উচ্চ শুল্কের কারণে ক্ষতির মুখে সিমেন্টশিল্প
- প্রকাশের সময় : ০৩:৫১:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
- / ৬৮ বার পঠিত
২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে প্রতি টনে শুল্ক ৫০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করা হয়েছে। এতে সিমেন্ট উৎপাদনকারীরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। উদ্যোক্তারা বলছেন, ক্লিংকার আমদানিতে শুল্ক কমিয়ে টনপ্রতি ২০০ টাকা করতে অনুরোধ করা হয়েছিল। চলতি বাজেটে উল্টো আরো ২০০ টাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই শিল্পের বর্তমান সংকট বিবেচনায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে ক্লিংকার আমদানিতে শুল্ক কমানোর প্রস্তাব দিয়েছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। রবিবার এনবিআর কর্তৃক আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনায় (২০২৪-২৫) সিমেন্ট খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ সিমেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিসিএমএ) নেতারা শুল্ক কমানোর আহ্বান জানান।
প্রাক-বাজেট আলোচানায় উদ্যোক্তারা বলেন, ‘কোনো শিল্পের কাঁচামালের ওপর কাস্টম ডিউটি সাধারণত আমদানি মূল্যের ওপর প্রায় ৫ শতাংশ হয়। কিন্তু সিমেন্টের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার আমদানিতে প্রতি টনে ৭০০ টাকা কাস্টম ডিউটি আদায় করার ফলে কাস্টম ডিউটি দাঁড়ায় আমদানি মূল্যের প্রায় ১৪ শতাংশ।
এভাবে প্রধান কাঁচামালের আমদানি মূল্যের ওপর ১৪ শতাংশ কাস্টম ডিউটি সিমেন্টশিল্প মালিকদের কাছে অসামঞ্জস্য বিবেচিত হচ্ছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে সিমেন্টের বাজারে ভোক্তার ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে এবং সার্বিক নির্মাণ কার্যক্রমে গতি হারানোর উপক্রম হচ্ছে। তাই আমরা দাবি জানাচ্ছি ক্লিংকারের ওপর কাস্টম ডিউটি প্রতি টনে ২০০ টাকা করা হোক।’ সিমেন্টের পাঁচটি কাঁচামাল আমদানিতে অগ্রিম আয়কর ধার্য করা হয়েছে।
ক্লিংকারে ২ শতাংশ, স্লাগে ৩ শতাংশ, লাইমস্টোনে ৩ শতাংশ, ফ্লাই অ্যাশে ৩ শতাংশ, জিপসামে ৫ শতাংশ। আমদানি পর্যায় ছাড়াও সিমেন্ট বিক্রয় পর্যায়ে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধার্য করা আছে। যার ফলে লোকসান করেও এখন আয়কর দিতে হচ্ছে। তাই আমরা আমদানি ও বিক্রয় পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর সর্বোচ্চ ০.৫০ শতাংশ ধার্য করার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। বিসিএমএর নেতারা বলছেন, ‘ক্লিংকার আমদানিতে বাড়তি শুল্ক ছাড়াও বর্তমানে বিভিন্ন কারণে সিমেন্টশিল্প খাতে চরম সংকট অবস্থা বিরাজ করছে।
ডলারের সঙ্গে টাকার অবমূল্যায়ন ও ডলার সংকটের কারণে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে ব্যাংকের অনাগ্রহ, জ্বালানি গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, গ্যাস সরবরাহের অপর্যাপ্ততা ও নির্মাণ কার্য হ্রাস পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে গত দুই বছরে সিমেন্ট খাতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ অবস্থায় যেখানে সরকারের শুল্ক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আবশ্যকতা ছিল, তার পরিবর্তে সরকার অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে এই খাতের সংকট আরো তীব্র থেকে তীব্রতর করে দিচ্ছে, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।’
সিমেন্টশিল্পের জন্য ভ্যাট নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ট্যারিফ পদ্ধতি প্রবর্তন করার দাবি জানিয়ে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ‘বর্তমান আইন অনুযায়ী মূল্য সংযোজন কর—ভ্যাট বিভিন্ন কম্পানির জন্য ভিন্ন ভিন্ন মূল্যের ওপর ধার্য করা হয়। তাই ভ্যাট ধার্য করার জন্য ট্যারিফ পদ্ধতি প্রবর্তনের দাবি করছি।’ সব সিমেন্ট উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে একই হারে প্রতি টনে ভ্যাট আদায় করা দাবি তাঁদের। ট্যারিফ পদ্ধতি প্রবর্তন করলে ভ্যাট নিয়ে মতপার্থক্য দূরীভূত হবে বলেও তাঁরা জানান। সূত্র : কালের কণ্ঠ।