২১ দিনে রিজার্ভ কমল পৌনে দুই বিলিয়ন ডলার
- প্রকাশের সময় : ০৮:০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২৪
- / ১৩৫ বার পঠিত
হককথা ডেস্ক : দেশে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ডলারের সংকট। এ সংকট উত্তরণের অন্যতম উপায় হলো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় বাড়ানো। কিন্তু সেখানে ভালো খবর নেই। অন্যদিকে আমদানির চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় বা রিজার্ভ ঘুরেফিরে কমতির দিকেই আছে।
৩ জানুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার। সংকটের কারণে ডলার বিক্রি অব্যাহত থাকায় ২১ দিনে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫২৩ কোটি ডলারে। অর্থাৎ এই ২১ দিনে রিজার্ভ থেকে ১৭৬ কোটি ৩০ ডলার কমে গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদন থেকে রিজার্ভের এ চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৩৩ কোটি (২৫ দশমিক ২৩ বিলিয়ন) ডলারে। আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী বিপিএম-৬ মেথডের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবের সঙ্গে ৫২১ কোটি (৫.২১ বিলিয়ন) ডলারের পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ বিপিএম-৬ ম্যানুয়াল অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ এখন ২ হাজার ২ কোটি ডলার বা ২০ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ২১ দিনে গ্রস রিজার্ভ কমেছে ১৭৭ কোটি ডলার ( ১ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন) এবং বিপিএম-৬ অনুযায়ী কমেছে ১৭২ কোটি ডলার (১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন)।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের শুরুতে গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৯.৭৩ বিলিয়ন ডলার আর বিপিএম-৬ অনুযায়ী ছিল ২৩ দশমকি ৩৭ বিলিয়ন ডলার।
এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়, প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সেই হিসাবে দেশের প্রকৃত রিজার্ভ এখন ১৬ বিলিয়ন ডলারের নিচে। প্রতি মাসে প্রায় ৬ বিলিয়ন ডলার করে এ রিজার্ভ দিয়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো কষ্টসাধ্য হবে বাংলাদেশের জন্য। সাধারণত একটি দেশের ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই মানদণ্ডে বাংলাদেশ এখন শেষ প্রান্তে রয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাজারে প্রচুর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া এ মাসে আকুর বিলও পরিশোধ হয়েছে। রপ্তানি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ কম থাকায় রিজার্ভ কমছে।
কীভাবে তৈরি হয় রিজার্ভ
রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ, বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ থেকে যে ডলার পাওয়া যায় তা দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তৈরি হয়। আবার আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ বা কিস্তি পরিশোধ, বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা, পর্যটক বা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাসহ বিভিন্ন খাতে যে ব্যয় হয়, তার মাধ্যমে বিদেশি মুদ্রা চলে যায়। এভাবে আয় ও ব্যয়ের পর যে ডলার থেকে যায় সেটাই রিজার্ভে যোগ হয়। আর বেশি খরচ হলে রিজার্ভ কমে যায়।
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি ও বিভিন্ন পণ্যের দাম বেশি থাকায় আমদানি ব্যয় কমেনি। এছাড়া করোনার পর বৈশ্বিক বাণিজ্য এখনো আগের অবস্থায় ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে, যা এখনো অব্যাহত আছে। এ সংকট দিন দিন বাড়ছে।
রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি
বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে রিজার্ভ থেকে নিয়মিত ডলার বিক্রি করে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সময়ে বাণিজ্যিক কিছু ব্যাংক থেকে এক বিলিয়ন ডলারের মতো কেনে বাংলাদেশ ব্যাংক, যার পরিমাণ ১ বিলিয়ন ডলারের মতো।
২০২২-২৩ অর্থবছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ১৩ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার বিক্রি করেছিল। তার আগের অর্থবছরে ( ২০২১-২২) ডলার বিক্রি করেছিল ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার।সূত্র : বণিক বার্তা সূত্র : ঢাকা পোস্ট
হককথা/নাছরিন