নিউইয়র্ক: জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) হিসেবে নুর-ই এলাহি মিনা’র যোগদান উপলক্ষ্যে নিউইয়র্কের সম্পাদক-সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। নতুন পদে যোগদানের আগে মিনা প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে গত ৪ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় আয়োজিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে নতুন প্রেস সেক্রেটারি নুর-ই এলাহি মিনাকে নিউইয়র্কে কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেন স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। এসময় নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশের কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান উপস্থিত ছিলেন। এসময় নতুন প্রেস সেক্রেটারিকে স্বাগত জানান নিউইয়র্কের গণমাধ্যম কর্মীরা। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের বিভিন্ন মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিকদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রবীণ সাংবাদিক ও এখন সময় সম্পাদক কাজী শামসুল হক, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভির সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র সম্পাদক লাবলু আনসার, সাপ্তাহিক বর্ণমালা’র প্রধান সম্পাদক মাহফুজুর রহমান, সময় টিভি ইউএসএ বুরো প্রধান শিহাব উদ্দিন কিসলু, কবি-সাংবাদিক সালেম সুলেরী, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও এটিএন বাংলা ইউএসএ’র প্রধান দর্পণ কবীর, ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সেলিম, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরণ, সাপ্তাহিক বাংলা টাইমস সম্পাদক সনজীবন কুমার সরকার, সাপ্তাহিক বিজয়-এর সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি ডা. মাসুদুল হাসান, মাসিক নারী ম্যাগাজিন-এর সম্পাদক পপি চৌধুরী প্রমুখ।
সব শেষে রাষ্ট্রদুত মোমেনের অনুরোধে অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র সফররত এটিএন বাংলা টিভি’র প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ. ই. মামুন শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কের উল্লেখযোগ্য সাংবাদিকদের মধ্যে ওয়েবপোর্টল হককথা ও বার্তা সংস্থা ইউএনএ’র সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, সাপ্তাহিক ঠিকানা’র বার্তা সম্পাদক মিজানুর রহমান, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব ও টাইম টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি শিবলী চৌধুরী কায়েস, ফটো সাংবাদিক নিহার সিদ্দিকী, দৈনিক ইত্তেফাক ও সাপ্তাহিক বাঙালী এবং এসএ টিভি’র বিশেষ প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, টাইম টিভি’র সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, শাহাদৎ হোসেন সবুজ, সাপ্তাহিক আজকাল-এর নির্বাহী সম্পাদক শওকত ওসমান রচি, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র আলমগীর হোসেন, সাপ্তাহিক জন্মভূমি’র প্রধান প্রতিবেদক তপন চৌধুরী, চ্যানেল আই-এর রাশেদ রহমান, এটিএন বাংলা ইউএসএ’র কানু দত্ত, বাংলা ভিশন-এর অভি আজিম, সাপ্তাহিক বর্তমান বাংলা’র সম্পাদক বেলাল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কভার করতে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী ঢাকার সাংবাদিকদের মধ্যে আর টিভি’র সিনিয়র রিপোর্টর রাজিব খান, বাংলা ভিশণের সিনিয়র রিপোর্টার জিয়াউল হক সবুজ, দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্ট-এর বিশেষ প্রতিনিধি মোস্তফিজুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে বাংলাদেশের উন্নয়নে স্থায়ী মিশন জাতিসংঘে যেসব কাজ করছে তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিনের আন্তর্জাতিক সিভিল সার্ভিস কমিশন (আইএসসিএস)-এর সদস্য নির্বাচিত হওয়াসহ জাতিসংঘে আরো আটটি গুরুত্বপূর্ণপদে বাংলাদেশ নির্বাচিত হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, মিডিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাংলাদেশের উন্নয়নে স্থায়ী মিশন কাজ করে চলেছে। বাংলাদেশ সহ জাতিসংঘের নানামুখী কর্মকান্ড সম্পর্কে রিপোর্টের ব্যাপারে মিশনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে বলেন, এব্যাপারে প্রেস সেক্রেটারি নুর-ই এলাহি মিনা সংশ্লিস্ট সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা দেবেন। তাছাড়া দ্যা নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াল্ড ষ্ট্রিট জার্ণাল, ডেইলি নিউইয়র্ক পোষ্ট সহ মূলধারার মিডিয় বাংলাদেশকে তুলে ধরার বিষয়টিও দেখভালো করবেন নূর-ই এলাহি।
মাসিক গ্লোবাল টাইম সম্পাদক রিমন ইসলামের এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রদূত মোমেন বলেন, মিডিয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশ মিশনের চেয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের দায়িত্ব বেশী থাকলেও যেহেতু কনস্যুলেটে কোন প্রেস মিনিস্টার নেই, সেইহেতু বাংলাদেশ মিশনের প্রেস মিনিস্টার সহযোগি হিসেবে সেই দায়িত্ব পারন করছেন। তারা জাতিসংঘের মিডিয়া উইং-এও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
কসনাল জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান প্রবাসী সাংবাদিকদের আন্তরিক সহায়তার প্রশংসা করেন এবং বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে আরো বেশী করে তুলে ধরার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান।
নুর-ই এলাহি মিনা তার বক্তব্যে বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে তার হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, বর্তমান সরকার দেশ ও জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জাতিসংঘেও বাংলাদেশ দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখছে। তাই জাতিসংঘে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে ভাবা হয়। তিনি বলেন, উন্নয়ন-অগ্রগতিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বর্তমান সরকার মিডিয়া বান্ধব সরকার। তিনি তার নতুন দায়িত্ব পালনে নিউইয়র্কের সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি সরকারের দেয়া গুরু দায়িত্ব পালনে সবসময় সচেষ্ট থাকার অঙ্গীকার করেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) বিজন লাল দেব গত সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে অবসরকালীন ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যান। এরপর নুর-ই এলাহি মিনাকে এই শূণ্যপদে নিযুক্ত করা হয়।