেনে লম্বা করবেন না, তবে তিনি এই মাসের আগ পর্যন্ত ভিয়েনায় ফিরে যেতে রাজি হননি।

তিনি জোর দিয়ে বলেছিলেন, ইরানের আলোচকরা তাদের স্বার্থ রক্ষায় কোনও অবস্থায় পিছপা হবে না।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা চায় যুক্তরাষ্ট্র যেন অপরাধ স্বীকার করে; তারা যেন ইরানের ওপর থেকে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে এবং তারা একটি গ্যারান্টি চায় যেন পরবর্তীতে আর কোনও ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট একতরফাভাবে চুক্তি ত্যাগ না করে।

ইরানের বিষয়ে বাইডেনের বিশেষ দূত রবার্ট ম্যালি বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়াসহ চুক্তিতে ফিরে আসতে তারা প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।

তবে ম্যালি ইরানকেও সতর্ক করে বলেছেন, আলোচনার দরজা… সব সময় খোলা থাকবে না। এটি একটি ক্রোনোলজিক্যাল ঘড়ি নয়, এটি একটি টেকনোলজিক্যাল বা প্রযুক্তিগত ঘড়ি। কিছু ক্ষেত্রে জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন বা জেসিপিওএ অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারণ ইরান এমন অগ্রগতি করবে যা আর বদলানো যাবে না। এক্ষেত্রে আমরা কথা বলতে পারি না – আপনি একটা মরা দেহে প্রাণ দিতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ইরান যদি সরল বিশ্বাসে আলোচনা না করে এবং তার পরমাণু কর্মসূচি বাক্স বন্দি না করে তাহলে এ বিষয়ে কেমন ব্যবস্থা নেয়া হবে সেটার প্রতিটি বিকল্প টেবিলে রয়েছে।

জেসিপিওএ-র আলোচনার কেন্দ্রে ছিল ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের উৎপাদন, যা ব্যাপকভাবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। -বিবিসি