নিউইয়র্ক: আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব-এর কার্যকরী পরিষদের আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে ক্লাব সদস্যদের মধ্যকার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে পৌছেছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন সভাপতি, নির্বাচন কমিশন সহ কার্যকরী পরিষদের কতিপয় সদস্য। ক্লাব পরিস্থিতি নিয়ে ইতিপূর্বে ক্লাব সভাপতি নাজমুল আহসান প্রথম একটি বিবৃতি দেয়ার পর কার্যকরী পরিষদের কতিপয় সদস্য পাল্টা বিবৃতি দেন। নাজমুল আহসান তার বিবৃতিতে নির্বাচন কমিশনকে বাতিল ঘোষণা করেন এবং ইসি কমিটির সদস্যরা তাদের বিবৃতিতে সংগঠন বহির্র্ভূত কর্মকান্ড থেকে সভাপতিকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। এই পরিস্থিতিতে ক্লাব সভাপতি নাজমুল আহসান ক্লাবের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারী আবার বিবৃতি দিয়েছেন। তার বিবৃতি হুবহু নিম্নে তুলে ধরা হলো।
আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব-এর সভাপতি নামজুশ আহসান তার বিবৃতিতে বলেন- প্রায় প্রতিটি সংগঠন পরিচালিত হয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক। সংগঠনে সঙ্কট দেখা দিলে এই গঠনতন্ত্রের আশ্রয় নেওয়া আরো জরুরী হয়ে পড়ে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী’২০১৭ রাতে ‘ডিজাইন স্টুডিয়ো’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের ইমেইল ঠিকানা থেকে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব বিষয়ক একটি বার্তা বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। উক্ত বিবৃতিতে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজনের সাথে ১৬ ফেব্রুয়ারী দুপুরে আমার কথা হয় এবং উক্ত বিবৃতির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান।
‘ডিজাইন স্টুডিয়ো’ থেকে প্রেরিত উক্ত বিবৃতির সাথে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ এর সাংগঠনিক বাস্তবতার কোন মিল নেই। বর্তমানে ক্লাবের ৫৮ জন সদস্যের মধ্যে একটি গ্রুপ বিভিন্ন কৌশলে ‘ক্লাব দখলের’ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাদের সাথে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সমর্থন যোগাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কার্যকরী পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পক্ষপাতিত্ব, ‘ষড়যন্ত্র ও দুরভীসন্ধিমুলক’ আচরণে লিপ্ত হওয়ার কারণে যাদের গত ১২ ফেব্রুয়ারী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
আমি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন, ২ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। পরবর্তী সভাপতি পদের জন্য ‘ঘোষিত প্রতিদ্বন্দী’ ঠিকানা পত্রিকা’র লাবলু আনসার-এর নেতৃত্বাধীন একটি গ্রুপকে সমর্থন প্রদানে সম্মত না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ হয়ে কোন প্রকার সাংগঠনিক নীতি নিয়মকে তোয়াক্কা না করে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ‘দখলের’ জন্য একের পর এক কৌশল অবলম্বন করছে তারা।
প্রথম কৌশল ছিল ১৬ জানুয়ারী’২০১৭ অনুষ্ঠিত কার্যকরী কমিটির সভাশেষে একটি অনভিপ্রেত ঘটনাকে ব্যবহার করে কার্যকরী কমিটির সদস্য লাবলু আনসার সভাপতির কাছে ইমেইল পাঠান ‘২৪ ঘন্টার মধ্যে’ ক্লাবের সেক্রেটারীকে বহিস্কার করার দাবী জানিয়ে। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ধারা উল্লেখ করে আমি তাকে জানাই গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এটি সম্ভব নয়। তাছাড়া যেহেতু বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে সেহেতু আদালতে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ঘটনায় জড়িত দুই জনের কারো বিরুদ্ধেই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ সম্ভব নয়।
দ্বিতীয় কৌশল হিসেবে ব্যবহার করা হয় নির্বাচন কমিশনকে। নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য রাশেদ আহম্মদ যিনি মাত্র ৩ মাস আগে ক্লাবের সদস্যপদ পেয়েছেন, যদিও তাঁর সদস্যপদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তিনি এবং লাবলু আনসার খুবই ‘ঘনিষ্ঠ’ এবং একসাথে ১৫-২০ জনের সংগঠন ‘মুক্তিযোদ্ধা ফাউন্ডেশন’-এর হর্তাকর্তা। এমনকি ডিজাইন স্টুডিয়োর উপর তলায় বসে জানুয়ারীর প্রথম সপ্তাহে লাবলু আনসার যখন আরো কয়েকজনের সামনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করার ঘোষণা দেন, তখন সেখানে উপস্থিত থেকে নির্বাচন কমিশনের সদস্য হওয়া সত্ত্বেও এই রাশেদ আহম্মদই মুখ্যভুমিকা পালন করেছেন। এর দিন কয়েক আগে আমি তাকে অনুরোধ করেছিলাম নির্বাচন কমিশনার হিসেবে ‘নিরপেক্ষ’ থাকার জন্য। নিরপেক্ষ থাকার পরিবর্তে এই রাশেদ আহম্মদ এখন অবতীর্ণ হয়েছেন কার্যকরী কমিটির ১৯ মার্চ নির্বাচন অনুস্ঠানের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার মূল কারিগর হিসেবে।
নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা সংগঠনের গঠনতন্ত্র পড়েছেন এমন একটি ধারণাই আমার ছিল। বিশেষ করে কমিশনের প্রধান যখন একজন সাবেক সভাপতি কাজী শামসুল হক। যদিও সভাপতি পদে যিনি এখন প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন সেই লাবলু আনসার এই কাজী শামসুল হককে ‘যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তাঁর সাথে প্রেসক্লাব করবেন না বলে একাধিকবার ঘোষণা দিয়েছেন অতীতে। এমন কি ২০১২ সালে জ্যাকসন হাইটস এর পালকি সেন্টারে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের কেউ যাতে আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের নৌবিহারে না যান, সেজন্য লাবলু আনসারই কাজী শামসুল হককে ইঙ্গিত করে ‘আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীদের কেউ কি ‘যুদ্ধারাধীদের আয়োজনে কোন নৌবিহারে যাচ্ছেন কিনা প্রশ্ন করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান পরে আমার কাছে বিষয়টি জানতেও চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে বলেছিলাম, আমাদের কাছে এ বিষয়ে কোন তথ্য নেই। সেসময় কাজী শামসুল হক ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ড. সিদ্দিকুর রহমান সে নৌবিহারে যাননি। যতোদুর মনে পড়ে কাজী শামসুল হক সেসময় লাবলু আনসারকে একটি ‘শোকজ’ নোটিশও প্রদান করেছিলেন।
অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে অজ্ঞাত কারণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ‘সেই’ কাজী শামসুল হকের ভুমিকা এখন লাবলু আনসারকে যেকোন উপায়ে ক্লাবের সভাপতি করার জন্যই সর্বদা নিবেদিত। শুনেছি এখন কোন ‘বাস্তব মিডিয়ার’ সাথে সংশ্লিষ্ট না থাকলেও কাজী শামসুল হক আরেকবার প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট হতেও আগ্রহী।
প্রেসক্লাব দখলের কৌশল হিসেবে কার্যকরী কমিটির গত ১৬ জানুয়ারী’২০১৭ অনুষ্ঠিত সভায় কমিটির ৯ জন সদস্যের মধ্যে প্রথমে ৭ জন এবং পরবর্তীতে ৮ জন সদস্যের উপস্থিতিতে ১৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠানের গৃহীত সিদ্ধান্ত বাতিলের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন কার্যকরী কমিটির একজন সদস্য যিনি ১২ মার্চ দেশে যেতে চান বলে কার্যকরী কমিটিরই একজন সদস্য আমাকে জানিয়েছিলেন। ১৬ জানুয়ারী’২০১৭ অনুষ্ঠিত কার্যকরী কমিটির সভায় ১৯ মার্চ নির্বাচন এবং বিভিন্ন পদে মনোনয়ন ফি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত সমর্থন জানিয়ে ছিলেন সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক দর্পণ কবীর, কোষাধ্যক্ষ রিজু মোহাম্মদ (সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরপরই সে বাংলাদেশ সোসাইটির সভায় যোগদানের জন্য প্রেসক্লাবের সভা ছেড়ে চলে যায়) কার্যকরী কমিটির সদস্য সৈয়দ ওয়ালিউল আলম, লাবলু আনসার ও কানু দত্ত। সভাপতি হিসেবে কার্যকরী কমিটির সিদ্ধান্তে আমি অনুমোদন প্রদান করি। রিজু মোহাম্মদ চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর সভায় যোগ দেয় সহ-সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম এবং গৃহীত সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মৃদু আপত্তি জানায়। তাঁকে জানানো হয় যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত ইতোমধ্য গৃহীত হয়েছে সে বিষয়ে আর কোন বিতর্কের সুযোগ নেই।
১৬ জানুয়ারী কার্যকরী কমিটির সভা শেষে ঘটে যাওয়া অনভিপ্রেত ঘটনার কারণে বোধকরি বদলে যায় সকল কূটকৌশল। নির্বাচন কমিশনকে লেলিয়ে দেওয়া হয় কার্যকরী কমিটির সাথে ‘ইগো’র লড়াইয়ে লিপ্ত হতে।
১৯ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এই মর্মে ক্লাবের একটি প্রেস রিলিজ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ছাপা হলে একদিন সকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কল করে বলেন, কার্যকরী কমিটি যদি নির্বাচনের তারিখ, জায়গা ও মনোনয়ন ফি নির্ধারণ করে দেয় তাহলে শুধু মনোনয়নপত্র, ভোটগ্রহণ এবং ফলাফল ঘোষণার জন্যই কি নির্বাচন কমিশন? আমি তাঁকে বিনয়ের সাথে বলি সব সংগঠনের নির্বাচন কমিশনের কর্মপদ্ধতি এক নয়। আমেরিকার মূল নির্বাচনে তো নির্বাচন কমিশনারই থাকেনা: তাই বলে কি এখানে নির্বাচন হয়না। প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্রের ২.৫.৮ বিধি অনুযায়ী ‘গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকুক আর না থাকুক, সংগঠনের স্বার্থে যেকোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কার্যকরী কমিটির থাকবে’- এ ধারাকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন নির্বাচন কমিশন।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য কার্যকরী কমিটির কতিপয় সদস্যের ভরসায় এবং ক্লাব দখলে লিপ্ত একটি মহলের সমর্থনে কার্যকরী কমিটির বিরুদ্ধে অহেতুক সাংঘর্ষিক অবস্থান গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন। সভাপতি হিসেবে কার্যকরী কমিটির মর্যাদা রক্ষায় দায়িত্বের শেষ দিন পর্যন্ত আমি সচেষ্ট থাকবো।
ক্লাবের ভাবমুর্তি বিনষ্ট এবং ক্লাবের সদস্যদের মধ্যে বিভক্তি উসকিয়ে দিতে সর্বশেষ যে উদ্যোগটি অত্যন্ত অন্যায়ভাবে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলার প্রতি কোনপ্রকার তোয়াক্কা না করে গ্রহণ করে নির্বাচন কমিশন তা হলো, কার্যকরী কমিটির সাথে বৈঠকের চেষ্টা না করে এ পর্যন্ত শুধু মাত্র একটি ঘোষিত লাবলু আনসার-শহীদুল ইসলাম প্যানেলের সমর্থকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে ১১ মার্চ শনিবার জ্যাকসন হাইটসে একটি তথাকথিত মত বিনিময় সভার আয়োজন। নির্বাচন কমিশন ক্লাবের প্রেসিডেন্টকে তাদের সভায় কোন প্রকার আমন্ত্রণ জানানোর প্রয়োজন পর্যন্ত অনুভব করেননি। শুধু তাই নয়, কাজী শামসুল হকের মতো একজন বয়োজেষ্ঠ ব্যক্তি, যাকে আমিই প্রস্তাব করে ক্লাব গঠনের শুরুতে ‘আহবায়ক’-এর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য ফোন করে ডেকে এনেছিলাম, পরে সভাপতি পদের জন্যও প্রস্তাব করে নির্বাচিত করেছিলাম, তিনি আজ ক্লাবের বর্তমান সভাপতিকে ‘নির্বাচনী মত বিনিময় সভায়’ দাওয়াত দেওয়ার সৌজন্যটুক দেখাতে পারেন না। সেখানেই শেষ নয়। এই দাওয়াত নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে মিথ্যাচার করে ধরাও পড়েছেন। ভিডিওতে দেখা গেছে ১১ মার্চ ১৮/১৯ জনের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় একাধিক ব্যক্তি- এটিএন বাংলার কানু দত্ত, জেমিনি ম্যাগাজিনের বেলাল আহমেদ সভায় সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছ কিনা জানতে চাইলে মঞ্চে বসা এই কাজী শামসুল হক বলেছেন- হ্যাঁ সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছে। পরদিন রোববার ১২ মার্চ রাত ৮টার দিকে জ্যাকসন হাইটসে খাবার বাড়ী রেস্টুরেন্টে উপস্থিত কানু দত্ত, সাংবাদিক সনজীবন কুমারসহ আরো কয়েকজনের সামনে কাজী শামসুল হকের সাথে আমার দেখা হয়ে গেলে সকলের সামনে আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করে জানতে চাই ক্লাবের প্রেসিডেন্টকেই দাওয়াত দিলেন না, কি সভা করলেন? তিনি কাচুমাচু করে বললেন সময় পাইনি, ব্যস্ত ছিলাম, ভুল হয়ে গেছে। অথচ ১১ মার্চ সভার দিনও সকালে তিনি একাধিক ব্যক্তিকে দাওয়াত দিয়ে অনুনয় বিনয় করে বলেছেন মত বিনিময় সভায় যোগ দেওয়ার জন্য।
১০ মার্চ শুক্রবার দুপুরে অপর একজন নির্বাচন কমিশনার আকবর হায়দার কিরণ এর কাছ থেকে টেক্সট ম্যাসেজে দাওয়াত পান ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দর্পণ কবীর। তিনি আমাকে বিষয়টি জানালে আমি তাঁকে কাজী শামসুল হকের সাথে যোগাযোগের জন্য বলি। দর্পণ কবীর কাজী শামসুল হকের সাথে যোগাযোগ করে তাকে এভাবে সভা আয়োজেনের যৌক্তিকতা বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী শামসুল হক নাকি জানিয়েছেন সবাইকে সভায় আসতে হবে কেন? বিষয়টা এমন যেন ‘লাবলু আনসার-শহীদুল ইসলাম প্যানেলের সমর্থকরা আসলেই চলবে। বাস্তবেও তাই হয়েছে। এখন পর্যন্ত লাবলু-শহীদুল প্যানেল’ই দুটি নির্বাচনী বৈঠক করেছেন টক অফ দ্যা টাউন রেষ্টুরেন্টে। উক্ত দুটি বৈঠকের উপস্থিতি আর ১১ মার্চ নির্বাচন কমিশনের তথাকথিত মত বিনিময় সভার বৈঠকের উপস্থিতি প্রায় একই। আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সাথে না হলেও ‘লাবলু-শহীদুল প্যানেল’-এর সাথে নির্বাচন কমিশনের যোগাযোগ ও সমন্বয় যে কতো গভীর তার প্রমান পাওয়া যায় ৮ ফেব্রুয়ারী সাপ্তাহিক ঠিকানায় পত্রিকায় প্রকাশিত ‘লাবলু-শহীদুল প্যানেল’-এর নির্বাচনী সভার খবরে। ৪ মার্চ শনিবার টক অফ দ্যা টাউন-এর বেসমেন্টে ঠিকানারই সম্পাদক লাবলু আনসারের সভাপতিত্বে/সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত সবাইকে ১১ মার্চ নির্বাচন কমিশন আহুত মত বিনিময় সভায় যোগদানের আহবান জানানো হয়। ক্লাবের বেশিরভাগ সদস্যই জানেনা অথচ ‘লাবলু-শহীদুল প্যানেল’-এর সমর্থকরা জানেন ১১ মার্চ নির্বাচন কমিশনের মত বিনিময় সভা। তাহলে এখন তো পরিষ্কার হয়ে গেছে লাবলু-শহীদুল প্যানেল আর নির্বাচন কমিশন ‘কাধে কাঁধ মিলিয়ে’ আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ‘দখলের’ খেলায় মত্ত। একটি গ্রুপের প্রতি সীমাহীন পক্ষপাতিত্ব, ক্লাবে বিভক্তি উসকিয়ে দেওয়া এবং কার্যকরী কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শুধু এক-দুইজন সদস্যের ‘দেশে যাওয়ার খায়েশ’ পুরণে নির্বাচনের পাল্টা তারিখের ঘোষণা দিয়ে সাংঘর্ষিক অবস্থানের সৃষ্টি করার কারণে কাজী শামসুল হক, রাশেদ আহম্মদ ও আকবর হায়দার কিরণের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পক্ষে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।
শুধু তাই নয় ১১ মার্চ তথাকথিত মত বিনিময় সভার প্রেস রিলিজেও মিথ্যাচার করা হয়েছে। বলা হয়েছে প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির ৫ জন উপস্থিত ছিল। প্রকৃতপক্ষে ছিল ৪ জন। একজন ওয়াশিংটন ডিসিতে ছিল ভয়েস অফ আমেরিকায় চাকুরীর কারণে। বলা হয়েছে ৫৮ জন সাধারণ সদস্যের মধ্যে ‘অধিকাংশ’ উপস্থিত ছিল। ১৯/২০ জন কি ৫৮ জনের অর্ধেক? জানামতে দুই-একজন গিয়েছিল টিভি চ্যানেলের জন্য খবর সংগ্রহে।
সকলের অবগতির জন্য জানাতে চাই ১৯ মার্চ’২০১৭ আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা ও নির্বাচন যথারীতি সাংগঠনিক নিয়মে অনুষ্ঠিত হবে। গত মাসে কয়েকটি পত্রিকায় আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পুর্ণ সদস্যদের তালিকা প্রকাশিত হবার পর কম্যুনিটির বেশ কয়েকজন সচেতন মানুষ ক্লাবের সভাপতি হিসেবে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন যারা এখন আর ফুলটাইম সাংবাদিকতা পেশার সাথে জড়িত নেই তারা প্রেসক্লাবের পুর্ণ সদস্যপদ পায় কিভাবে? বিষয়টি বেশ ভাববার। তারা অব্যাহতি প্রাপ্ত নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন কিনা জানিনা। সাংবাদিকদের ক্লাবের নিয়ন্ত্রণ অন্য পেশার, অপেশাদার-মৌসুমী সাংবাদিকদের দখলে যেতে দেওয়া ঠিক নয়।
পরিশেষে স্পষ্টভাবেই জানাতে চাই, প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে ক্লাবের স্বার্থ ও মর্যাদা রক্ষায় গঠনতন্ত্রের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে অবহেলার কোন সুযোগ নেই।
নাজমুল আহসান
সভাপতি
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭