আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ন্যাটোতে ইউক্রেনের যোগদানের পরিকল্পনা প্রত্যাহার করার ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন যে, যুদ্ধবিরতি, রুশ সেনা প্রত্যাহার এবং ইউক্রেনের নিরাপত্তার গ্যারান্টির বিনিময়ে ন্যাটো সদস্যপদ না চাওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে আলোচনা করতে তিনি প্রস্তুত।
সোমবার ইউক্রেনের এক টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জেলেনস্কি বলেন, এটি হবে সবার জন্য একটি আপস। পশ্চিমাদের জন্য- যারা ন্যাটো সম্পর্কে আমাদের সঙ্গে কী করা হবে তা জানে না। ইউক্রেনের জন্য- যারা নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায়। রাশিয়ার জন্য- যারা ন্যাটোর আর সম্প্রসারণ চায় না। খবর আল জাজিরার
জেলেনস্কি বলেছেন, যুদ্ধবিরতি এবং নিরাপত্তা গ্যারান্টির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের পর ক্রিমিয়া এবং রাশিয়ান-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে থাকা পূর্ব ডনবাস অঞ্চলের অবস্থা নিয়েও আলোচনা করতে প্রস্তুত কিয়েভ।
একমাস হতে চললো ইউক্রেনে রুশ হামলার। দুই পক্ষেরই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমন অবস্থায় আবারও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ চেয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
পুতিনের কাছে সরাসরি জানতে চান যে, যুদ্ধে ইতি টানার কোনো সদিচ্ছা আদৌ রয়েছে কি না। এছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে মনে করছেন জেলেনস্কি। স্থানীয় সময় সোমবার একথা বলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রক্রিয়া যাই হোক না কেন, যুদ্ধে ইতি টানতে হলে ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনা অত্যন্ত প্রয়োজন। অন্যথায়, যুদ্ধ থামাতে রাশিয়া কতদূর এগোতে প্রস্তুত, তা জানা বোঝা সম্ভব নয় বলেই মনে হয় আমার। ওর সঙ্গে সমঝোতা করতে প্রস্তুত আমি। যুদ্ধ সমাপ্তির যদি ১ শতাংশ সম্ভাবনাও থাকে, এই পদক্ষেপ করতেই হবে আমাদের। সমঝোতা এবং পুতিনের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার দিকে এগোতে হবে। সমঝোতায় না এলে, যুদ্ধে সমাপ্তি ঘটানো সম্ভব নয়।’
দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েনের পর গত মাসের ২৪ তারিখ হঠাৎ করে ইউক্রেনের অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন পুতিন। এরপরই দেশটিতে অভিযান শুরু করে রুশ বাহিনী।
বেলারুশ সীমান্তে এ নিয়ে দফায় দফায় দুই দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনা হলেও এখনও পর্যন্ত সমঝোতায় এসে পৌঁছনো যায়নি। বরং ইউক্রেনে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের কথা মেনে নিয়েছে রাশিয়া।
কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ২০০ ইউক্রেনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছেন প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ। শরণার্থী হিসেবে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। অন্যদিকে, কিয়েভের দাবি, যুদ্ধে ১৪ হাজার ৭০০ রুশ সৈনিকের মৃত্যু হয়েছে।
রাশিয়াকে আটকাতে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছে পশ্চিমা দেশগুলো। সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে চাইছে তারা। তবে এখন পর্যন্ত এসব নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়া পিছু হটেনি।
হককথা/এমউএ