নিউইয়র্ক ০৯:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে বাজেটের আকার ছোট ॥ ঘাটতি পূরণ ব্যাংক ঋণ থেকেই

হককথা ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৩৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪
  • / ৫৮ বার পঠিত

গতকাল শুক্রবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী

অর্থমন্ত্রী হিসাবে জাতীয় সংসদে নিজের প্রথম বাজেট উত্থাপনের পর দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রীর এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য কয়েকটি দপ্তরের মন্ত্রী ও সচিবরাও তার সঙ্গে ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি। প্রস্তাবিত এই ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের (৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা) চেয়ে ১১.৫৬ শতাংশ বেশি। টাকার ওই অংক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৪.২৪ শতাংশের সমান। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দেওয়া বাজেটের আকার ছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের ১৫.৩৩ শতাংশ বেশি এবং জিডিপির ১৫.২১ শতাংশের সমান। প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে চেপে রেখে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করার পরিকল্পনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য দেশীয় উৎস থেকে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব যোগান দেয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন মাহমুদ আলী। তাতে ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঘাটতি থেকে যাবে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলেছে, আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর যে লক্ষ্য নতুন অর্থবছরের বাজেটে নেওয়া হয়েছে, তা পূরণে বাস্তবসম্মত কোনো দিক নির্দেশনা অর্থমন্ত্রীর পরিকল্পনায় তারা দেখছে না।

রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পরদিন বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রাণবন্ত ছিল সাংবাদিক সম্মেলন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অর্থমন্ত্রীর বিরক্তি প্রকাশ ও প্রশ্নের অবমূল্যায়ন করা বক্তব্যে একাধিকবার হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে অর্থমন্ত্রী বারবার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দারস্থ হন। প্রথম থেকেই বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে বিরক্তবোধ করেছেন অর্থমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি বাজেটের নানা বিষয়ে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের মান এবং ম্যাচিউরিটি নিয়েও কথা বলেছেন। পুরো সংবাদ সম্মেলনজুড়েই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটের বিষয়ে যে পর্যায়ের প্রশ্ন আশা করেছিলাম সেরকম হয়নি। তবে বেশ কয়েকজনের প্রশ্ন বেশ ভালো ছিল। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একেবারেই নন-সিরিয়াস প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার যোগ্য না আমি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি একটু ম্যাচিউরড প্রশ্ন আশা করেছিলাম। আমি খুবই নিরাশ হয়েছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) আরো একটু পড়ে আসবেন। এভাবে অতি সরলীকরণ করবেন না। একটু ম্যাচুউরিটি নিয়ে আসেন। যারা আর্থিক খাতের বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য আপনার কী বার্তা থাকবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো খোলাখুলি সব বলেছি। কোনো রাখঢাক করিনি। আপনি ঘুরেফিরে একই কথায় যাচ্ছেন কেন? এইটা তো বুঝতে পারলাম না। এটা কী ধরনের প্রশ্ন! কীভাবে প্রশ্ন করে এগুলো একটু শিখতে হবে তো। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে। এটা কোনো জার্নালিজম না। খালি এক কথাই ঘুরে ফিরে বলেন। এগুলো একটু দেখেন। দেখে একটু শেখেন। তাহলে আমাদেরও কাজ করতে সুবিধা হবে।

ক্ষুব্ধ হয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রশ্ন হয় না। আপনারা পড়াশোনা করে এসে প্রশ্ন করেন। সাংবাদিকরা যেভাবে সরলীকরণ করে অর্থনীতির প্রশ্ন করে, অর্থনীতি এত সহজ না। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বড় অংশ পেনশন ও ভর্তুকিতে যাবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি এই প্রশ্নে উত্তর দেব না। এটা কোনো প্রশ্ন হয়নি। এটা আনসিরিয়াস প্রশ্ন।

বাজেটে কীভাবে মূল্যস্ফীতি সামাল দেয়া হবে এবং এক বছরে কীভাবে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার বাড়াবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা ভাবেন এভাবে প্রশ্ন করলে উত্তর দেব আমি। আমি উত্তর দেব না। আপনারা পড়াশোনা করে এসে প্রশ্ন করেন। ইকোনমিক জোন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মনোভাব প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকদের করা আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা ডিসিসিআই-এফবিসিসিআইয়ের কথা শোনেন নাই। আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছেন। না জেনে প্রশ্ন করেন কেন।

প্রশ্নের পরিবর্তে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশংসা করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনার কথা আমার ভালো লেগেছে। প্রশ্ন এমন হওয়া উচিত। আপনারা প্রশ্ন করা শিখবেন।

দুপুর ৩টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন শুরু হয়। এটির আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। সঞ্চালনা করেছেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিকল্পনা মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সঙ্কোচনমূলক পদক্ষেপ আরও কিছুদিন চলবে। এর মাঝেও প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার চেষ্টা করব, যেটা এখন চলতি অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হিসাবে প্রাক্কলন করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে ধরে রাখার চেষ্টা করব।

২০২৬ সালে ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান মাহমুদ আলী। পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতি ও জলবায়ু নিয়ে গবেষণায় বরাদ্দ রাখার কথা বলেন। ব্যক্তিখাতকেও এ দুই উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বানা জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু পণ্যের শুল্ক কমিয়ে আনা হয়েছে।

২০২৫ সালের পর সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্র বলেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সি জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তার কাঠামোর আওতায় আনতে গত বছরের ১৭ আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি পৃথক স্কিম চালু রয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। অনানুষ্ঠানিক খাত, অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিম নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য। অর্থমন্ত্রী বলেন, পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরইমধ্যে স্বায়ত্ত্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার তহবিল পরিচালনার ব্যয় সরকার বহন করায় এবং বিনিয়োগ মুনাফা জমাকারীদের মধ্যে বিভাজন হওয়ায় এটি হবে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পেনশন স্কিম।

নানা সংকটের মধ্যে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এই বাজেট মূল্যস্ফীতি কমানোর পদক্ষেপ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ যাতে না পড়ে সেজন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রেখেছি। সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করি, মূল্যস্ফীতি কমবে।

এ সময় সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে কি না? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া স্ট্যান্ডার্ড প্রসেসিং। ঘাটতি মেটাতে সবাই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি কমবে। সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যাতে করে প্রেসার না পড়ে সেজন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি এখনো ৯ শতাংশের ঘরে রয়েছে। চলতি বছরের শেষদিকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক কারণে মুদ্রার ওপর চাপ বাড়ায় টাকার মান কমেছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার জন্য এটা কারণ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার, নিয়েছি। আরও যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, আমরা নেব। আশা করি, মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নেমে আসবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বাজেটের আকার আমরা কমিয়ে রেখেছি। যাতে করে মূল্যস্ফীতির ওপর কোনও চাপ না পড়ে।

ব্যাংকে তারল্য সংকটের সময় বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এতে ব্যাংকে তারল্য সংকট হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া এটা সব বাজেটেই সব অর্থমন্ত্রীরা করে থাকেন। সব সরকার করে থাকেন। উন্নত দেশগুলো আরও অনেক বেশি নিয়ে থাকে, আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশের মধ্যে এটা ধরে রেখেছি। কাজেই এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। মূল্যস্ফীতির এসময়ে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা একই রেখেছেন- এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমি বাজেট বক্তব্যে বলেছি।

অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হয়। আমরা মনে করেছি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব সংগ্রহ করা সম্ভব না। এ কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ব্যাংক ঋণের সঙ্গে ব্যাংকের টাকা সংকটের কোনো সম্পর্ক নেই।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জনবল বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, জনবল নিয়োগের বিষয়ে এনবিআর থেকে চিঠি এসেছিল। আমরা জনবল বৃদ্ধি করেছি। আশা করছি সামনে আরও বৃদ্ধি করা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিষয়টি শুরু হয়েছে। অর্থবিভাগ থেকে আমরা জনবল নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন পেয়েছি।

সমুদ্র অর্থনীতি বিষয়ে বাজেটে কোনো উদ্যোগ আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সুনীল অর্থনীতির গবেষণায় ও অন্যান্য বিষয়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সূত্র: দৈনিক সংগ্রাম।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

মূল্যস্ফীতির চাপ কমাতে বাজেটের আকার ছোট ॥ ঘাটতি পূরণ ব্যাংক ঋণ থেকেই

প্রকাশের সময় : ০৫:৩৮:২৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

অর্থমন্ত্রী হিসাবে জাতীয় সংসদে নিজের প্রথম বাজেট উত্থাপনের পর দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখী হয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩টায় ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অর্থমন্ত্রীর এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য কয়েকটি দপ্তরের মন্ত্রী ও সচিবরাও তার সঙ্গে ছিলেন।

গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন তিনি। প্রস্তাবিত এই ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের (৭ লাখ ১৪ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা) চেয়ে ১১.৫৬ শতাংশ বেশি। টাকার ওই অংক বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৪.২৪ শতাংশের সমান। বিদায়ী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গত সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দেওয়া বাজেটের আকার ছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে সংশোধিত বাজেটের ১৫.৩৩ শতাংশ বেশি এবং জিডিপির ১৫.২১ শতাংশের সমান। প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে চেপে রেখে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করার পরিকল্পনার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য দেশীয় উৎস থেকে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব যোগান দেয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছেন মাহমুদ আলী। তাতে ঘাটতি থাকবে ২ লাখ ৫১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা ঘাটতি থেকে যাবে, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি বলেছে, আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা ও বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানোর যে লক্ষ্য নতুন অর্থবছরের বাজেটে নেওয়া হয়েছে, তা পূরণে বাস্তবসম্মত কোনো দিক নির্দেশনা অর্থমন্ত্রীর পরিকল্পনায় তারা দেখছে না।

রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদে বাজেট উপস্থাপনের পরদিন বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। প্রতিবারের ন্যায় এবারও অর্থমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রাণবন্ত ছিল সাংবাদিক সম্মেলন। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে অর্থমন্ত্রীর বিরক্তি প্রকাশ ও প্রশ্নের অবমূল্যায়ন করা বক্তব্যে একাধিকবার হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।

সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হয়ে অর্থমন্ত্রী বারবার প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও অন্যান্য মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দারস্থ হন। প্রথম থেকেই বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্ন শুনে বিরক্তবোধ করেছেন অর্থমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি বাজেটের নানা বিষয়ে করা সাংবাদিকদের প্রশ্নের মান এবং ম্যাচিউরিটি নিয়েও কথা বলেছেন। পুরো সংবাদ সম্মেলনজুড়েই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন মন্ত্রী।

অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটের বিষয়ে যে পর্যায়ের প্রশ্ন আশা করেছিলাম সেরকম হয়নি। তবে বেশ কয়েকজনের প্রশ্ন বেশ ভালো ছিল। একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাংবাদিকের করা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একেবারেই নন-সিরিয়াস প্রশ্ন। এ প্রশ্নের উত্তর দেয়ার যোগ্য না আমি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি একটু ম্যাচিউরড প্রশ্ন আশা করেছিলাম। আমি খুবই নিরাশ হয়েছি। আপনারা (সাংবাদিকরা) আরো একটু পড়ে আসবেন। এভাবে অতি সরলীকরণ করবেন না। একটু ম্যাচুউরিটি নিয়ে আসেন। যারা আর্থিক খাতের বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের জন্য আপনার কী বার্তা থাকবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা তো খোলাখুলি সব বলেছি। কোনো রাখঢাক করিনি। আপনি ঘুরেফিরে একই কথায় যাচ্ছেন কেন? এইটা তো বুঝতে পারলাম না। এটা কী ধরনের প্রশ্ন! কীভাবে প্রশ্ন করে এগুলো একটু শিখতে হবে তো। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে। এটা কোনো জার্নালিজম না। খালি এক কথাই ঘুরে ফিরে বলেন। এগুলো একটু দেখেন। দেখে একটু শেখেন। তাহলে আমাদেরও কাজ করতে সুবিধা হবে।

ক্ষুব্ধ হয়ে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনাদের প্রশ্ন হয় না। আপনারা পড়াশোনা করে এসে প্রশ্ন করেন। সাংবাদিকরা যেভাবে সরলীকরণ করে অর্থনীতির প্রশ্ন করে, অর্থনীতি এত সহজ না। বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বড় অংশ পেনশন ও ভর্তুকিতে যাবে কি না, এমন এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি এই প্রশ্নে উত্তর দেব না। এটা কোনো প্রশ্ন হয়নি। এটা আনসিরিয়াস প্রশ্ন।

বাজেটে কীভাবে মূল্যস্ফীতি সামাল দেয়া হবে এবং এক বছরে কীভাবে রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলার বাড়াবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনারা ভাবেন এভাবে প্রশ্ন করলে উত্তর দেব আমি। আমি উত্তর দেব না। আপনারা পড়াশোনা করে এসে প্রশ্ন করেন। ইকোনমিক জোন নিয়ে ব্যবসায়ীদের মনোভাব প্রসঙ্গ তুলে সাংবাদিকদের করা আরেক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা ডিসিসিআই-এফবিসিসিআইয়ের কথা শোনেন নাই। আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছেন। না জেনে প্রশ্ন করেন কেন।

প্রশ্নের পরিবর্তে সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক প্রশংসা করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনার কথা আমার ভালো লেগেছে। প্রশ্ন এমন হওয়া উচিত। আপনারা প্রশ্ন করা শিখবেন।

দুপুর ৩টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলন শুরু হয়। এটির আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। সঞ্চালনা করেছেন অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার। সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিকল্পনা মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালাম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুস শহীদ, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতেই অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সঙ্কোচনমূলক পদক্ষেপ আরও কিছুদিন চলবে। এর মাঝেও প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশে উন্নীত করার চেষ্টা করব, যেটা এখন চলতি অর্থবছরে ৫ দশমিক ৮২ শতাংশ হিসাবে প্রাক্কলন করা হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে ধরে রাখার চেষ্টা করব।

২০২৬ সালে ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানান মাহমুদ আলী। পাশাপাশি সুনীল অর্থনীতি ও জলবায়ু নিয়ে গবেষণায় বরাদ্দ রাখার কথা বলেন। ব্যক্তিখাতকেও এ দুই উদ্যোগে এগিয়ে আসার আহ্বানা জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী দিনে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছু পণ্যের শুল্ক কমিয়ে আনা হয়েছে।

২০২৫ সালের পর সরকারি চাকরিতে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের সর্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্র বলেন, ১৮ বছরের বেশি বয়সি জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তার কাঠামোর আওতায় আনতে গত বছরের ১৭ আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি পৃথক স্কিম চালু রয়েছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। অনানুষ্ঠানিক খাত, অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিম নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য। অর্থমন্ত্রী বলেন, পেনশন সুবিধা পান এমন সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে। এরইমধ্যে স্বায়ত্ত্বশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হয়েছে। অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের আগামী ২০২৫ সালের জুলাই থেকে এ ব্যবস্থার আওতাভুক্ত করা হবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার তহবিল পরিচালনার ব্যয় সরকার বহন করায় এবং বিনিয়োগ মুনাফা জমাকারীদের মধ্যে বিভাজন হওয়ায় এটি হবে বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় পেনশন স্কিম।

নানা সংকটের মধ্যে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়েছেন নতুন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এই বাজেট মূল্যস্ফীতি কমানোর পদক্ষেপ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ যাতে না পড়ে সেজন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রেখেছি। সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছি। আশা করি, মূল্যস্ফীতি কমবে।

এ সময় সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে কি না? জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া স্ট্যান্ডার্ড প্রসেসিং। ঘাটতি মেটাতে সবাই ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি কমবে। সেজন্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। যাতে করে প্রেসার না পড়ে সেজন্য বাজেটের আকার কমিয়ে রেখেছি। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি এখনো ৯ শতাংশের ঘরে রয়েছে। চলতি বছরের শেষদিকে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি আরও বলেন, বৈশ্বিক কারণে মুদ্রার ওপর চাপ বাড়ায় টাকার মান কমেছে। মূল্যস্ফীতি বাড়ার জন্য এটা কারণ। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে যে পদক্ষেপ নেয়া দরকার, নিয়েছি। আরও যেসব পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন, আমরা নেব। আশা করি, মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নেমে আসবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন বাজেটের আকার আমরা কমিয়ে রেখেছি। যাতে করে মূল্যস্ফীতির ওপর কোনও চাপ না পড়ে।

ব্যাংকে তারল্য সংকটের সময় বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, এতে ব্যাংকে তারল্য সংকট হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া এটা সব বাজেটেই সব অর্থমন্ত্রীরা করে থাকেন। সব সরকার করে থাকেন। উন্নত দেশগুলো আরও অনেক বেশি নিয়ে থাকে, আমরা তো মাত্র ৫ শতাংশের মধ্যে এটা ধরে রেখেছি। কাজেই এটা এত গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। এটা নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। মূল্যস্ফীতির এসময়ে বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা একই রেখেছেন- এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ে আমি বাজেট বক্তব্যে বলেছি।

অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হয়। আমরা মনে করেছি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে অতিরিক্ত রাজস্ব সংগ্রহ করা সম্ভব না। এ কারণে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই ব্যাংক ঋণের সঙ্গে ব্যাংকের টাকা সংকটের কোনো সম্পর্ক নেই।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) জনবল বৃদ্ধির কোনো উদ্যোগ নেয়া হবে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থসচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার বলেন, জনবল নিয়োগের বিষয়ে এনবিআর থেকে চিঠি এসেছিল। আমরা জনবল বৃদ্ধি করেছি। আশা করছি সামনে আরও বৃদ্ধি করা হবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অটোমেশনের বিষয়টি শুরু হয়েছে। অর্থবিভাগ থেকে আমরা জনবল নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন পেয়েছি।

সমুদ্র অর্থনীতি বিষয়ে বাজেটে কোনো উদ্যোগ আছে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থপ্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সুনীল অর্থনীতির গবেষণায় ও অন্যান্য বিষয়ের জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সূত্র: দৈনিক সংগ্রাম।